শেষ হলো স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক-প্রথম আলো প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা

পুরস্কার হাতে স্কুল পর্যায়ের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা বিসিআইসি কলেজের বিসিআইসি টু স্লো দলের সদস্যরা। ঢাকা, ২ নভেম্বর। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
পুরস্কার হাতে স্কুল পর্যায়ের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা বিসিআইসি কলেজের বিসিআইসি টু স্লো দলের সদস্যরা। ঢাকা, ২ নভেম্বর। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

শেষ হলো স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক-প্রথম আলো আন্তস্কুল ও কলেজ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব। আজ শুক্রবার ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে ১২২টি দল এতে অংশ নেয়। মোট ৫৮২টি নিবন্ধিত দলের মধ্য থেকে অনলাইন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এই দলগুলোকে চূড়ান্ত পর্বের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল।

প্রতিযোগিতায় স্কুল পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা বিসিআইসি কলেজের দল বিসিআইসি টু স্লো। রানার্সআপ হয়েছে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের দল টিম সিসিএস। অন্যদিকে কলেজ পর্যায়ের চ্যাম্পিয়ন দল নটর ডেম কলেজের এনডিসি নাইট কিং। কলেজ ক্যাটাগরিতে রানার্সআপ দল ঢাকা কলেজের ডিসি সাবমিট ডিসি।

সকালে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রোগ্রামিংয়ের বিশ্ব আসর খ্যাত এসিএম আইসিপিসি (ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্ট) বাংলাদেশের একমাত্র বিচারক শাহরিয়ার মনজুর। এই সময় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় আনন্দের জন্য, ভালো লাগার জন্য প্রোগ্রামিং করতে হবে। আর তাতেই নিজের মধ্যে সমস্যা সমাধানের ও সমস্যাকে ভেঙে ভেঙে সমাধান করার দক্ষতা গড়ে উঠবে, যা পরবর্তী সময়ে তোমার ব্যক্তি ও কর্মজীবনকে সফল করবে।’

পুরস্কার হাতে কলেজ পর্যায়ের চ্যাম্পিয়ন নটর ডেম কলেজের এনডিসি নাইট কিংয়ের সদস্যরা। ঢাকা, ২ নভেম্বর। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
পুরস্কার হাতে কলেজ পর্যায়ের চ্যাম্পিয়ন নটর ডেম কলেজের এনডিসি নাইট কিংয়ের সদস্যরা। ঢাকা, ২ নভেম্বর। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেলেবেলায় খেলাধুলার নানা প্রতিযোগিতার আয়োজন দেখা গেলেও প্রোগ্রামিংয়ের মতো এই ধরনের মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতার কোনো বালাই ছিল না। তখন আসলে প্রোগ্রামিং নামে কোনো শব্দই ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘১৯৯৮ সালে দেশে সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রোগ্রামিং-বিষয়ক একটি জাতীয় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। মাত্র ৪৮টি দল তাতে অংশ নেয়। অথচ প্রতিযোগিতার জন্য এই ৪৮টি কম্পিউটার জোগাড় করতে আমাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল।’ এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শুধু স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে এত বেশিসংখ্যক প্রতিযোগীর অংশগ্রহণের বিষয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ‘আগামী দিনগুলোতে বিশ্বের চালিকাশক্তি হবে প্রযুক্তি। তাই পরিবর্তিত বিশ্বে সুযোগ নিতে হলে প্রোগ্রামিংয়ের মতো তথ্যপ্রযুক্তির বিষয়গুলোতে আমাদের যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসাসহ সবকিছুই নিয়ন্ত্রিত হবে এর মাধ্যমে। তাই এমন আয়োজন অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল।’

প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিজয় দেখতে চাই। এ ক্ষেত্রে প্রোগ্রামিং ও কোডিং বড় ভূমিকা রাখতে পারে। বিশ্বব্যাপী প্রোগ্রামিংসহ তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক চাহিদা আছে। নতুন দেশ ও সময়ের প্রয়োজনে এগুলো আত্মস্থ করা খুবই দরকার।’ তিনি আরও বলেন, ‘গণিত অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে আমরা ১৬ বছর ধরে শীর্ষে ওঠার চেষ্টা করছি। এখন ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ উপমহাদেশের দেশগুলো থেকে আমরা ভালো অবস্থানে আছি।’

অতিথিদের সঙ্গে প্রোগ্রামিংয়ের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাওয়া শিক্ষার্থীরা। ঢাকা, ২ নভেম্বর। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
অতিথিদের সঙ্গে প্রোগ্রামিংয়ের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাওয়া শিক্ষার্থীরা। ঢাকা, ২ নভেম্বর। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

পুরস্কার বিতরণী পর্বে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. বিলকিস জামাল ফেরদৌসী, দুরন্ত টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী অভিজিৎ চৌধুরী, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের হেড অব ব্র্যান্ড, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স ও মার্কেটিং বিটপী দাশ চৌধুরী, প্রথম আলোর যুব কর্মসূচির সমন্বয়ক মুনির হাসান।

দেশের স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে আগ্রহী করে তুলতে ও তাদের দক্ষতা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও প্রথম আলো যৌথভাবে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এই আয়োজনের সহযোগী ছিল দুরন্ত টেলিভিশন ও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক। প্রতিযোগিতার স্থানটিতে বিনা মূল্যের ওয়াইফাই ইন্টারনেট সেবার ব্যবস্থা করে এম্বার আইটি।