যতনে রাখিযন্ত্র

অফিস শেষে বাড়ি ফিরে ঝটপট কিছু ইফতারি বানিয়ে ফেললেন ওভেনে, ফলের রস করলেন জুসার বা ব্লেন্ডারে। কিন্তু কাজ শেষে এসব ধুয়েমুছে রাখা হচ্ছে তো? ক্লান্তিতে এসবের যত্নের কথা ভুলে গেলে চলবে না। কারণ, রমজান মাসজুড়ে তো বটেই, ঈদের রান্নাবান্নাতেও আপনাকে সাহায্য করবে এসব যন্ত্র। সে জন্য এসব সামগ্রীর যত্ন-আত্তি নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন রান্নাবিদ ফাতিমা আজিজ।
ব্লেন্ডার
l ব্লেন্ডারের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরই পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
l নিয়মিত ব্যবহার করলে দুই দিন পর পর গরম পানির সঙ্গে লবণ বা তরল সাবান মিশিয়ে এর প্রতিটা অংশ পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর শুকনো নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।
মাইক্রোওয়েভ ওভেন
l সপ্তাহে অন্তত এক দিন নরম কাপড় বা শুকনো ব্রাশ ও সাবান পানি দিয়ে ওভেন পরিষ্কার করা যেতে পারে। এরপর শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।
l একটা কাচের বাটিতে পানি নিয়ে তাতে এক চামচ করে সিরকা বা ভিনেগার ও লেবুর রস মিশিয়ে দেড় মিনিট মাইক্রোওয়েভ ওভেনের ভেতরে রাখতে হবে। ওভেন গরম হয়ে স্ক্রিন ঘেমে গেলে তারপর মুছে ফেলতে হবে। তাতে ওভেনের খাবারের গন্ধ দূর হবে।
বৈদ্যুতিক কেটলি, রাইস কুকার, জুস এক্সট্র্যাক্টর, স্যান্ডউইচ মেকার
l হালকা কুসুম গরম পানিতে তরল সাবান মিশিয়ে তাতে ফোম ভিজিয়ে নিন। এটি দিয়ে বৈদ্যুতিক কেটলি ও রাইস কুকারের ভেতরটা পরিষ্কার করে ফেলুন। পরে শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। চাইলে গ্লাস ক্লিনার দিয়ে মুছতে পারেন, চকচকে ভাব আসবে।
l জুস এক্সট্র্যাক্টর ব্যবহারের পর তরল সাবান দিয়ে ভেতরটা পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। ডিটারজেন্ট ব্যবহার না করাই ভালো।
l জুস এক্সট্র্যাক্টরে ফলের রস করতে হলে শক্ত কোনো খোসা থাকলে সেটা ছাড়িয়ে নিতে হবে।
l স্যান্ডউইচ মেকারের স্যান্ডউইচ তৈরির পর এর ভেতরের প্লেটটা নোংরা হয়ে যায়। তাই শুকনো ফোম দিয়ে মুছে নিতে হবে।
জেনে নিন
ঈদ সামনে রেখে যাঁরা রান্নাঘরে ব্যবহারের নতুন বৈদ্যুতিক সামগ্রী কিনেছেন, তাঁদের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন এপিক হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস লিমিটেডের কাস্টমার কেয়ারের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা।

মাইক্রোওয়েভ ওভেন
l যে প্লাগ পয়েন্টে ওভেন সংযোগ দেওয়া হবে তা আর্থিং করা থাকতে হবে।
l কোনো অবস্থাতেই এক্সটেনশন কর্ড ব্যবহার করা যাবে না।
l তেলাপোকা, টিকটিকি যাতে ওভেনে প্রবেশ করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা তেলাপোকা ওভেনের বিশেষ ক্ষতি করে।
l খালি অবস্থায় ওভেন চালানো ঠিক নয়। তবে কনভেকশন পদ্ধতিতে (মাইক্রোওয়েভ ওভেনের একটি সুবিধা) রান্না বা খাবার তৈরির আগে খালি অবস্থায় প্রিহিট করা যাবে।
l মাইক্রোওয়েভ ওভেনে বেশি সময় ধরে কাগজ বা প্লাস্টিক পাত্র ব্যবহার করা যাবে না। তাতে পাত্রে আগুন ধরে যেতে পারে।
l মাইক্রোওয়েভ ওভেনের গ্রিল বা কনভেকশন পদ্ধতিতে রান্নার সময় কোনো অবস্থাতে প্লাস্টিক বা কাগজের পাত্র ব্যবহার করা যাবে না।
l ওভেন ব্যবহারের সময় হাতে কাপড়ের গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে।
ব্লেন্ডার
l একনাগাড়ে অনেকক্ষণ ব্লেন্ড করা যাবে না। তাতে যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
l ব্লেন্ডার ব্যবহারের সময় ব্লেডে পানি লেগে তা যাতে যন্ত্রের মধ্যে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
l ব্যবহারের পর প্রতিটি অংশ আলাদা করে পানি দিয়ে ধুয়ে শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে।
রাইস কুকার
l পোলাও, ভাত, খিচুড়ি রান্না করার পরে ঠান্ডা হলে রাইস কুকারের বোলটা পরিষ্কার করে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। কিন্তু হিটিং প্লেটটা শুকনা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
l গরম অবস্থায় যেন রাইস কুকারে পানি না লাগে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
l রাইস কুকারের ভেতরের বোলটাতে কখনো রান্নার জন্য স্টেইনলেস স্টিলের চামচ ব্যবহার করা যাবে না। এতে বোলের ভেতরটাতে দাগ পড়ে যায়। কাঠ বা প্লাস্টিকের চামচ ব্যবহার করতে হবে।

টোস্টার, জুসার, স্যান্ডউইচ মেকার
l খাবার টোস্ট করার পরে খাবারের কণা যেন লেগে না থাকে, সে জন্য টোস্টার উপুড় করে খাবারের কণাগুলো ফেলে দিতে হবে।
l জুস এক্সট্র্যাক্টরের ব্লেডের সঙ্গে যেন ফলের আঁশ লেগে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
দরদাম
ঢাকা শহরের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, ব্র্যান্ড, আকার ও ধারণক্ষমতাভেদে রান্নাঘরে ব্যবহূত বৈদ্যুতিক সামগ্রীর দামের তারতম্য রয়েছে।বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোওয়েভ ওভেনের দাম ৬৫০০ থেকে ৩০০০০ টাকা, ইলেকট্রিক ওভেন ৪৪২৮-৫৯২৩ টাকা, রাইস কুকার ১৫০০-৫০০০ টাকা; ব্লেন্ডার ১৬০০-৬৪৭০ টাকা; বৈদ্যুতিক কেটলি ১২০০-৪৮০০ টাকা, টোস্টার ১৩০০-৪০০০ টাকা, স্যান্ডউইচ মেকার ১৩০০-২৩৬৫ টাকা।