আইফোন-আইপ্যাড ব্যবহারকারীদের এনক্রিপশন করা তথ্য জানতে চায় যুক্তরাজ্য, কেন

আইফোন, আইপ্যাডসহ অন্য কোনো অ্যাপল পণ্য থেকে পাঠানো তথ্য প্রাপক ছাড়া অন্য কেউ জানতে পারেন নাঅ্যাপল

ব্যবহারকারীদের আদান-প্রদান করা তথ্যের নিরাপত্তায় গোপনীয়তা সুরক্ষার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই নিজেদের মেসেজিং অ্যাপ ‘আইমেসেজ’-এ এনক্রিপশন পদ্ধতিতে বার্তা আদান-প্রদান করে থাকে অ্যাপল। ফলে চাইলেও আইফোন, আইপ্যাডসহ অন্য কোনো অ্যাপল পণ্য থেকে পাঠানো তথ্য প্রাপক ছাড়া অন্য কেউ জানতে পারেন না। সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সরকার অ্যাপলকে এমন একটি ব্যবস্থা চালু করার নির্দেশ দিয়েছে, যার মাধ্যমে দেশটির নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বিশ্বব্যাপী যেকোনো অ্যাপল পণ্য ব্যবহারকারীর ক্লাউডে সংরক্ষণ করা এনক্রিপশন তথ্য পড়ার সুযোগ পাবে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ‘টেকনিক্যাল ক্যাপাবিলিটি নোটিস’ নামে একটি নির্দেশনা পাঠিয়ে অ্যাপলকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে।

ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইনভেস্টিগেটরি পাওয়ারস অ্যাক্ট, ২০১৬–এর আওতায় যুক্তরাজ্য সরকার গত মাসে অ্যাপলকে যেকোনো অ্যাপল পণ্য ব্যবহারকারীর ক্লাউডে সংরক্ষণ করা এনক্রিপশন করা তথ্য পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তবে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা ও তথ্য সুরক্ষা নীতির সঙ্গে আপস করতে না চাইলে অ্যাপল যুক্তরাজ্যে নিজেদের এনক্রিপ্টেড ক্লাউড স্টোরেজ সেবা বন্ধ করে নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী, অ্যাপল চাইলে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে। তবে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থাতেও প্রতিষ্ঠানটিকে দেশটির সরকারের নির্দেশনা মানতে হবে। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘প্রযুক্তিগত নির্দেশনা বা গোয়েন্দাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করব না।’

আরও পড়ুন

এর আগেও বিভিন্ন দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে অ্যাপল। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত এক বন্দুকধারীর আইফোন আনলক করতে অ্যাপলের সহায়তা চেয়েছিল। তবে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে প্রতিষ্ঠানটি সেই অনুরোধ নাকচ করে দেয়।

আরও পড়ুন

প্রসঙ্গত, এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন মূলত অনলাইনে নিরাপদে যোগাযোগের পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে প্রেরকের কাছ থেকেই বার্তাতে বিশেষ সংকেত (কোড) যুক্ত করে প্রাপকের কাছে পাঠানো হয়। প্রাপকের কাছে পৌঁছানোর পর কোডযুক্ত বার্তাকে আবার সাধারণ বার্তায় পরিণত করে। এতে নির্দিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ বার্তায় থাকা তথ্য জানতে পারেন না। এমনকি তথ্য বিনিময় করা অ্যাপ বা যোগাযোগমাধ্যমগুলোর পক্ষেও কোনো তথ্য জানা সম্ভব হয় না। ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে অ্যাপল ২০১৪ সালে পূর্ণাঙ্গ এনক্রিপশন–সুবিধা চালু করে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া