সিক্স-জি আনছে চীন

পঞ্চম প্রজন্মের টেলিকম পরিষেবা (ফাইভ-জি) নিয়ে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর গবেষণার মাঝেই বিশ্বকে চমকে দিল চীন। বিশ্বকে তারা জানল যে, সিক্স-জি চালু হবে। তাদের দাবি, তারাই বিশ্বের প্রথম সিক্স-জি (সিক্সথ জেনারেশন) চালু করবে। এ জন্য সব প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে চীন সরকার।

এখনই বিশ্বের ভোক্তারা ফাইভ-জি ফোন হাতে পাননি। কিন্তু চীন বিশ্বকে এর পরের ধাপের কথা জানাচ্ছে। আর তা হলো সিক্স-জি। চীনা সরকার আশা করছে দেশটিতে ২০৩০ সালের শুরুতেই সিক্স জি পরিষেবা চালু হবে।

চীনের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ফাইভ-জি প্রযুক্তির গবেষণা গ্রুপের প্রধান সু জিন বলেন, বেইজিং এ বছরই সিক্স-জি নিয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। মার্চে এ কাজ শুরু হয়। বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে চীন এ কাজ শুরু করেছে।

সু বলেন, সিক্স-জি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২০ সালে কাজ শুরু হবে। আর ২০৩০ সালের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে বড় পরিসরে সিক্স জি নেটওয়ার্ক চালুর পরিকল্পনা আছে চীন সরকারের।

গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশন অ্যাসোসিয়েশন (জিএসএমএ) এবং গ্লোবাল টিডি-এলটিই ইনিশিয়েটিভের (জিটিআই) এক যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে চীনের তিনটি মোবাইল সংস্থা সিক্স-জি নেটওয়ার্কের পরীক্ষা চালাচ্ছে। কয়েক বছরের এই পরিকল্পনায় রয়েছে সিক্স-জি প্রযুক্তির গবেষণা, উন্নয়ন এবং নেটওয়ার্কের কৌশল বের করা।

ফাইভ-জিতে তিনটি অ্যাপ্লিকেশন দৃশ্য রয়েছে: বড় ব্যান্ডউইথড, কম বিলম্ব এবং বিস্তৃত সংযোগ। সিক্স-জিতে তিনটি পরিস্থিতিতে ভালো অ্যাপ্লিকেশন অর্জন করতে পারে। সিক্স–জিতে ইন্টারনেটের গতি বিশ্বে ১ টিবিপি (টেরাবাইট) পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এর অর্থ হলো আপনি এক সেকেন্ডে ১০০ সিনেমা ডাউনলোড করতে পারবেন। তবে ইংল্যান্ডের সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ফাইভ-জিতে ইন্টারনেটের এমন সুবিধা ও গতি পাওয়া যায়। তবে তা শুরু ল্যাবরেটরিতে, সবখানে নয়।

বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, ২০১৯ সালে বিশ্বে ফাইভ-জির ব্যবহার শুরু হয়ে যাবে। পঞ্চম প্রজন্মের তারবিহীন যোগাযোগপদ্ধতি বা ফাইভ-জি চালুর ফলে ওয়্যারলেস শিল্পের ধারণাটা পরিষ্কার হবে। ধারণা মিলবে ‘ইন্টারনেট অব থিঙ্কস’ বা ‘সব যন্ত্রেই ইন্টারনেট’ সম্পর্কে। ইন্টারনেট অব থিঙ্কস বিষয়টিকে সংযোগ সুবিধার যন্ত্র যেমন গাড়ি, পোশাক বা গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত যন্ত্রগুলোর মধ্যে ইন্টারনেট আন্তসংযোগ হিসেবে বোঝানো হয়। প্রতিটি যন্ত্র যাতে তারবিহীন যোগাযোগপদ্ধতিতে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে এবং বুদ্ধিমান হয়ে উঠতে পারে, সেই নেটওয়ার্কই ‘ইন্টারনেট অব থিঙ্কস’। 

যদিও ২০৩০ সাল অনেকের কাছেই অনেক দূরের পথ বলে মনে করছেন। অনেকের কাছে মনে হচ্ছে, লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে না। তবে এ বছরের মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে ভ্যারিজনের নির্বাহী আন্দ্রে ক্যালদিনি ইঙ্গিত দেন, যখন ফোর-জির উন্নয়ন নিয়ে কাজ শুরু হয়, তখন কেউই স্ন্যাপচ্যাটের কথা ভাবেননি। কিন্তু এটা হয়েছে।

সু জিনের মতে, সিক্স-জিতে ফাইভ-জির তুলনায় যোগাযোগ আরও কার্যকরভাবে করা যাবে।

চীনে নতুন সিক্স-জি নিয়ে গবেষণা অন্য দেশের চেয়ে তাদের প্রযুক্তির অগ্রগতিকেই নির্দেশ করে। ডেলোয়েটের মতে, ফাইভ-জি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে আছে চীন। তথ্যসূত্র: টেক ইন এশিয়া