বা ং লা দে শ ও বি শ্ব প রি চ য়

অধ্যায়-১ 

প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের অধ্যায়-১ থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।

প্রশ্ন: কাদের নিয়ে মুক্তিবাহিনী গঠিত হয়েছিল?

উত্তর: সামরিক ও বেসামরিক জনগণের মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে মুক্তিবাহিনী গড়ে উঠেছিল। বাঙালি সামরিক কর্মকর্তা ও সেনাদের নিয়ে গঠিত ছিল মুক্তিবাহিনীর নিয়মিত বাহিনী। এদের বলা হয় মুক্তিফৌজ। আর বেসামরিক সর্বস্তরের জনগণ নিয়ে গড়ে উঠেছিল অনিয়মিত বাহিনী। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুজিবনগর সরকারের উদ্যোগে ১৯৭১ সালের ১১ জুলাই মুক্তিবাহিনী গঠন করা হয়। কর্নেল মোহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি এবং গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারকে মুক্তিবাহিনীর উপপ্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়। লে. কর্নেল আব্দুর রব সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন।

প্রশ্ন: মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষ কীভাবে অংশ নিয়েছিলেন?

উত্তর: যুদ্ধের সময় এ দেশের অগণিত সাধারণ মানুষ নিজেদের জীবন বিপন্ন করে মুক্তিবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছিল। থাকা, খাওয়া, তথ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সাহায্য দিয়ে মুক্তিবাহিনীকে লড়াই চালিয়ে যেতে তারা উদ্বুদ্ধ করেছিল। এসব কাজে নারীদের বিশেষ ভূমিকা ছিল। সংস্কৃতিকর্মীরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীরাও সক্রিয়ভাবে এ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। এভাবে সব বিপদ তুচ্ছ করে মুক্তিবাহিনী ও বাংলার অগণিত মুক্তিকামী জনতা শহরে, গ্রামে যে যেভাবে পেরেছিল রুখে দাঁড়িয়েছিল। সবার মিলিত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ব্যাপক রূপ লাভ করে।

প্রশ্ন: মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী কী ধরনের নির্যাতন-তাণ্ডব চালিয়েছিল?

উত্তর: যুদ্ধের প্রথম থেকেই পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি নিধনে চরম নিষ্ঠুরতার পথ অবলম্বন করে। ২৫ মার্চ রাতের অন্ধকারে নিরীহ বাঙালিদের ওপর অতর্কিত হামলার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়। এ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন সার্চ লাইট’। পরবর্তী নয় মাস ধরেই পাকিস্তানি বাহিনীর এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত থাকে। পাশাপাশি তারা চালায় নির্বিচার লুটতরাজ ও ধরপাকড়। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ—কাউকেই রেহাই দেয়নি পাকিস্তানিরা। তারা লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করে সারা দেশের অগণিত স্থানকে বধ্যভূমিতে পরিণত করে।

প্রশ্ন: শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয় কেন?

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ-দেশীয় দোসররা এ দেশকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনা করে। ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে তারা বাংলাদেশের অনেক জ্ঞানী-গুণী শিল্পী, সাহিত্যিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, চিকিত্সক, সাংবাদিকদের ধরে নিয়ে হত্যা করে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র দেব, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক সেলিনা পারভীন, ডা. আলীম চৌধুরী, ডা. ফজলে রাব্বী এবং আরও অনেকে। এসব শহিদ বুদ্ধিজীবীর স্মরণে আমরা প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করি।

# পরবর্তী অংশ ছাপা হবে আগামীকাল