বা ং লা ২ য় প ত্র

প্রশ্নোত্তর উপসর্গ ও অনুসর্গ
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ বাংলা ২য় পত্র থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।
প্রশ্ন: উপসর্গ কাকে বলে? উপসর্গের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করো।
উত্তর: উপসর্গ: যেসব সুনির্দিষ্ট বর্ণ বা বর্ণের সমষ্টি ধাতু এবং শব্দের পূর্বে বসে সাধিত শব্দের অর্থের পরিবর্তন, সম্প্রসারণ কিংবা সংকোচন ঘটায়, তাদেরকে বলা হয় উপসর্গ। যেমন—প্র, পরা, পরি, নির ইত্যাদি।
উপসর্গের প্রয়োজনীয়তা: ১। শব্দ ভান্ডার সমৃদ্ধ হয়: উপসর্গের মাধ্যমে যেহেতু নতুন নতুন শব্দ সৃষ্টি হয়। ফলে ভাষার শব্দসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ভাষার শব্দ ভান্ডার সমৃদ্ধ হয়। ২। ব্যঞ্জনা বাড়ে; উপসর্গের ব্যবহারে শব্দের ভাব-ব্যঞ্জনা অনেক গুণ বেড়ে যায়। যেমন: ‘জয়’ বললে শব্দটির যতটা ভাব প্রকাশিত হয়, পক্ষান্তরে ‘বিজয়’ বললে শব্দটির আবেদন অনেকটাই বেড়ে যায়। ৩। প্রকাশ ক্ষমতা বাড়ে: উপসর্গের ব্যবহারে ভাষার প্রকাশ ক্ষমতা বেড়ে যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্ভব এ কারণেই উপসর্গের তুলনা করেছেন মাছের পাখনার সঙ্গে। কারণ, পাখনার সাহায্যে মাছ যেমন ডান-বাঁয়ে বা সামনে-পেছনে চলার জন্য বিশেষ গতি লাভ করে, ঠিক তেমনি উপসর্গের মাধ্যমে শব্দ তার ব্যবহারিক ক্ষেত্রের বিস্তৃতি ঘটিয়ে থাকে। ৪। অর্থের পূর্ণতা আসে: উপসর্গের ব্যবহারে অনেক সময় শব্দের অর্থের পূর্ণতা আসে। যেমন—পুষ্টি শব্দের পূর্বে যদি ‘পরি’ উপসর্গ যোগ করা হয়, তাহলে মূল শব্দটির অর্থ প্রকাশের ক্ষেত্রে পূর্ণতাপ্রাপ্তি ঘটে। ৫। অর্থের সম্প্রসারণ ঘটে: নির্দিষ্ট কোনো শব্দের পূর্বে উপসর্গ যোগ করলে অনেক সময় সংশ্লিষ্ট শব্দটির অর্থের সম্প্রসারণ ঘটে। ফলে শব্দটির প্রচলিত অর্থের আবেদনে যোগ হয় ভিন্ন মাত্রা। যেমন—‘তাপ’ থেকে হয় ‘প্রতাপ’ কিংবা পরিতাপ ইত্যাদি। ৬। পরিভাষা সৃষ্টিতে: অনেক সময় উপসর্গের মাধ্যমে পরিভাষাও প্রণয়ন করা হয়। যেমন: Conductor-পরিবাহী, Requisiton-অধিগ্রহণ ইত্যাদি উপসর্গের উপযুক্ত গুণাবলি বিবেচনা করে অনেক বৈয়াকরণিক মনে করেন যে, ‘উপসর্গ কেবল প্রয়োজনীয় নয়, ভাষার পক্ষে অপরিহার্য।’
প্রশ্ন: উপসর্গ ও অনুসর্গের মধ্যে পার্থক্য উদাহরণসহ লেখো।
উত্তর: উপসর্গ ও অনুসর্গের পার্থক্য:
উপসর্গ অনুসর্গ
১। যে সব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি ধাতু বা শব্দের পূর্বে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে উপসর্গ বলে। যেমন—
উপসর্গ গঠিত শব্দ
উপউপকূল
প্রপ্রশংসা ১। বাংলা ভাষায় যে অব্যয় শব্দগুলো কখনো স্বাধীন পদরূপে আবার কখনো শব্দ
বিভক্তির ন্যায় বাক্যে ব্যবহূত হয়ে বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে তাকে অনুসর্গ
বলে। যেমন—প্রতি, বিনা, তরে, মাঝে, কাছে, হেতু ইত্যাদি।
(ক) দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে। (খ) মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।
(গ) সকলের তরে সকলে আমরা।
২। উপসর্গ নামবাচক বা কৃদন্ত শব্দের পূর্বে বসে। ২। অনুসর্গ বিশেষ্য ও সর্বনাম শব্দের পরে বসে।
৩। উপসর্গ মূল শব্দের অর্থ পরিবর্তন করে। ৩। অনুসর্গ মূল শব্দের অর্থ ঠিক রাখে।
৪। উপসর্গ বিভক্তির কাজ করে না। ৪। অনুসর্গ বিভক্তির কাজ করে।
৫। উপসর্গ কোনো শব্দের সঙ্গে পৃথকভাবে ব্যবহূত হতে পারে না। ৫। অনুসর্গ পৃথকভাবে ব্যবহূত হয়।
৬। উপসর্গ নতুন অর্থবোধক শব্দ তৈরি করে। ৬। অনুসর্গ নতুন শব্দ তৈরি করতে পারে না।