প্রা থ মি ক বি জ্ঞা ন

অধ্যায়-৩ 
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যায়-৩ থেকে প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।

# রচনামূলক প্রশ্নোত্তর:
প্রশ্ন: বায়ুতে সব সময় কিছু জলীয় বাষ্প থাকে, তা কীভাবে প্রমাণ করবে?
উত্তর: একটি কাচের গ্লাসে এক টুকরা বরফ নিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলে দেখা যাবে যে গ্লাসের বাইরে বিন্দু বিন্দু পানি জমেছে। হাত দিয়ে গ্লাসটি ধরে নিশ্চিত হই। এ পানি গ্লাসের ভেতরের বরফ থেকে আসেনি। কারণ, গ্লাসের ভেতর থেকে কাচ ভেদ করে পানি বাইরে আসতে পারে না। বরফের ঠাণ্ডায় গ্লাসটি ঠাণ্ডা হয়েছে, আর সে ঠাণ্ডার পরশে বায়ুর জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে গ্লাসের গায়ে জমেছে।
এভাবেই বায়ুতে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি প্রমাণ করা যায়।

প্রশ্ন: পানি দূষণের প্রধান কারণগুলো লেখো।
উত্তর: পানি দূষণের প্রধান কারণগুলো নিচে দেওয়া হলো—
১। পুকুর বা নদীর পানিতে বাসন-কোসন মাজা, গোসল করা, ময়লা কাপড় কাচা, গরু-মহিষ গোসল করানো, পাট পচানো, পায়খানা-প্রস্রাব করা, প্রাণীর মৃতদেহ ফেলা।
২। রোগীর মলমূত্র, বিছানাপত্র ও জামাকাপড় পুকুর, খাল, বিলে ধোয়া।
৩। কৃষিকাজে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করলে তা বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে খাল, বিল, নদীর পানি দূষিত করে।
৪। কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ পানিতে ফেলা।
৫। বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের সময় গ্রাম ও শহর অঞ্চল পানিতে ডুবে যায়। এতে মানুষ ও গৃহপালিত পশু-পাখির মলমূত্র পানিতে মিশে পানি দূষিত করে।
এ ছাড়া প্রাকৃতিক কারণে পানিদূষণ হয়ে থাকে।
প্রশ্ন: পানি দূষণ কীভাবে রোধ করা যায়?
উত্তর: যেসব কারণে পানি দূষিত হয়, সেসব কারণ সম্পর্কে সচেতন থাকলে পানিদূষণ রোধ করা অনেকটা সহজ হয়।
১। পুকুরপাড়ে বা খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ বন্ধ করতে হবে।
২। ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র না ফেলে গর্ত করে মাটিচাপা দিতে হবে।
৩। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
৪। যেকোনো রোগীর ব্যবহূত কাপড়চোপড় পুকুরের পানিতে না ধোয়া।
৫। পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা উন্নত করতে হবে।
৬। কলকারখানার বর্জ্য পরিকল্পিত উপায়ে পরিশোধিত করতে হবে।

প্রশ্ন: পুকুরের পানিকে জীবাণুমুক্ত করতে হলে কীভাবে শোধন করতে হবে?
উত্তর: পুকুরের পানি শোধনের উপায়গুলো হলো—
১। ছাঁকন: পুকুরের পানিতে মিশে থাকা কাদা ও ময়লা পাতলা কাপড় বা ছাঁকনি দ্বারা ছেঁকে পরিষ্কার করা যায়।
২। থিতানো: পুকুরের পানি কলস বা অন্য কোনো পাত্রে বেশ কিছুক্ষণ রেখে দিলে পাত্রের তলায় তলানি জমে। অতঃপর পাত্রটিকে কাত করে উপর থেকে পরিষ্কার পানি সংগ্রহ করা যায়।
৩। ফুটানো: পুকুরের পানি ফুটিয়ে শোধন করা যায়। অন্তত ২০ মিনিট ফুটালে জীবাণু থাকলে মারা যায়।
৪। রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে বিশুদ্ধকরণ: পুকুরের পানিতে ফিটকিরি, ব্লিচিং পাউডার, হ্যালোজেন ট্যাবলেট ইত্যাদি পরিমাণমতো মিশিয়ে পানি জীবাণু মুক্ত করা যায়।

 প্রধান শিক্ষক, ফকিরেরপুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢাকা