বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
অধ্যায়-১১
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ের অধ্যায়-১০ থেকে কিছু প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।
প্রশ্ন: নারী শিক্ষায় বেগম রোকেয়ার অবদান অল্প কথায় লেখো।
উত্তর: বাংলাদেশের নারী জাগরণের অগ্রদূত, মহীয়সী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন সমাজে মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রেখেছিলেন। ১৮৮০ সালে রংপুর জেলায় পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। নারী শিক্ষায় তাঁর অবদান নিচে দেওয়া হলো।
১. বেগম রোকেয়া বহু প্রবন্ধ ও পুস্তক রচনা করে নারী-পুরুষ সমতা ও নারী শিক্ষার বিষয়ে সমাজকে সচেতন করতে অসামান্য অবদান রাখেন।
২. ১৯০৫ সালে বেগম রোকেয়া ভাগলপুরে ‘সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গালর্স স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তী সময়ে ১৯১১ সালে এ স্কুলটি কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন তার ছাত্রীসংখ্যা ছিল মাত্র আট জন।
৩. তিনি বাড়ি বাড়ি ঘুরে বাবা-মায়ের কাছে আবেদন ও অনুরোধ করতেন পুত্রসন্তানের মতো কন্যাসন্তানকেও যেন তারা বিদ্যালয়ে পাঠায়।
তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই মেয়েরা ধীরে ধীরে শিক্ষার আলো পেতে থাকে। তিনি মনে করতেন, পুরুষ ও নারীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি নয়, বরং নারী-পুরুষের সহযোগিতা ও সহানুভূতির ভিত্তিতেই সমাজ ও দেশের সার্বিক উন্নতি সম্ভব। ১৯৩২ সালে এই মহীয়সী নারী মৃত্যুবরণ করেন।
প্রশ্ন: আমাদের সমাজে ছেলেশিশু ও মেয়েশিশুর প্রতি কী ধরনের আচরণ করা হয়?
উত্তর: আমাদের সমাজে নানাভাবে মেয়েশিশু ও নারীরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। শিশু বয়স থেকে পরিবারের ছেলে ও মেয়েশিশুর প্রতি প্রায়ই ভিন্ন আচরণ করা হয়। যেমন-বাড়ির কাজগুলো যেমন ঘর গোছানো, ছোট ভাইবোনদের দেখাশোনা করা, রান্নায় মাকে সাহায্য করা এগুলো মেয়েদের দিয়ে করানো হয়। সাধারণত ছেলেদের এসব কাজ করতে দেওয়া হয় না।
আবার খেলা বা উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রেও ছেলে বা মেয়েদের সমান দৃষ্টিতে দেখা হয় না। যেমন মেয়েদের দেওয়া হয় পুতুল আর ছেলেদের দেওয়া হয় বল।
এভাবে শৈশব থেকেই ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখার কারণে ছেলে ও মেয়েরাও নিজেদের মানুষ হিসেবে ভিন্ন ভাবতে শুরু করে। বিভিন্ন কারণে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ না করে পড়াশোনা বন্ধ করে দেয় বা ঝরে পড়ে।
রাবেয়া সুলতানা, শিক্ষক
বিয়াম ল্যবরেটরি স্কুল, ঢাকা
# পরবর্তী অংশ ছাপা হবে আগামীকাল