ব্লুটুথ ব্যবহারের বিপদ

আধুনিক স্মার্টফোনে ব্লুটুথ প্রযুক্তি সহজলভ্য। অনেকেই সারাক্ষণ ব্লুটুথ চালু রাখেন। কিন্তু সারাক্ষণ ব্লুটুথ চালু রাখলে নানা রকম বিপদের আশঙ্কা থাকে। ব্যক্তিগত তথ্য চুরি থেকে শুরু করে ডিভাইসের দখল নেওয়ার মতো কাজ করে বসতে পারে দুর্বৃত্তরা। তাই ব্লুটুথ ব্যবহারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত ডেফ কন হ্যাকার সম্মেলনে ব্লুটুথ ব্যবহারের সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরা হয়।

প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেকেই ব্লুটুথ ব্যবহার করছেন। কিন্তু আসলে ব্লুটুথ ব্যবহার করা ঠিক নয়। এখন ফোন, স্মার্ট স্পিকার, গাড়ি, ভাইব্রেটর, টোস্টারের মতো যন্ত্রে ব্লুটুথ সুবিধা থাকে। নিরাপত্তা ও প্রাইভেসি বিবেচনা করলে ব্লুটুথে ব্যবহার বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে।

এ বছরের ডেফ কন সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা ব্লুটুথ সুবিধাযুক্ত ডিজিটাল স্পিকারের দুর্বলতা তুলে ধরেন। ব্লুটুথ প্রযুক্তির এসব স্পিকার কীভাবে হ্যাক করা যায়, সে পথও দেখান তারা। চালু থাকা ব্লুটুথ স্পিকার হ্যাক করে তার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেন হ্যাকাররা। এতে মারাত্মক শব্দ সৃষ্টি করে কানের ক্ষতি করা যায়। এ ছাড়া বাজে শব্দ চালু করে দেওয়া সম্ভব।

এ ছাড়া ব্লুটুথের মাধ্যমে পাঠানো তথ্য বদলে দেওয়া যায় বলে দাবি করেন গবেষকেরা। তারা বলেন, ব্লুটুথের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে এক ডিভাইস থেকে আরেক ডিভাইসে তথ্য পাঠানোর সময় তা বদলে ফেলা যায়।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন অনেক দোকানে ব্লুটুথ বেকন ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ক্রেতার অবস্থানের ওপর নিখুঁত নজরদারি করা হয়। অর্থাৎ, ক্রেতা কী কী পণ্য দেখছেন, কী কী কিনছেন, সেসব তথ্য সহজে সংগ্রহ করা হয়। এরপর তা বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে বিক্রি করা হয়।

গবেষকেরা বলেন, স্মার্টফোনে সারাক্ষণ ব্লুটুথ চালু রাখলে সম্ভাব্য হ্যাকিংয়ের ঝুঁকির পাশাপাশি তা অপব্যবহারের আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ব্লুটুথ যতটা সম্ভব বন্ধ রাখতে হবে। এ ছাড়া কোনো ডিভাইস ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলে তার সঙ্গে যুক্ত হওয়া ঠিক হবে না। প্রয়োজন শেষ হলে ব্লুটুথ অপশন বন্ধ রাখতে হবে। যাঁরা ব্লুটুথ স্পিকার বা হেডফোন ব্যবহার করেন, তাঁদের জন্য তারযুক্ত হেডফোন ব্যবহার করা ভালো হবে।