সাবমেরিন কেব্‌ল প্রকল্পের উন্নয়নে নকিয়ার সঙ্গে বিপিসিএস কনসোর্টিয়ামের চুক্তি

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিপিসিএস কনসোর্টিয়াম ও নকিয়ার কর্মকর্তারাসংগৃহীত

সাবমেরিন লাইন টার্মিনাল ইকুইপমেন্ট (এসএলটিই) সরবরাহের জন্য নকিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ প্রাইভেট কেব্‌ল সিস্টেম (বিপিসিএস) কনসোর্টিয়াম। গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন মেটাকোর সাবকম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আমিনুল হাকিম, সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আরিফ আল ইসলাম এবং সিডিনেট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের সিইও মো. মশিউর রহমান, নকিয়া ইন্ডিয়ার হেড অব সেলস ইউনিট প্রশান্ত মালকানি ও সিনিয়র সেলস অ্যাকাউন্ট ডিরেক্টর সুমন প্রাসাদ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্বের মোট ইন্টারনেট ট্র্যাফিকের প্রায় ৯৭ শতাংশ বিভিন্ন সাগরের তলদেশে থাকা কেব্‌লের মাধ্যমে এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে পরিবাহিত হওয়ায় সাবমেরিন কেব্‌ল  ইন্টারনেট ও আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগের মেরুদণ্ড হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। স্যাটেলাইট যোগাযোগের তুলনায় অপটিক্যাল ফাইবার-ভিত্তিক সাবমেরিন কেব্‌ল অনেক বেশি দ্রুত ও উচ্চক্ষমতার ইন্টারনেট তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। বাংলাদেশে সরকারিভাবে সাবমেরিন কেব্‌ল সংযোগের মাধ্যমে এ সেবা পরিচালনা করা হয়, যা পরিচালনা করছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌লস পিএলসি। সারা বিশ্বে বেসরকারি কেব্‌ল সংযোগ স্থাপনের প্রসার বাড়ছে। বাংলাদেশেও সেই সুযোগ নিয়ে কাজ করছেন বেসরকারি উদ্যোক্তারা।

আমিনুল হাকিম বলেন, নকিয়ার প্রযুক্তিপণ্যে বিদ্যুৎ খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি তথ্যভান্ডারের (ডেটা সেন্টার) জায়গাও কম লাগে। ফলে সহজে নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা করাসহ খরচ কম হয়। কেব্‌লের দুই প্রান্তেই নকিয়ার এসএলটিই ব্যবহার করা হচ্ছে, যা উচ্চমানের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ভবিষ্যতে ব্যান্ডউইডথের মূল্য কমলে গ্রাহকপর্যায়ে ইন্টারনেট খরচও কমবে।

বর্তমানে দেশে ব্যান্ডউইডথ ব্যবহার হচ্ছে ৯ হাজার জিবিপিএস। ২০২৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশের ব্যান্ডউইডথের চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে আনুমানিক ২০ হাজার জিবিপিএস। বিপিসিএস কনসোর্টিয়ামের হিসেবে ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ব্যান্ডউইডথের চাহিদা হবে প্রায় ৫০ হাজার জিবিপিএস। এ চাহিদা মোকাবিলায় বেসরকারি খাতের এই তিনটি সাবমেরিন কেব্‌ল অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে উদ্যোক্তারা প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। আরও ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় করে ২০২৬ সালের জুনের পর এই তিনটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ৩ পেয়ার কেব্‌ল চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক টেরেস্ট্রিয়াল কেব্‌লের (আইটিসি) মাধ্যমে ভারত থেকে প্রায় ৬০ শতাংশের ও বেশি ব্যান্ডউইডথ আসে। এতে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ভারতে চলে যায়। সিঙ্গাপুর-কক্সবাজার রুটের নতুন এই ৩ পেয়ার কেব্‌ল চালু হলে ভারতের ওপর নির্ভরতা কমবে।

অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারসহ নকিয়ার হেড অব ইমার্জিং বিজনেস জিবিতেশ নায়াল, মার্কেটিং ম্যানেজার রাহুল দেরওয়ানি, নকিয়ার অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ আর ইসলাম ও নকিয়া বাংলাদেশের হেড অব সেলস ক্রিস্টোফার স্যামুয়েল উপস্থিত ছিলেন।