এক দশকে যেভাবে ক্যারিয়ার গড়বেন

আগামী এক দশকে ফ্রিল্যান্সিং গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। ছবি: রয়টার্স
আগামী এক দশকে ফ্রিল্যান্সিং গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। ছবি: রয়টার্স

এখনকার পেশাদার কর্মীদের পছন্দ করে নেওয়ার মতো অনেক কাজ রয়েছে। এরপরও ক্যারিয়ার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে তাঁদের আরও বেশি সক্রিয় থাকতে হবে এবং ২৪ ঘণ্টা সচেতন থাকতে হবে। আগামী এক দশকে ক্যারিয়ার গঠনের ক্ষেত্রে আরও তিন ধরনের ঝোঁক দেখা যাবে। নিজেকে এসব প্রবণতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারলে ক্যারিয়ারে উন্নতি করা সহজ হবে।

জেনে নিন আগামী দশকের তিন প্রবণতা সম্পর্কে:

প্রত্যেকেই উদ্যোক্তা: ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ বাড়ছে। ২০১৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তিনজনে অন্তত একজন ফ্রিল্যান্সিং কাজে যুক্ত হয়েছে। ২০১৪ সালে যেখানে পূর্ণকালীন ফ্রিল্যান্স কর্মীর সংখ্যা ছিল ১৭ শতাংশ সেখানে ২০১৮ সালে এসে তা দাঁড়ায় ২৮ শতাংশে। এই ঝোঁক আগামী দশকজুড়ে চলতে থাকবে। এ খাতে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান তাদের নির্দিষ্ট কাজের জন্য দক্ষ কর্মী নিয়োগের সুযোগ পান। এতে প্রচলিত কর্মী নিয়োগের চেয় খরচ কমে। প্রচলিত কর্মীদের তুলনায় ফ্রিল্যান্স কর্মীরা বেশি খুশি থাকেন। অবশ্য যাঁরা প্রচলিত চাকরিতে যুক্ত থাকেন তাঁদের ক্ষেত্রেও ফ্রিল্যান্সিংয়ে যুক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। তাঁরা নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করতে পারেন। নিজের নেটওয়ার্কিং কাজে লাগিয়ে নিজের ব্যবসা বড় করতে হবে। একটি প্রচলিত ব্যবসার মতোই নিজের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।

নিয়মিত দক্ষতা বাড়ানো: এখন আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স, রোবোটিকস ও বিগ ডেটার মতো প্রযুক্তিতে দক্ষ কর্মীদের চাহিদা রয়েছে। আগামী এক দশকের মধ্যে আরও নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এসে নতুন চাকরি সৃষ্টি করবে এবং প্রচলিত অনেক চাকরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এখনকার পেশাদার কর্মীদের নিয়মিত তাই ক্যারিয়ার পরিবর্তনের জন্য সক্রিয়ভাবে চিন্তা করতে হবে। চাকরি খোঁজার চেয়ে নতুন দক্ষতা বাড়াতে পারলে চাকরিদাতারা কর্মীকে খুঁজে নেবে। এখন যে চাকরির চাহিদা সবচেয়ে বেশি তা হয়তো কিছুদিন পর বদলে যাবে। একই সঙ্গে বদলে যাবে এসব চাকরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দক্ষতা। তাই এখনকার চাকরির যে দক্ষতা চাওয়া হচ্ছে তার তুলনায় ভবিষ্যতে কী কী দক্ষতা চাওয়া হতে পারে, সেভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। নিজেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণের মধ্যে দক্ষ করে তুলতে হবে। এ জন্য নিজের পেশাদার কাজের উন্নয়ন পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। নিজের ক্যারিয়ারের বাইরে নিজের ভালো লাগে এমন কাজে যুক্ত হয়ে নতুন কিছু শিখতে হবে, যাতে তা দক্ষতা বাড়াতে কাজে লাগে।

অবসরের বয়সসীমা নেই: গড়ে ৭০ বছরের জীবনে মানুষ সবচেয়ে বেশি আয় করে ৪০ ও ৫০ বছর বয়সের দিকে। শুধু আয় করলেই হবে না, নিজের অর্জিত অর্থের ঠিকমতো ব্যবস্থাপনাও জানতে হবে। কারণ, বয়স বাড়লে আয় কমে যেতে শুরু করবে। ৬৭ শতাংশ বয়স্ক লোকজন কোনো কাজ করেন না বা খুব অল্প সময় কাজ করেন। আগামী এক দশকে আরও দীর্ঘসময় কাজের অভ্যাস গড়ে তুলুন। নতুন ক্যারিয়ার হিসেবে বাড়তি সময় উপভোগ করুন। নিজের অর্থ বা সম্পদ যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বেকার থাকার দিনগুলোকে কাজে লাগাতে পারেন। এ জন্য যথাযথ দক্ষতা অর্জন ও উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। এতে ক্যারিয়ার দীর্ঘায়িত হবে। নিজেকে রোমাঞ্চকর কাজের সঙ্গে যুক্ত রাখলে বসে বসে অর্থ খরচ ঠেকানোর পাশাপাশি নিজেকে সক্রিয় রাখা যাবে।