রিয়াল মাদ্রিদ গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে, পাশাপাশি বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। বার্সেলোনা সেখানে তাদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছে না। লিগে যেভাবে নিয়মিত পয়েন্ট হারাচ্ছে, তাতে এখন রিয়াল মাদ্রিদেরই লিগ জেতার সম্ভাবনা বেশি। আবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও বার্সার দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে। তাই তৈরি হচ্ছে সমালোচনার সুযোগ। এই পরিস্থিতিতে বার্সেলোনা যদি আমাদের দেশের ক্লাব হতো, সমালোচনার ভাষা হতো কেমন? ভেবেছেন ফুটবলানুরাগী মাসউদ ফোরকান
বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ ও সমালোচক
বার্সেলোনা দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। যেই ক্লাবে খেলেছেন সিলেটের কৃতী সন্তান ইয়োহান ক্রুইফ, মাগুরার ম্যারাডোনা, বরিশালের রোনালদোর মতো তারকা খেলোয়াড়েরা। সেই ক্লাবটা আজ ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। রহমতগঞ্জের সঙ্গে হেরে পয়েন্ট হারাবে বার্সেলোনা, এটা নব্বইয়ের দশকে কল্পনাতেও কল্পনা করা যেত না। আমরা খুবই মর্মাহত হই, যখন শুনি, হোটেলে মেসির রুমে এসি নেই বলে তিনি টিমের সঙ্গে একই হোটেলে থাকতে অস্বীকৃতি জানান। গণমাধ্যমকর্মীদের কারোরই এটা অজানা নয় যে নেইমার ট্রেনিংয়ের চেয়ে স্যালনেই বেশি সময় দেন। আর সুয়ারেজ নাকি সারা দিন ফেসবুকেই থাকেন! দলে শৃঙ্খলা না থাকলেও ক্লাব সভাপতি যেখানেই যান ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে ‘ট্রেবল’ জেতার লক্ষ্যের কথা ব্যক্ত করেন। ক্লাব সভাপতি বর্তমানে রাজনীতি করছেন, আগে ছিলেন ক্রিকেট সংগঠক। এমন একজন অযোগ্য ও বিতর্কিত ব্যক্তিকে ক্লাব কীভাবে সভাপতি নির্বাচিত করে! সম্প্রতি ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বার্সার অনুপস্থিতিও তাদের দৈন্যের প্রকাশ। তারা নিজেরাই বুঝে গেছে যে তারা এখন বাজে ফুটবল খেলে। এটা খেলোয়াড়সুলভ আচরণ নয়।
রিয়াল মাদ্রিদের অতি বিশেষজ্ঞ সমর্থক
‘মেসির ব্যালন ডি’অর পাঁচটা, রোনালদোর কয়টা?’ বার্সার পোলাপানের এই একই প্যাঁচাল শুনতে শুনতে কানটা একেবারে ঝালাপালা হয়ে গেছিল। এইবার কী হইল, চান্দু? বার্সার সব একদম চুপসায় গেছে; বেচারা! ওদের নাকি ফিফার অনুষ্ঠানে ঢুকতেই দেয় নাই। ক্লাব সভাপতি নাকি গুষ্টিসুদ্ধ অনুষ্ঠান দেখতে চাইছিল! খেলাও পারে না, আবার বলে টিকিট দাও। হে হে হে। ব্যাটারা, টিভির সামনে বসে রিয়াল মাদ্রিদের খেলা দেখ। শেখার আছে অনেক কিছু। দেখছিস কেউ ফুটবলে একই সঙ্গে ব্যালন ডি’অর আর ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কার পায়? দিস ইজ রোনালদো। সে পকপক করে না, মাঠে খেলা দেখায়। মাঠেও বস, মাঠের বাইরেও বস। গুলিস্তান-বসুন্ধরা সিটিতে কার জার্সি বেশি বিক্রি হয়? রোনালদোর। আর আগের বছরের কিছু মেসি লেখা ত্যানা বিক্রি হয় ভ্যানে-ভ্যানে। রোনালদোর পাশে এসব মাছি মানায়? মানায় না। রিয়াল মাদ্রিদ ঢাকার প্রথম ক্লাব; রয়্যাল ক্লাব। বার্সা ট্রেবলের গল্প বেঁচে খাচ্ছে এখনো। গল্প বলে বেড়ানোর দিন শেষ।
বার্সার অতি জ্ঞানী সমর্থক
সব দোষ মেসির! নিজে গোল দিতে পারে না, নেইমার-সুয়ারেজকে পাসও দেয় না। নিজে নিজে কাটাবে! আরে, তুই কি ম্যারাডোনা? মেসি আসলে একটা কুফা। আর্জেন্টিনাকে ডুবাইছে, এখন বার্সার পেছনে লাগছে। সব ফ্রি-কিক, পেনাল্টি সে নিজে নেবে। এটা কোনো কথা! আর ম্যানেজমেন্ট তো খালি টাকা খায়। এত টাকা দিয়ে স্ট্রাইকার পজিশনে কিনেছে আল-কেসারকে। কেসার না ক্যানসার? দলটাকে পুরা ডুবাইছে। ও আসার পর থেকে নেইমারও গোল পায় না। সুয়ারেজেরও দিনকাল খারাপ। শুনলাম, সম্পর্কে ক্লাব সভাপতির বোনের জামাই হয় কেসার। এভাবে ক্লাবে যদি পরিবারের লোকজন ঢোকানো শুরু করে, তাহলে আত্মীয়স্বজন সবাইকে নিয়ে ‘ফ্যামিলি ফুটবল ক্লাব’ খুললেই তো পারে! এক টিমে তিনপুরুষের সবাই মিলেমিশে খেলল নাহয়। আর পিকে আছে শাকিরাকে নিয়ে। সাধারণ দর্শকেরা টিকিট পায় না, শাকিরা স্টেডিয়ামে যায় রিকি মার্টিন, ব্রায়ান অ্যাডামসদের নিয়ে। তারা খেলার কী বোঝে? এভাবে তো একটা ক্লাব চলতে পারে না!
অনলাইন নিউজ পোর্টালের খবর
রোনালদো বর্ষসেরা ফুটবলার, বার্সার অনুষ্ঠান বর্জন! (ভিডিওসহ)
ক্রীড়া প্রতিবেদক
গত বছর ইউরো আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দেখিয়েছেন অসাধারণ নৈপুণ্য। তাই এ বছর ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। এবং সেটা তাঁর হাতেই উঠল গতকাল। তবে ফুটবল বিশ্লেষকেরা বলছেন, ‘ঈর্ষান্বিত হয়ে’ অনুষ্ঠানে যাননি মেসি। নাম না প্রকাশের শর্তে বার্সেলোনার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ভুংভাং অনলাইন টুয়েন্টি ফোর নিউজকে বলেন, মেসিকে খুশি করতেই অনুষ্ঠান বর্জন করে বার্সেলোনা। তিনি আরও বলেন, নেইমার অনুষ্ঠানে আসতে চেয়েছিলেন, এটা জানতে পেরে মেসি সুয়ারেজকে সঙ্গে নিয়ে নেইমারকে তিরস্কার এবং একপর্যায়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করেন। পরে ক্লাব সভাপতির হস্তক্ষেপে দুজনকে শান্ত করা হয়।
এদিকে রোনালদো পুরস্কার পাওয়ার পর টুইট করে বলেছেন, ‘বুঝি, বুঝি। জ্বলে, তাই না? একই সঙ্গে ব্যালন ডি’অর আর ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কার পেয়েছি, সেটা দেখে পিত্তি জ্বলছে অনেকের। অনুষ্ঠানে কে এল আর না এল, কী এসে-যায়!’