
প্রাথমিক পর্যায়ে পড়ার সময় উপজেলায় আয়োজিত ‘লোকগীতি’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। এরপর গান, আবৃত্তি, রচনা লিখন, উপস্থিত বক্তৃতা, বিতর্কসহ নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে কেবলই কৃতিত্বের সঙ্গে এগিয়ে চলা। স্কাউটিংয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বছর পাঁচেক, শ্রেষ্ঠ স্কাউটও নির্বাচিত হয়েছিলেন। ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতির নানা মাধ্যমে হাতেখড়ি খলিলুরের। ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছেন সব কাজের কাজি। বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায়।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী-শিক্ষক সবাই খলিলুরকে এক নামে চেনেন। তাঁর মূল নাম খলিলুর রহমান হলেও সবাই তাঁকে চেনে ফয়সাল নামে। কৃষি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি শেষ করে বর্তমানে কৃষিতত্ত্ব ও হাওরবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর বিভাগে পড়ছেন। পাশাপাশি সিলেটে ধানের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে মটরের চাষ করে কীভাবে সর্বোচ্চ উৎপাদন নিশ্চিত করা যায়, উচ্চতর গবেষণা করছেন এ বিষয়ে।
তিনি একজন সুদক্ষ সংগঠক। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদি পরিচালনার ভার তাঁর ওপর। নাট্যরচয়িতা ও নির্দেশক হিসেবেও সিলেটে বেশ নামডাক। তাঁর রচনা ও নির্দেশনায় অন্যতম নাটকগুলো হলো জিনের আসর, একাত্তরের চিঠি, সুপারম্যান ইত্যাদি। অভিনীত নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একুশের রাত ও সামসুদ্দিন রাজাকার। তাঁর হাত ধরে ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘মৃত্তিকা’ নামের সংগঠন। এ সংগঠনের কর্মীরা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার পাশাপাশি বাংলাদেশ বেতারের সিলেট কেন্দ্রের ৮৮.৮ তরঙ্গে কৃষকদের জন্য সরাসরি এক ঘণ্টার একটি অনুষ্ঠান করে থাকেন। এতে কথাবন্ধুর দায়িত্ব পালন করেন খলিলুর। আবার সিনেমা তৈরির নেশায় ইতিমধ্যে তিনি ‘কাকতাড়ুয়া’ নামে ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফির একটি প্রতিষ্ঠানও তৈরি করেছেন। এখানে শেষ হয়েছে পরীক্ষামূলক কয়েকটি মিউজিক ভিডিও এবং আরও কিছু কাজ।
চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে খলিলুর সবার বড়। বাবা হাবিবুর রহমান পেশায় সরকারি চাকরিজীবী। মা ফাতেমা রহমান মারা গেছেন। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে খলিলুরের যুক্ত হওয়ার পেছনে তাঁর বাবার অবদান সবচেয়ে বেশি।
খলিলুরের চোখে এখন অনেক স্বপ্ন। বললেন, ‘সংস্কৃতির নানা ক্ষেত্রে কাজ করলেও আমি বড় হয়েছি সিনেমা পরিচালক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে।’
sumankumardash@yahoo.com