ক্রেডিট কার্ডের কড়াকড়ি শিথিল হবে

ক্রেডিট কার্ডের লোগো। ছবি: প্রথম আলো
ক্রেডিট কার্ডের লোগো। ছবি: প্রথম আলো

সম্প্রতি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়াকড়ির কারণে ফ্রিল্যান্সার ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যুক্ত অনেকেই বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তবে শিগগির এ কড়াকড়ি শিথিল করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ।

এক ফেসবুক পোস্টে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নজরে এসেছে। তিনি এটি দ্রুত সমাধান করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে নির্দেশনা দিয়েছেন। ফ্রিল্যান্সারদের কল্যাণে এবং আইটি সেক্টরের প্রসারে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এ কড়াকড়ি শিথিল করা হবে।

১৯ নভেম্বর ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ‘অবৈধ বিদেশি লেনদেন’ বন্ধ করতে গিয়ে পুরো লেনদেনেই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা।

ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিদেশি লেনদেনের ক্ষেত্রে হঠাৎ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের এ কড়াকড়ি আরোপের পেছনে দুটি ঘটনা রয়েছে। প্রথমত, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রায় রাইড শেয়ারিং সেবা উবারের যে সেবামাশুল পরিশোধ করা হয়, তা সরাসরি চলে যায় নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে উবারের ব্যাংক হিসাবে। হিসাবটি মার্কিন ডলারে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ক্রেডিট কার্ডে বিদেশি মুদ্রায় বিল পরিশোধের কারণে এ দেশে দেওয়া উবারের সেবার মাশুল চলে যাচ্ছে সরাসরি বিদেশে।

সম্প্রতি এ দেশের বেসরকারি খাতের একটি ব্যাংকের কয়েকজন গ্রাহক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিদেশের স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ার কেনাবেচার ব্যবসা করেছেন। আবার কেউ কেউ লটারিও কিনছেন। এর মাধ্যমে দেশের অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এসব বিষয় জানতে পেরে তড়িঘড়ি করে গত বৃহস্পতিবার ক্রেডিট কার্ডের বিদেশি লেনদেনে কড়াকড়ি আরোপ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্ট পর্যন্ত দেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ লাখ ৩ হাজার ৪২৭ জন। জুনে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে জুন মাসে ২০ লাখ ৮৫ হাজারবার কার্ড ব্যবহৃত হয়েছে। এপ্রিল ও মে মাসে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ১০৮ ও ১ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) নেতারা সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেন। এক বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি বলেছে, সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রতিবছর ফেসবুক, গুগলসহ অন্যান্য বিদেশি অনলাইনে ২ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে।

সম্প্রতি বেশ কিছু ব্যাংক কার্ড দিয়ে এ অর্থ পরিশোধ সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে। আবার ট্রাভেল কোটায় বরাদ্দ ডলার থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং খাতে মূল্য পরিশোধের সুযোগও থাকছে না। এতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।