সাইবার নিরাপত্তা দেওয়া ‘ফায়ারআই’ নিজেই হ্যাকিংয়ের শিকার

অর্থ চুরির তদন্তে মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফায়ারআই
ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ফায়ারআই হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বজুড়ে বড় বড় সাইবার আক্রমণ শনাক্ত ও প্রতিরোধে কাজ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় ক্যালিফোর্নিয়ায়।

গতকাল মঙ্গলবার ফায়ারআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জটিল আক্রমণের মাধ্যমে ভেঙেছে হ্যাকাররা। এ ছাড়া রেড টুল নামের বিশেষ প্রোগ্রাম চুরি করেছে, যা মূলত কম্পিউটার সিস্টেমে সাইবার আক্রমণের বিষয়টি পরীক্ষা করার কাজে ব্যবহার করা হতো। বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এএফপি জানিয়েছে, এ আক্রমণ কারা চালিয়েছে, তা এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। তবে আক্রমণের কৌশল ও লক্ষ্য দেখে ফায়ারআই কর্তৃপক্ষ ধারণা করছে, এটি রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট আক্রমণ। যে রাষ্ট্র থেকে আক্রমণ চালানো হয়েছে, তাদের শীর্ষ স্তরের আক্রমণ ক্ষমতা রয়েছে।

সিলিকনভ্যালির প্রতিষ্ঠান ফায়ারআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, আক্রমণে কোনো গ্রাহকের তথ্য চুরি হয়নি বা চুরি করা প্রোগ্রাম দিয়ে কোনো আক্রমণের ঘটনাও তাদের চোখে পড়েনি।

আক্রমণকারীরা তাদের বিশ্বমানের সক্ষমতা নিয়ে ফায়ারআইকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে আক্রমণ চালিয়েছে।
কেভিন মানদিয়া, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ,ফায়ারআই

ফায়ারআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেভিন মানদিয়া এক ব্লগ পোস্টে বলেছেন, ‘আক্রমণকারীরা তাদের বিশ্বমানের সক্ষমতা নিয়ে ফায়ারআইকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে আক্রমণ চালিয়েছে। এ কাজে তারা বিভিন্ন ধরনের কৌশলের সমন্বয়ে নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করেছে, যা অতীতে আমরা বা আমাদের সহযোগীরা কেউ দেখিনি।’

ফায়ারআই কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা এই আক্রমণের বিষয়টি তদন্তে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ও মাইক্রোসফটের মতো অন্য সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করছে।

মানদিয়া বলেন, ‘তাদের প্রাথমিক বিশ্লেষণটি আমাদের এই সিদ্ধান্তে সমর্থন করে যে এটি নতুন কৌশল ব্যবহার করে অত্যন্ত জটিল রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট আক্রমণের ঘটনা।’

হ্যাকাররা প্রাথমিকভাবে সরকারি গ্রাহকদের তথ্যের খোঁজ করেছে, যা রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দাগিরির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। মানদিয়া বলেন, ফায়ারআইয়ের রেড টিম টুলে আক্রমণের বিষয়টিও হ্যাকারদের আচরণ সম্পর্কে একই ধারণা দেয়।

ফায়ারআইয়ের পক্ষ থেকে ওই টুলটি ব্যবহার বন্ধ করতে পাল্টা প্রতিরোধী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ বলছে, তারা ওই আক্রমণ সম্পর্কে জেনেছে। তবে চুরি যাওয়া প্রোগ্রামটি ক্ষতিকরভাবে ব্যবহারের কোনো প্রমাণ পায়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আট কোটি ডলার চুরি যাওয়ার ঘটনা তদন্তে সহযোগিতা করছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ফায়ারআই ম্যান্ডিয়েন্টের ফরেনসিক বিভাগ।

ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালিভিত্তিক ফায়ারআই বড় ধরনের বেশ কয়েকটি সাইবার চুরির ঘটনা তদন্ত করেছে। এ কাজে তাদের বিশেষ দক্ষতা আছে। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির ঘটনা তদন্তে পরামর্শক হিসেবে কাজ করা ওয়ার্ল্ড ইনফরমেটিক্স তদন্তের সঙ্গে ফায়ারআইকে যুক্ত করেছিল।