আপনার মুঠোফোন কি বৈধ?

মুঠোফোনের অবৈধ আমদানি ও বিক্রি ঠেকাতে বাংলাদেশ মুঠোফোন আমদানিকারক সমিতির (বিএমপিআইএ) সহায়তায় তথ্যভান্ডার বা ডেটাবেইস চালু করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এ তথ্যভান্ডার থেকে গ্রাহকেরা সহজেই মুঠোফোন বৈধ পথে আমদানি বা দেশে উৎপাদিত কি না, তা যাচাই করে নিতে পারবেন। ২২ জানুয়ারি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার তথ্যভান্ডারটি উদ্বোধন করেন।

তথ্য বলতে মূলত মুঠোফোনের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইক্যুইপমেন্ট আইডেনটিটি (আইএমইআই) নম্বরকে বোঝানো হয়েছে। এখন থেকে বৈধ আমদানিকারক ও দেশীয় উৎপাদকেরা বাজারে ছাড়া মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর বিটিআরসির তথ্যভান্ডারে রাখবেন। কোনো গ্রাহক কেনার আগে মুঠোফোনটি বৈধ কি না, তা যাচাই করতে বিটিআরসির নির্ধারিত নম্বরে খুদে বার্তা পাঠাবেন। ফিরতি খুদে বার্তায় তিনি জানতে পারবেন, মুঠোফোনটি বৈধ কি না।

এর বাইরেও বিটিআরসি দেশের সব মুঠোফোনের একটি নিবন্ধনব্যবস্থা তৈরির কাজ করছে, যা চালু হলে দেশে অবৈধভাবে আসা মুঠোফোন কোনো মোবাইল সংযোগদাতার নেটওয়ার্কে সচল করা যাবে না। এ ব্যবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার (এনইআইআর)। যেখানে নেটওয়ার্কে সচল থাকা মুঠোফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়ে যাবে। পাশাপাশি বৈধ মুঠোফোন নিবন্ধন করা যাবে। এটি চালু হলে অবৈধভাবে আনা মুঠোফোনগুলো দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে চালানো যাবে না। এতে অবৈধ মুঠোফোনের বাজার বন্ধ হবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অপরাধ তদন্তকাজ সহজ হবে বলে আশা করছে বিটিআরসি। 

মুঠোফোন যাচাই যেভাবে

বিটিআরসি জানিয়েছে, নতুন মুঠোফোন কেনার আগে সেটির মোড়কের গায়ে লেখা ১৫ সংখ্যার আইএমইআই নম্বরটি দেখে নিতে হবে। এ ছাড়া মুঠোফোনের কি–বোর্ডে *#০৬# চাপলেও আইএমইআই নম্বর ভেসে উঠবে। এরপর মুঠোফোনের বার্তা বা মেসেজ অপশনে গিয়ে বড় অক্ষরে KYD লিখে স্পেস দিয়ে ১৫ সংখ্যার আইএমইআই নম্বরটি লিখে ১৬০০২ নম্বরে খুদে বার্তা পাঠাতে হবে। ফিরতি খুদে বার্তায় গ্রাহক বিটিআরসির তথ্যভান্ডারে ওই আইএমইআই নম্বরটি আছে কি না, তা জানতে পারবেন। 

সব মুঠোফোনে আছে কি?

বিটিআরসি বলছে, ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বৈধভাবে আমদানি বা দেশে উৎপাদিত মুঠোফোনের বেশির ভাগ আইএমইআই নম্বর তথ্যভান্ডারে রয়েছে। এর বাইরে কোনো মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর আপাতত পাওয়া যাবে না। তবে এখন থেকে যত মুঠোফোন বৈধভাবে আমদানি বা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হবে, তা বিটিআরসির তথ্যভান্ডারে সংরক্ষণ করা হবে। 

কী সুবিধা?

গ্রাহকেরা বৈধ পথে আমদানি করা মুঠোফোন কিনতে পারবেন। বিটিআরসি বলছে, এতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। ভবিষ্যতে চুরি যাওয়া মুঠোফোন অচল করা যাবে। অপরাধ তদন্ত সহজ হবে। 

নিবন্ধন চালু কবে

বিটিআরসি জানিয়েছে, নিবন্ধনব্যবস্থা চালু নিয়ে এখন অপারেটর ও অন্যান্য অংশীজনের মতামত নেওয়া হচ্ছে। এরপর তা চালু হবে। চালু হলে গ্রাহককে গিয়ে মুঠোফোন নিবন্ধন করাতে হবে না। নেটওয়ার্কে যুক্ত ফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত সিমের মাধ্যমে নিবন্ধন হবে। ব্যবহৃত ফোন বিক্রি বা অন্যকে দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে। 

বিদেশ থেকে আনলে

এখন যাঁরা বিদেশে গিয়ে নিজের অথবা স্বজনের জন্য মুঠোফোন কিনে আনেন, তাঁরাও নিবন্ধন করতে পারবেন। বিটিআরসির মুঠোফোন নিবন্ধনব্যবস্থা চালু হলে বিমানবন্দরে নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হবে। এখনকার নীতিমালা অনুযায়ী, শুল্ক ছাড়া দুটি এবং শুল্ক দিয়ে আরও বেশি মুঠোফোন বিদেশ থেকে আনা যায়। এনইআইআর চালু হলে সেগুলো নিবন্ধন করাতে হবে বিমানবন্দরে।