মূলভাব অংশ-১
প্রিয় ২০১৩ সালের প্রাথমিক শিক্ষাসমাপনী শিক্ষার্থীরা শুভেচ্ছা রইল। আজ বাংলা বিষয়ের ৭নং প্রশ্ন অনুচ্ছেদ বা কবিতাংশটুকুর মূলভাব লেখো প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো। প্রশ্নের নম্বর থাকবে ৫।
১. কবিতাংশ:
বাংলা আমার মায়ের ভাষা
শহীদ ছেলের দান
আমার ভাইয়ের রক্তে লেখা
ফেব্রুয়ারির গান।
মূলভাব: ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির জীবনে একটি স্মরণীয় দিন। মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ছাত্রসমাজ এই দিনে আন্দোলন শুরু করে। ছাত্রদের মিছিলে পাকিস্তানি সরকার গুলি চালায়। সালাম, বরকত, শফিক, জব্বারসহ আরও অনেক ছাত্র (যাঁদের নাম জানা যায়নি) শহীদ হন। বাংলা ভাষার প্রতি মমতা আর এই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছে এই কবিতায়।
২. কবিতাংশ:
থাকব নাক বদ্ধ ঘরে
দেখব এবার জগৎটাকে
কেমন করে ঘুরছে মানুষ
যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে।
মূলভাব: অসীম বিশ্বকে জানার এক অদম্য কৌতূহল মানুষের। কিশোরেরও তা-ই। সে জানতে চায় বিশ্বের সবকিছুকে, আবিষ্কার করতে চায় অসীম আকাশের সব অজানা রহস্যকে। সে বুঝতে চায়, কেন মানুষ ছুটছে অসীমে, অতলে, অন্তরিক্ষে; বীর কেন জীবনকে অনায়াসে বিপন্ন করে, কেন বরণ করে মৃত্যুকে। সে জানতে চায়, ডুবুরি কেন ডুবছে, দুঃসাহসী কেন উড়ছে। তাই কিশোর মনে মনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে—সে বদ্ধ ঘরে বসে থাকবে না। পৃথিবীটাকে সে-ও ঘুরে ঘুরে দেখবে।
৩. কবিতাংশ:
বইয়ের পাতায় প্রদীপ জ্বলে
বইয়ের পাতা স্বপ্ন বলে।
যে-বই জুড়ে সূর্য ওঠে
পাতায় পাতায় গোলাপ ফোটে
সে-বই তুমি পড়বে।
মূলভাব: কোনো কোনো বই আছে, যেগুলো সুন্দর ও শুভ চিন্তাভাবনার কথা বলে। আমাদের মনকে সুন্দর স্বপ্নে ভরিয়ে তোলে। আমাদের মনে জ্বালিয়ে দেয় শুভ-ভাবনার প্রদীপ। আমাদের মনের ভেতরের স্বার্থপরতা ও মন্দ চিন্তাকে দূর করতে সাহায্য করে। আমাদের ভালো মানুষ হয়ে ওঠার পথ দেখায়। আবার এমন কিছু বইও আছে পৃথিবীতে, যেগুলো মনের ক্ষুদ্রতা দূর তো করেই না, বরং মনকে আরও স্বার্থপর করে তোলে। মনকে করে তোলে ঈর্ষা ও হিংসায় জর্জরিত। সেসব বই পড়লে মন আলোকিত হয় না, সুন্দর মানুষ হয়ে ওঠার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। মানবিক গুণসম্পন্ন মানুষ হয়ে ওঠার জন্য আমরা তাই সুন্দর ভাবনাচিন্তায় ভরা বইগুলো পড়ব। তবেই আমরা আলোকিত মানুষ হয়ে গড়ে উঠব।
শিক্ষক, আইডিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢাকা
পরবর্তী অংশ ছাপা হবে আগামীকাল