সা ধা র ণ বি জ্ঞা ন

প্রশ্নোত্তর  অধ্যায়-২
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ সাধারণ বিজ্ঞান বিষয় থেকে একটি সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।

উপকূলীয় বনায়ন সৃষ্টির আওতায় দুবলার চরে অনেক বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছিল। স্থানীয় একটি জেলে পরিবার এই চরে আশ্রয় নেয়। জেলে পরিবারটি বসবাসের জন্য চরের গাছপালা কেটে ফেলতে শুরু করে। এ ছাড়া তারা গাছপালাগুলোকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে। আরও কিছু জেলে পরিবার ওই চরে আসায় চরাঞ্চলটি বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ে।

প্রশ্ন:
ক. জীবনের মূল উপাদান কী?
খ. স্থূল জন্মহার বলতে কী বোঝায়?
গ. জেলে পরিবারের উল্লেখিত কর্মকাণ্ড প্রাকৃতিক কোন চক্রটিকে ব্যাহত করছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. জেলে পরিবারের উল্লেখিত কর্মকাণ্ডই কি আমাদের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ? মতামত দাও।
উত্তর: ক. জীবনের মূল উপাদান প্রোটোপ্লাজম।
উত্তর: খ. কোনো বছরে মোট জীবন্ত শিশু জন্মের সংখ্যা এবং সেই বছরের মধ্যবর্তী সময়ের জনসংখ্যার অনুপাতকে স্থূল জন্মহার বলে।

স্থূল জন্মহার= ১০০০

উত্তর: গ. জেলে পরিবারের উল্লেখিত কর্মকাণ্ড কার্বন চক্রকে ব্যাহত করছে। কার্বনের তিনটি প্রধান উৎস হলো বায়ুমণ্ডল, ভূ-পৃষ্ঠের কার্বনেট শিলা এবং কয়লা ও পেট্রোলিয়াম। এসব উৎস থেকে কার্বন বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীবজগতে আসে। তারপর শ্বসন প্রক্রিয়ার সাহায্যে জীবদেহের কার্বন দ্বারা গঠিত যৌগগুলো বায়ু দ্বারা জারিত হয়ে প্রাণীদেহে প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করে এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড হিসেবে বায়ুতে ছেড়ে দেয়।
খাদ্য তৈরির জন্য গাছপালা এই কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে। এভাবে কার্বনের চক্রাকার আবর্তনকে কার্বন চক্র বলে।
উদ্দীপকে উল্লেখিত জেলে পরিবারটি গাছপালা কেটে ফেলতে শুরু করে। সাধারণত যে পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড বায়ুমণ্ডলে নিঃসৃত হয়, তা সালোক সংশ্লেষণের জন্য সবুজ উদ্ভিদ গ্রহণ করে। কিন্তু গাছপালা কেটে ফেলার কারণে বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড অপসারিত হচ্ছে না। আবার জেলে পরিবারটি যখন জ্বালানি হিসেবে গাছপালা পোড়ায়, তখন প্রচুর কার্বন ডাই-অক্সাইড বাতাসে নির্গত হয়। ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায় কার্বন চক্রকে ব্যাহত করে।
উত্তর: ঘ. হ্যাঁ, জেলে পরিবারের উল্লেখিত কর্মকাণ্ডই আমাদের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। গাছপালা কেটে ফেলার কারণে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়। কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রতিফলিত সূর্যরশ্মি বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইডের ভেতর দিয়ে মহাশূন্যে যেতে না পারার কারণে পৃথিবী উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। পৃথিবী উত্তপ্ত হওয়ার এই প্রক্রিয়াকেই বলা হয় গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া।
গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়ার ফলে পৃথিবীর দুই মেরু অঞ্চলে জমাকৃত বরফ গলতে শুরু করেছে। ফলে সমুদ্রে পানির উচ্চতা বেড়ে যাবে। ভূ-পৃষ্ঠের অনেক নিচু জায়গা পানিতে ডুবে যাবে। সমুদ্রের অনেক দ্বীপ, সমুদ্রোপকূলের অনেক দেশ ও শহর সমুদ্রের পানিতে তলিয়ে যাবে। আমাদের বাংলাদেশের বেশির ভাগ অঞ্চলই বঙ্গোপসাগরের অথই পানিতে তলিয়ে যাবে। বিপন্ন হবে জীববসতি, বিপন্ন হবে জীবন। সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে জেলে পরিবারের উল্লেখিত কর্মকাণ্ড আমাদের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ।