বা ং লা ২ য় প ত্র

প্রশ্নোত্তর  সমাস
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ বাংলা ২য় পত্র থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।
প্রশ্ন: উপসর্গ কাকে বলে? উপসর্গ কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণ দাও।
উত্তর: উপসর্গের সংজ্ঞা: যেসব বর্ণ বা বর্ণের সমষ্টি ধাতু এবং শব্দের পূর্বে বসে সাধিত শব্দের অর্থের পরিবর্তন, সম্প্রসারণ কিংবা সংকোচন ঘটায়, তাদেরকে বলা হয় উপসর্গ। যেমন—প্র, পরা, পরি, নির ইত্যাদি।
উপসর্গের শ্রেণীবিভাগ: বাংলা ভাষায় উপসর্গ তিন প্রকার। যথা—(ক) খাঁটি বাংলা উপসর্গ,
(খ) সংস্কৃত উপসর্গ ও
(গ) বিদেশি উপসর্গ।
(ক) খাঁটি বাংলা উপসর্গ: খাঁটি বাংলা উপসর্গ মোট ২১টি। যথা—অ, অনা, অজ, অঘা, আ, আড়, আন, আর, ইতি, ঊন, কদ, কু, নি, পাতি, বি, ভর, রাম, স, সা, সু, হা। প্রয়োগ: অ—অবহেলা, অকাজ। কু—কুকথা, কুকাজ।
(খ) সংস্কৃত উপসর্গ: সংস্কৃত উপসর্গ ২০টি। যথা—প্র, পরা, অপ, সম, নি, অব, অনু, নির, দূর, বি, অধি, সু, উৎ, পরি, প্রতি, অতি, অভি, অপি, উপ, আ। প্রয়োগ: প্র—প্রচার, প্রসার। উপ—উপদেশ, উপকার।
(গ) বিদেশি উপসর্গ: বাংলা ভাষায় বহু বিদেশি উপসর্গ রয়েছে। যেমন—বে, বর, বদ, ফি, গর, নিম, দর, কাম ইত্যাদি। প্রয়োগ: বে—বেয়াদব, বেসামাল। বদ—বদলোক, বদনাম।
প্রশ্ন: ‘উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই, কিন্তু অর্থ দ্যোতকতা আছে’—আলোচনা করো।
উত্তর: উক্তিটি বিশ্লেষণ: যে সকল অব্যয় মূল শব্দ বা ধাতুর সঙ্গে মিলে বা ধাতুকে অবলম্বন করে ওই ধাতুর নানা অর্থের সৃষ্টি করে তাদেরকে উপসর্গ বলা হয়। বাংলা ভাষায় ব্যবহূত উপসর্গগুলোর কোনো অর্থবাচকতা নেই, শুধু মূল শব্দ বা ধাতুর পূর্বে এরা ব্যবহূত হলেই এদের অর্থ দ্যোতকতা শক্তি দৃষ্ট হয়।
উদাহরণস্বরূপ: ‘অনা’ একটি উপসর্গ। এর নিজের কোনো অর্থ নেই। কিন্তু ‘আবাদ’ শব্দের পূর্বে ‘অনা’ শব্দটি ব্যবহূত হয়ে ‘অনাবাদ’ অর্থাৎ ‘আবাদ নেই যার’ অর্থে ব্যবহূত হয়েছে। তেমনি এটা আচারের পূর্বে ব্যবহূত হয়ে অনাচার (আচারবহির্ভুত অর্থে) এবং সৃষ্টির পূর্বে ব্যবহূত হয়ে অনাসৃষ্টি (অদ্ভুত অর্থে) এরূপে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ দ্যোতকতা সৃষ্টি করেছে।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, উপসর্গসমূহের নিজস্ব কোনো বিশেষ অর্থবাচকতা নেই বটে, কিন্তু অন্য শব্দের পূর্বে যুক্ত হলেই এদের অর্থদ্যোতকতা বা সংশ্লিষ্ট শব্দের নতুন অর্থ সৃজনের ক্ষমতা সৃষ্টি হয়।
# পরবর্তী অংশ ছাপা হবে আগামীকাল