শুধু ই–মেইল ঠিকানা দিয়েই কি প্রতারণা করতে পারে সাইবার অপরাধীরা
একই ই–মেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন আর্থিক ও অনলাইন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন অনেকে। ই–মেইল অ্যাকাউন্টটির নিরাপত্তা বাড়াতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহারের পাশাপাশি নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তনও করেন কেউ কেউ। কিন্তু বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে থাকা ই–মেইল অ্যাকাউন্টটির ঠিকানা সংগ্রহ করে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন প্রতারণা করতে পারে সাইবার অপরাধীরা। অর্থাৎ অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড না জেনেও শুধু ই–মেইল ঠিকানা ব্যবহার করে অনলাইনে প্রতারণা করতে পারে তারা। ই–মেইল ঠিকানা ব্যবহার করে যেসব উপায়ে সাইবার অপরাধীরা প্রতারণার ফাঁদে ফেলে থাকে, সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ফিশিং ই–মেইল
ফিশিং ই–মেইল হচ্ছে একধরনের প্রতারণা কৌশল। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে ফাঁদে ফেলার জন্য পুরস্কার জিতে নেওয়া বা বিশেষ অফারের প্রলোভন দেখিয়ে ম্যালওয়্যার লিংক যুক্ত ই–মেইল পাঠিয়ে থাকে সাইবার অপরাধীরা। লিংকে ক্লিক করলেই ব্যবহারকারীদের যন্ত্রে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে। এরপর ম্যালওয়্যারটি গোপনে ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টের নাম, পাসওয়ার্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠাতে থাকে। ফলে অনেকেই প্রতারিত হন।
নকল ই–মেইল ঠিকানা ব্যবহার
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বোকা বানাতে যেকোনো ব্যক্তির ই–মেইল ঠিকানার কাছাকাছি শব্দ ব্যবহার করে নকল ই–মেইল ঠিকানা তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করে থাকে সাইবার অপরাধীরা। এসব নকল ই–মেইল ঠিকানায় আসল ই–মেইল ঠিকানার সঙ্গে বাড়তি সংখ্যা বা শব্দ যুক্ত করা হয়, ফলে অনেকেই নকল ঠিকানাটি চিনতে পারেন না। ফলে নকল ই–মেইল ঠিকানা কাজে লাগিয়ে সেই ব্যক্তির পরিচিত ব্যক্তিদের কাছে ই–মেইল পাঠিয়ে সহজেই প্রতারণা করা সম্ভব।
অনাকাঙ্ক্ষিত সাইটে নিবন্ধন
বিভিন্ন ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে শুধু ই–মেইল ঠিকানার প্রয়োজন হয়। আর তাই সাইবার অপরাধীরা বিভিন্ন স্ক্যাম ওয়েবসাইট, নিউজলেটার ও ডেটিং অ্যাপসে নিবন্ধনের জন্য অন্য ব্যক্তির ই–মেইল ঠিকানা ব্যবহার করে, যা অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতির তৈরি করে।
অর্থ হাতিয়ে নেওয়া
ই–মেইল ঠিকানা জানার পর সাইবার অপরাধীরা সেই অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড হ্যাক করে ব্যবহারকারীর অর্থ চুরিও করে থাকে। এর মাধ্যমে ব্যাংকের অনলাইন অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে অর্থ হাতিয়ে নেয় সাইবার অপরাধীরা। আবার অনেকের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে ক্রেডিট কার্ড যুক্ত করা থাকে। ফলে ই–মেইল ঠিকানার পাসওয়ার্ড হ্যাক করে ক্রেডিট কার্ড থেকেও অর্থ চুরি করে থাকে সাইবার অপরাধীরা।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট