শুরুতেই হোঁচট খেল ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগ

নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল আনার ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
এএফপি

ফেসবুক-টুইটারে নিষিদ্ধ হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন। বেশ কয়েকবার নানাভাবে চেষ্টাও করেছেন। সর্বশেষ আমরা ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ চালুর খবর দেখেছি। তবে শুরুতেই হোঁচট খেল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ উদ্যোগ।

অলাভজনক সংস্থা সফটওয়্যার ফ্রিডম কনজারভেন্সির (এসএফসি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ফ্রি এবং মুক্ত সোর্স কোডভিত্তিক সফটওয়্যারের একটি চুক্তি ভঙ্গ করেছেন, বিকেন্দ্রীকৃত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তৈরির সফটওয়্যার মাস্টোডনের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। লাইসেন্সের শর্তাবলি মানার জন্য ৩০ দিন সময় পাবে তাঁর ট্রাম্প মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপ (টিএমটিজি)। এর মধ্যে না মানলে সফটওয়্যারটির ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে আইনি বাধার মুখে পড়বে ট্রুথ সোশ্যাল, নয়তো পুরো সিস্টেম নতুন করে গড়ে তুলতে হবে।

দ্য ভার্জের প্রতিবেদনে বলা হয়, টিএমটিজির মিডিয়া সাম্রাজ্য গঠনের উদ্দেশ্যে বিশেষ তহবিল সংগ্রহের আয়োজন করা হয় গত বৃহস্পতিবার। তবে এ পর্যন্ত কেবল ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ নামের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছাড়া আর কিছু নেই সে সাম্রাজ্যে। সেটিও মাস্টোডন নামের ফ্রি সফটওয়্যার থেকে তৈরি। মুক্ত সোর্স হওয়ায় যে কেউ বিনা মূল্যে মাস্টোডনের কোড ব্যবহার করতে পারেন। তবে সে ক্ষেত্রেও অ্যাফেরো জেনারেল পাবলিক লাইসেন্সের (এজিপিএল) শর্তাবলি মেনে চলতে হবে। যাঁরা সে কোড ব্যবহার করবেন, তাঁদের সোর্স কোডও অবমুক্ত করার কথা বলা হয়েছে লাইসেন্সের শর্তে।

ট্রুথ সোশ্যাল সে নিয়ম না মেনে তাদের সেবা ‘প্রোপাইটরি’ বা মালিকানাধীন ঘোষণা করে। নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির সফটওয়্যার ডেভেলপাররা সোর্স কোড থেকে মাস্টোডনের সব চিহ্ন মুছে ফেলার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। তবে বেশ কিছু সাদৃশ্য থেকে যায়।

যেকোনো সফটওয়্যার তৈরির প্রোগ্রামিং কোডের সমষ্টিই সোর্স কোড।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
রয়টার্স

টিএমটিজির এমন কৌশলে স্বাভাবিকভাবেই নাখোশ হয়েছে এসএফসি। এই সংগঠন ফ্রি এবং মুক্ত সোর্স কোডভিত্তিক সফটওয়্যারগুলো লাইসেন্স চুক্তি ও অধিকার নিয়ে কাজ করে।

এসএফসির নীতিমালা ফেলো ব্র্যাডলি কুন এক ব্লগপোস্টে লেখেন, ‘লাইসেন্সে যুক্তিসংগত কারণেই সবাইকে সমান সুযোগ দেওয়া হয়েছে (এমনকি যাঁদের পছন্দ করি না বা মতের মিল নেই, তাঁদের ক্ষেত্রেও)। তবে তাঁদের সবাইকে একই নিয়ম মেনে চলতে হবে। আজ আমরা ট্রাম্প মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপের সেই গুরুত্বপূর্ণ নিয়মগুলো ভঙ্গের নজির দেখলাম, যে নিয়ম সবার ভালোর জন্য করা হয়েছে।’

ট্রুথ সোশ্যাল অবশ্য এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে। ব্যবহারকারীরা চাইলে সে সংস্করণ পরখ করে দেখতে পারেন। অনেকে সেখানে মজা করার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। এমনকি ডোনাল্ড ট্রাম্পের পোস্ট নকল করতেও দেখা গেছে। এর পর থেকে নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য অপেক্ষমাণ তালিকার ব্যবস্থা করা হয়। তবে এসএফসি বলেছে, এসব ব্যবহারকারীর ট্রুথ সোশ্যালের সোর্স কোড দেখার সুযোগ করে দিতে হবে। যদি ৩০ দিনের মধ্যে তা না করা হয়, তবে সফটওয়্যারটি ব্যবহারের সুযোগ তারা স্বয়ংক্রিয় ও স্থায়ীভাবে হারাবে।

মাস্টোডনের প্রতিষ্ঠাতা ইউজেন রকো বৃহস্পতিবার বলেছেন, এ পরিস্থিতিতে তিনি আইনি পরামর্শ নেবেন। তবে পদক্ষেপ কী হবে, তা বলেননি তিনি।