ব্যাকরণ
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলা ২য় পত্রের ব্যকরণ নিয়ে আলোচনা করা হলো।
ধাতু
ক্রিয়ার মূল অংশকে ধাতু বলে।
ক্রিয়া পদকে বিশ্লেষণ করলে দুটো অংশ পাওয়া যায়:
১. ধাতু বা ক্রিয়ামূল: কর্, যা, খা, পা, দেখ্, দে ইত্যাদি।
২. ক্রিয়া বিভক্তি: আ, ই, ছি, ছে, বে, তে, লে, লাম ইত্যাদি।
ধাতু তিন প্রকার। যথা:
১. মৌলিক ধাতু
২. সাধিত ধাতু
৩. যৌগিক বা সংযোগমূলক ধাতু।
১. মৌলিক ধাতু: যেসব ধাতু বিশ্লেষণ করা যায় না, তাকে মৌলিক ধাতু বলে। যেমন: কর্, চল্,পড়্, পা, যা, দে, খা, হ্ ইত্যাদি।
২. সাধিত ধাতু: মৌলিক ধাতু বা নাম—শব্দের পরে আ-প্রত্যয়যোগে যে ধাতু গঠিত হয়, তাকে সাধিত ধাতু বলে। যেমন: কর্+আ = করা দেখ্+আ = দেখা
৩. যৌগিক ধাতু: বিশেষ্য, বিশেষণ বা ধনাত্মক অব্যয়ের সঙ্গে কর্, দে, হ, পা, খা ইত্যাদি মৌলিক ধাতু মিলিত হয়ে যে নতুন ধাতু গঠিত হয়, তাকে যৌগিক বা সংযোগমূলক ধাতু। যেমন: ভয় কর্, ভালো হ্, উত্তর দে, মার খা, দুঃখ পা ইত্যাদি।
মৌলিক ও সাধিত ধাতু
মৌলিক ধাতু: মৌলিক ধাতুকে ভাঙা বা বিশ্লেষণ করা যায় না। এগুলোকে সিদ্ধ বা স্বয়ংসিদ্ধ ধাতুও বলা হয়ে থাকে।
বাংলা ভাষায় মৌলিক ধাতু তিন প্রকার। যথা:
১. সংস্কৃত ধাতু
২. বাংলা ধাতু
৩. বিদেশাগত ধাতু
১. সংস্কৃত ধাতু: তৎসম ক্রিয়া পদের ধাতুকে সংস্কৃত ধাতু বলে। যেমন:
আঙ্ক+অন অঙ্কন: ছোটদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিথু প্রথম হয়েছে।
কৃ+তব্য = কর্তব্য: ছাত্রদের কর্তব্য লেখাপড়া করা।
২. বাংলা ধাতু: যেসব ধাতু সংস্কৃত থেকে প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে বাংলায় ব্যবহূত হয়, তাকে বাংলা ধাতু বা খাঁটি বাংলা ধাতু বলে। যেমন:
আঁক্ + আ = আঁঁকা— কীসব আঁঁকাআঁকি করছ?
দেখ্ + আ = দেখা— জাদুঘর আমার কয়েকবার দেখা।
৩. বিদেশাগত ধাতু: বিদেশি ভাষা থেকে আগত যেসব ধাতু বাংলা ভাষায় ব্যবহূত হয়, তাকে বিদেশাগত ধাতু বা বিদেশি ধাতু বলে। যেমন: খাট্ + বে = খাটবে: যত বেশি খাটবে ততই সুফল পাবে।
জম্ + আট = জমাট: অন্ধকার বেশ জমাট বেঁধেছে।
সাধিত ধাতু: মৌলিক ধাতু বা নাম শব্দের পরে আ—প্রত্যয়যোগে সাধিত ধাতু গঠিত হয়ে থাকে। সাধিত ধাতু তিন প্রকার। যথা :
১. প্রযোজক ধাতু
২. নাম ধাতু
৩. কর্মবাচ্যের ধাতু
১. প্রযোজক ধাতু: মৌলিক ধাতুর পরে (অপরকে নিয়োজিত করা অর্থে) আ— প্রত্যয়যোগে যে ধাতু গঠিত হয়, তাকে প্রযোজক ধাতু বা ণিজন্ত ধাতু বলে। যেমন:
পড়্ + আ = শিক্ষক ছাত্রদের পড়াচ্ছেন।
কর্+আ=সে নিজে করে না, অন্যকে দিয়ে করায়।
২. নাম ধাতু: বিশেষ্য, বিশেষণ ও অনুকার অব্যয়ের পরে আ—প্রত্যয়যোগে গঠিত ধাতুকে নাম ধাতু বলে। যেমন:
ঘুম্ + আ: বাবা ঘুমাচ্ছেন।
হাত্ + আ: অন্যের পকেট হাতানো আমার স্বভাব নয়।
৩. কর্মবাচ্যের ধাতু: বাক্যে কর্তার চেয়ে কর্মের সঙ্গে যখন ক্রিয়ার সম্পর্ক প্রধান হয়ে ওঠে, তখন সে ক্রিয়াকে কর্মবাচ্যের ক্রিয়া বলে। কর্মবাচ্যের ক্রিয়ার মূলকে কর্মবাচ্যের ধাতু বলে।
মৌলিক ধাতুর সঙ্গে আ—প্রত্যয়যোগে কর্মবাচ্যের ধাতু গঠিত হয়। যেমন:
কর্ + আ = করা: আমি তোমাকে অঙ্কটি করতে বলেছি।
হার্ + আ = হারা: বইটি হারিয়ে ফেলেছি।
# পরবর্তী অংশ ছাপা হবে আগামীকাল
শিক্ষক
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা