দেশে যত ধরনের ক্রেডিট কার্ড

ভিসা, মাস্টার কার্ড ইত্যাদি ক্রেডিট কার্ড প্রচলিত আছে বাংলাদেশে
ভিসা, মাস্টার কার্ড ইত্যাদি ক্রেডিট কার্ড প্রচলিত আছে বাংলাদেশে

প্রতি মাসে আপনার আয় ৩০ হাজার টাকা হলেই ব্যাংক আপনাকে টাকা ধার দেবে। সে টাকা আপনি ধীরে ধীরে খরচ খরতে পারবেন—সেটা নগদে উত্তোলন করে হোক বা কেনাকাটা করে। হতে পারে দেশে বা বিদেশে। ৪৫ দিনের মধ্যে সে ধার শোধ করলে কোনো সুদও গুনতে হবে না। এ সুবিধা পেতে কোনো জমি বন্ধক রাখার প্রয়োজন হবে না। ক্রেডিট কার্ডেই মিলবে এই সুবিধা।

তবে সুদ না গুনতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের হতে হবে অনেক হিসেবি, না হলে ব্যাংকের চড়া সুদ গুনতে হবে। সময়মতো সে ঋণ শোধ না হলে আইনি ঝামেলাও পোহাতে হতে পারে। বাংলাদেশের প্রায় ১২ লাখ গ্রাহকের কাছে ক্রেডিট কার্ড এখন নিত্যসঙ্গী।

আর এ জন্যই ব্যাংকগুলো এখন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কার্ড সেবা নিয়ে আসছে। দেশে ক্রেডিট কার্ড জনপ্রিয় হয় দ্য সিটি ব্যাংকের হাত ধরে। ব্যাংকটি ২০০৯ সাল থেকে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড এ দেশে জনপ্রিয় করে ক্রেডিট কার্ডকে গ্রাহকের আস্থায় নিয়ে এসেছে। ব্যাংকটি অ্যামেক্স কার্ডের এ দেশের একমাত্র প্রতিনিধিও। তাই ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের বেশির ভাগই তাদের গ্রাহক।

বর্তমানে দেশে ৪০টির মতো ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় সবাই ভিসা ও মাস্টারকার্ড ব্র্যান্ডের মাধ্যমে কার্ড সেবা দিচ্ছে। তবে এর বাইরে কয়েকটি ব্যাংক কার্ড সেবাকে অভিনবত্ব দিতে অন্য ব্র্যান্ডের কার্ডও এনেছে। সিটি ব্যাংক এমেক্স কার্ড, প্রাইম ব্যাংক জেবিসি কার্ড, ইস্টার্ন ব্যাংক ডিনার্স ক্লাব কার্ড, ডাচ–বাংলা ব্যাংক নেক্সাস পে কার্ড ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ইউনিয়ন পে ইন্টারন্যাশনালের সেবা দিচ্ছে।

এসব ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা যায় বিশ্বের অনেকে দেশে। টাকার পাশাপাশি ডলারও ধার করে ব্যবহার করা যায়। হোটেল বুকিং, বিমান ভাড়া, রেস্টুরেন্ট ও কেনাকাটায় মিলে নানা ছাড় ও পয়েন্ট জেতার সুযোগ।

বাংলাদেশে ১৯৯৬ সালে স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করে। ওই সময়ে তৎকালীন বণিকবাংলাদেশ (বর্তমানে লংকাবাংলা) ও ন্যাশনাল ব্যাংকও ক্রেডিট কার্ড চালু করে। ক্রেডিট কার্ড সেবায় সিটি ব্যাংকের পরে রয়েছে ইস্টার্ন, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ও ব্র্যাক ব্যাংক।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের কার্ড বিভাগের প্রধান আনোয়ার হোসেন বলেন, ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক দিন দিন বাড়ছে। তবে এ বাজার আরও অনেক বড় হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ জন্য প্রয়োজন সচেতনতা ও নিয়ম–কানুন শিথিল করা। এসব কার্ড ব্যবহার করা যায় সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা সাড়ে ১০ হাজার এটিএমে। এ ছাড়া ৪৫ হাজার পয়েন্ট অব সেলসে এসব কার্ড ব্যবহার করা যায়। ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকেরা প্রতি মাসে ১ হাজার কোটি টাকার লেনদনে করেন। আর ৭০ শতাংশ গ্রাহকই নিয়মিত কিস্তি শোধ করেন, এ কারণে তাঁদের কোনো সুদ গুনতে হয় না।