ইনভার্টার নাকি নন-ইনভার্টার এসি

পছন্দ ও সুবিধা অনুযায়ী বাসার জন্য নিতে পারেন ইনভার্টার বা নন–ইভার্টার প্রযুক্তির এসি। ছবি: স্মার্ট সময়
পছন্দ ও সুবিধা অনুযায়ী বাসার জন্য নিতে পারেন ইনভার্টার বা নন–ইভার্টার প্রযুক্তির এসি। ছবি: স্মার্ট সময়

একটু গরম বেশি পড়লেই মনে হয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসি (এয়ারকন্ডিশনার) কেনার কথা। বাজারে এখন ইনভার্টার ও নন–ইভার্টার প্রযুক্তির এসি পাবেন।

ইনভার্টার প্রযুক্তিতে এসি প্রথমে পূর্ণ শক্তিতে চালু হয়। পরে ঘরের আরামদায়ক তাপমাত্রা ঠিক রেখে এসিটি শক্তি খরচ কমিয়ে নিয়ে আসে। এভাবে কম শক্তিতে চলার কারণে কম বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় এবং বিদ্যুৎ খরচ কমে আসে।

অন্যদিকে নন-ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে শুধু অন-অফ হওয়ার মাধ্যমে। অর্থাৎ এসি পূর্ণ শক্তিতে চালু হওয়ার পর ঘরের তাপমাত্রা আরামদায়ক অবস্থায় এলে এসির কমপ্রেসর বন্ধ হয়ে যায়। যখন ঘরের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যায়, তখন আবার চালু হয়। এভাবে বারবার এসি চালু ও বন্ধ হওয়ার কারণে এসি বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, যার কারণে বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়।

ইনভার্টার এসির বড় সুবিধা হচ্ছে ইনভার্টার এসির কমপ্রেসর মোটরটি প্রয়োজনমতো নিজস্ব চলার গতি পরিবর্তন করতে পারে। ইনভার্টার এসিতে এমন একটি সেন্সর থাকে, যা ঘরের তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে কমপ্রেসর পুরোপুরি বন্ধ না করে, মোটরটির চলার গতি কমিয়ে দেয়। এর কারণেই বিদ্যুৎ খরচ কমে আসে, যা পরিবেশবান্ধব। কিন্তু অন্যদিকে সাধারণ এসির কমপ্রেসর বারবার চালু-বন্ধ হয়, তাই অনেক বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়।

গত সপ্তাহে এসি কিনেছেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জাকিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, ‘বাজারে বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের এসি দেখেছি। বাসার কাছাকাছি দোকান থেকে দেড় টনের এসি কিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দেড় টন না পেয়ে দুই টনের একটি এসি কিনেছি। আর তা কিস্তি সুবিধায়। বাজারে স্যামসাং, ওয়ার্লপুল, শার্প, সিঙ্গার, প্যানাসনিক, ওয়ালটন, এলজি, জেনারেল, ট্র্যান্সটেক ইত্যাদি ব্র্যান্ডের মধ্যে বাছাই করে পছন্দ অনুযায়ী এসি কিনেছিবিদ্যুৎ খরচ কমানোর আশায় ইনভার্টার এসি কিনেছি।’

খিলগাঁও এলাকার রফিকুল ইসলাম সম্প্রতি একটি ইনভার্টার ও একটি নন–ইনভার্টার এসি কিনেছেন। তিনি বলেন, ‘শুনেছি ইনভার্টারে বিল কম আসে। তাই দাম বেশি হলেও ইনভার্টার এসি কিনেছি। কিন্তু নন–ইনভার্টারে টেকসই ও ঠান্ডা হয় বেশি। তাই দুই রকমই কিনেছি। একটি দেড় টন ও একটি দুই টনের এসি।

স্যামসাং বাংলাদেশের পণ্য ব্যবস্থাপক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সব সময় চেষ্টা করি আমাদের পণ্যে নতুনত্ব নিয়ে আসার, যেন ক্রেতারা ভিন্নমাত্রার এবং সর্বোৎকৃষ্ট হোম অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবহারের অভিজ্ঞতা নিতে পারেন। প্রতিবছর বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে গরমের সময় প্রচণ্ড গরম সহ্য করতে হয় আমাদের। এই গরম থেকে রেহাই পেতেই এসি ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে সবাই। আমরা চেষ্টা করি, সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে অত্যাধুনিক ফিচারসমৃদ্ধ ইনভার্টার ও নন-ইনভার্টার এসি ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে। স্যামসাংয়ের রয়েছে ডিজিটাল ইনভার্টারের ৮ পোল প্রযুক্তি, যার ফলে তা ঘর দ্রুত ঠান্ডা করার পাশাপাশি কম বিদ্যুৎ খরচ করে। এসি কেনার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় তা হচ্ছে বিক্রয়–পরবর্তী সেবা এবং ফ্রি ইন্সটলেশন সুবিধা, যেগুলো পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত করে স্যামসাং। স্যামসাং এসি কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতারা আকর্ষণীয় সব অফার গ্রহণ করার পাশাপাশি সুবিধাজনক পেমেন্ট অপশন ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে থাকেন।’

স্যামসাং বাংলাদেশ সূত্রে জানা যায়, ১ থেকে ২ টন পর্যন্ত স্যামসাং ইনভার্টার এসি কেনা যাবে ৬৩ হাজার ৪০০ থেকে ৯৯ হাজার ৯০০ টাকায়। একই ধারার ৫৩ হাজার ৯০০ থেকে ৮১ হাজার ৯০০ টাকায় কেনা যাবে স্যামসাংয়ের নন-ইনভার্টার এসি।

যেকোনো ব্র্যান্ডর এসির বিনিময় সুবিধা দিচ্ছে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস বাংলাদেশ। এ অফারে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এই সুবিধায় নিয়মিত ক্যাশব্যাক সুবিধা প্রযোজ্য নয়।

স্যামসাং ছাড়াও দেশে ইনভার্টার এসি রয়েছে ওয়ালটনের। বাজারে রয়েছে ১ টন, দেড় টন ও ২ টনের মোট ১৭ মডেলের ওয়ালটন এসি। দেড় ও ২ টনের ভেনচুরি ও রিভারাইন সিরিজে যুক্ত হয়েছে এনার্জি সেভিং ইনভার্টার, আয়োনাইজার ও আইওটি স্মার্ট প্রযুক্তির নতুন মডেলের এসি।

দেশের বাজার রয়েছে ওয়ার্লপুলের ইনভার্টার এসি। এতে আছে অত্যাধুনিক আমেরিকান প্রযুক্তির সিক্সথ সেন্স টেকনোলজি, যা আপনাকে দেবে সহনীয় তাপমাত্রা। এর ফুল এইচডি ফিল্টার নিশ্চিত করে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বিশুদ্ধ বাতাস। বাজারে ট্রান্সটেকেরও রয়েছে এই দুই ধরনের এসি। এ ছাড়া বাজারে থাকা অন্যান্য ব্র্যান্ডের এসিগুলো বাজারে পাবেন।