
অধ্যায়-৪
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যায়-৪ থেকে প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।
# রচনামূলক প্রশ্নোত্তর:
প্রশ্ন: ইটের ভাটার দূষণের প্রভাব কীভাবে কমানো যায়?
উত্তর: ইটের ভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রভৃতি ক্ষতিকর গ্যাসীয় পদার্থ বিদ্যমান থাকে, যেগুলো বায়ুদূষণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তাই ইটের ভাটার দূষণের প্রভাব কমানোর জন্য নিচের ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করতে হবে।
১. ইটের ভাটা লোকালয় থেকে দূরে স্থাপন করা
২. ইটের ভাটার চিমনি থেকে বায়ুমণ্ডলে কালো ধোঁয়া বের হওয়ার আগে তা পরিশোধনের ব্যবস্থা করা।
৩. প্রয়োজন ছাড়া কয়লা, কাঠ পোড়ানো থেকে বিরত থাকা।
৪. কম জ্বালানি ব্যবহার করে কাজ সম্পাদন করা যায়, এমন উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা।
প্রশ্ন: বায়ু কীভাবে দূষিত হয়, তা আলোচনা করো।
উত্তর: বায়ু প্রধানত দূষিত হয় মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজে ব্যবহূত কলকারখানা, ইটের ভাটা, বাস, রেল, গাড়ি, টেম্পো, বেবিটেক্সি, লঞ্চ, ইত্যাদি থেকে কালো ধোঁয়া বাতাসে মেশে। এ রকম ধোঁয়ায় কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন-কণা, কার্বন ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি থাকে যেগুলো বায়ু দূষিত করে। আবার ধুলাবালু, কালির ঝুল, জীবাণু, পাটের আঁশ এবং অন্যান্য জৈব ও অজৈব পদার্থ বায়ুতে মিশে বায়ু দূষিত করে। আবর্জনা, খোলা নর্দমা, হাজামজা পুকুর, পচা জলাশয়, খোলা পায়খানা এবং জীবজন্তুর গলিত মৃতদেহ থেকে নির্গত গ্যাস বায়ুকে দূষিত করে। সিগারেটের ধোঁয়া, চামড়ার কারখানা ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন গ্যাস বায়ুকে দূষিত করে। তা ছাড়া বায়ুবাহিত রোগ যেমন বসন্ত, যক্ষ্মা ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি, কফ, থুতুর সঙ্গে নানা রোগজীবাণু বায়ুতে মিশেও বায়ুকে দূষিত করে।
প্রশ্ন: বায়ুর উপাদানগুলো আমাদের বেঁচে থাকতে কীভাবে সাহায্য করে, ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: বায়ুতে প্রধানত নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড ও জলীয়বাষ্প থাকে। এসব উপাদান আমাদের বেঁচে থাকতে বিভিন্নভাবে সাহায্য করে। আমরা শ্বাসকার্যে প্রতি মূহূর্তে বায়ু থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করছি। যে বাতাস আমরা গ্রহণ করি, তাতে অক্সিজেন অধিক পরিমাণে থাকে। অক্সিজেন আমাদের গ্রহণ করা খাদ্য ভেঙে শক্তি উৎপাদন করে। এই শক্তি আমাদের শরীরকে গরম রাখে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় গ্রহণ করা অক্সিজেন রক্তের সাথে ফুসফুসে চলে যায় এবং দূষিত রক্তকে বিশুদ্ধ করে। ফলে শরীরে শক্তি ও তাপ উৎপন্ন হয় এবং এই তাপই আমাদের শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখে।
প্রশ্ন: বায়ুদূষণ রোধের উপায়গুলো লেখো।
উত্তর: বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাবের হাত থেকে বাঁচার জন্য বায়ুদূষণ রোধ করা দরকার। বায়ুদূষণ কীভাবে হয়, তা মনে রাখলে বায়ুদূষণ প্রতিরোধ করা যায়। নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণের মাধ্যমে বায়ুদূষণ রোধ করা যেতে পারে।
১. কালো ধোঁয়া উৎপাদন করে, এমন যানবাহন ব্যবহার বন্ধ করা।
২. ইটের ভাটা লোকালয় থেকে দূরে স্থাপন করা।
৩. কম জ্বালানি ব্যবহার হয়, এমন উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা।
৪. ধূমপান না করা, বিশেষ করে অন্য মানুষের কাছে বা বদ্ধ স্থানে ধূমপান না করা।
৫. রান্নাঘরে বায়ু চলাচলের ভালো ব্যবস্থা তৈরি করা।
৬. উন্নত চুলা ব্যবহার করা।
৭. বনভূমি সংরক্ষণ করা।
৮. গাছ লাগিয়ে নতুন বনভূমি সৃষ্টি করা।
প্রশ্ন: ধূমপান ক্ষতিকর কেন?
উত্তর: ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ধূমপানের কারণে মানুষ নানা রকম রোগে আক্রান্ত হয়। সিগারেট, বিড়ি ইত্যাদির তামাকে থাকে নিকোটিন নামের বিষ, যা মানুষের ফুসফুসের ক্ষতিসাধন করে। ধূমপানের ফলে মানুষের ফুসফুসের ক্যানসারের প্রবণতা স্বাভাবিকের চেয়ে তিন গুণ বেড়ে যায়। এ ছাড়া ধূমপানের ফলে যক্ষ্মা, ব্রঙ্কাইটিস, ক্ষুধামন্দা, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, হূদেরাগ প্রভৃতি মারাত্মক রোগ হয়ে থাকে। তাই ধূমপান মানুষের জন্য ক্ষতিকর।
ফকিরেরপুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢাকা