এসইও শিখুন: পর্ব ২

>

আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের (এসইও) কাজ বেশ জনপ্রিয়। এসইও মূলত সার্চ ইঞ্জিনের কিছু সুনিয়ন্ত্রিত ও পরিকল্পিত নিয়ম/পদ্ধতি বা মেথড। ‘এসইও শিখুন’ নামে ধারাবাহিকের আজ দ্বিতীয় পর্ব। প্রতি শুক্রবার প্রকাশিত হচ্ছে এসইওবিষয়ক পোস্ট। 

কোন সার্চ রেজাল্টগুলো ‘অরগানিক’?

ইতিমধ্যে বলা হয়েছে, অর্গানিক সার্চ রেজাল্টগুলো কোনো পেড বা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নয় কেবল এসইও–এর মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজে আসে। অর্গানিক রেজাল্টগুলো হলো SERPs-এ দেখানো ‘১০টি ব্লু লিংক’ এবং এর ওপরে, নিচে ও পাশের রেজাল্টগুলোতে অ্যাড লেবেল দেওয়া থাকে। যাতে একটি পেজে থাকা পেড ও অরগানিক রেজাল্ট সহজেই বোঝা যায়। বর্তমানে আমরা যে ধরনের সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজ দেখি, অতীতে এমন ছিল না।

বর্তমানে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজকে বলা হয় SERPs এবং এখন অ্যাডভারটাইজিংয়ের পাশাপাশি অরগানিক রেজাল্ট অনেক বেশি সমৃদ্ধ। SERP-এ অরগানিক রেজাল্ট ফিচার যেমন:

  • ফিচার স্নিপেট,
  • অ্যান্সার বক্স,
  • পিপল ‍অলসো আস্ক/সার্চ বক্স/সাজেশন,
  • ইমেজ ক্যারোজেল,
  • ভিডিও ক্যারোজেল,
  • নিউজ ইত্যাদি।

নতুন SERP ইউজারদের সার্চের ওপর ভিত্তি করে আরও নতুন নতুন ফিচার নিয়ে আসছে।

উদাহরণস্বরূপ: আপনি যদি সার্চ করেন ‘Dhaka Weather’ তাহলে আপনি দেখতে পাবেন কোনো লিংকের পরিবর্তে ঢাকার জলবায়ু পূর্বাভাসের একটি চিত্র। এবং আপনি যদি সার্চ করেন ‘Dhaka Pizza’ তখন দেখবেন কিছু লোকাল পিৎজার অবস্থান গুগল ম্যাপে, কিছু লিংক এবং ক্যারোজেল যেটা শুধু ঢাকা শহরের।

আপনাকে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে যে, সার্চ ইঞ্জিনের আয়ের উৎস শুধু অ্যাডভারটাইজ বা বিজ্ঞাপন থেকে আসে। তাদের লক্ষ্য হলো ইউজারদের সঠিক তথ্যের সন্ধান দেওয়া যাতে ইউজাররা SERPs-এ পুনরায় আসে এবং দীর্ঘ সময় ধরে থাকে।

SERPs–এর কিছু ফিচার অরগানিক এবং তা এসইওয়ের মাধ্যমে প্রভাবিত করা যায়। বিজ্ঞাপনগুলোর ওপর এসইওয়ের কোনো প্রভাব নেই। এমন কিছু ফিচার আছে যেগুলোও অর্গানিক অ্যাডভারটাইজ–এ দুই-এর কোনোটাই প্রভাবিত করতে পারে না। যেমন উইকিপিডিয়া, আইএমডিবি, ওয়েবএমডি ইত্যাদি সাইটগুলো থেকে আসা সার্চ রেজাল্ট।

এসইও কেন দরকার বা গুরুত্বপূর্ণ?

এসইও (SEO) অনুশীলনের/প্রয়োগের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের গুণগত মান ও ইউজার বৃদ্ধি পেয়ে থাকে, পাশাপাশি সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্ট পেজে অরগানিক ফলের মাধ্যমে কোম্পানির ব্র্যান্ডিং হয়ে থাকে।

ওয়েবসাইটে ট্রাফিক/ইউজার জেনারেট করার জন্য যদিও পেইড অ্যাডভারটাইজিং, সোশ্যাল মিডিয়া ‍এবং অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো রয়েছে। তারপরও বেশির ভাগ ইউজার ওয়েবসাইটে আসে সার্চ ইঞ্জিন থেকে।

সার্চ ইঞ্জিন তার রেজাল্ট পেজে বিভিন্ন ডিজিটাল ফিচার ও বিশ্বাসযোগ্য তথ্যবহুল উত্তর দেখায়, যা পেইড অ্যাডভারটাইজিংয়ের তুলনায় অধিক পরিমাণ ক্লিক জেনারেট করে। উদাহরণস্বরূপ, শুধু যুক্তরাষ্ট্রে সব ক্লিকের মাত্র ২.৮% আসে টাকা দিয়ে দেওয়া বিজ্ঞাপন বা পেইড অ্যাডভারটাইজিং থেকে।

এসইও একমাত্র অনলাইন মার্কেটিং চ্যানেল যেখানে সঠিকভাবে সেটআপ করা কাজ থেকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আয় হতে বা রেভিনিউ জেনারেট হতে থাকে। আপনি যদি সাইটে তথ্যসমৃদ্ধ ও ব্যবহারবান্ধব কনটেন্ট দিতে পারেন এবং তা সার্চ ইঞ্জিনে সঠিক কি-ওয়ার্ডে র‍্যাঙ্কিং করে। তবে আপনার সাইটে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ক্রমাগত ইউজার আসতে থাকবে। পেড অ্যাডভারটাইজিংয়ে প্রচুর অর্থ খরচ করেও আপনি যা পাবেন না।

বর্তমানে সার্চ ইঞ্জিনগুলো যদিও অনেক স্মার্ট, কিন্তু সঠিক সার্চ কনটেন্ট দেখানোর জন্য তারপরও আপনার সহযোগিতা দরকার। অপটিমাইজ করার মাধ্যমে আপনার সাইট সার্চ ইঞ্জিনকে তথ্যসমৃদ্ধ ও ইউজার ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট দেবে। যাতে সার্চ ইঞ্জিন আপনার সাইটের কনটেন্ট ক্রলিং, ইনডেক্সিং এবং র‍্যাঙ্কিং করার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজে দেখাতে পারে।

হোয়াইট হ্যাট বনাম ব্ল্যাক হ্যাট এসইও

‘হোয়াইট হ্যাট এসইও’ বলতে এসইও-এর সেই সব কৌশল, বেস্ট প্র্যাকটিস এবং ‍স্ট্রাটেজি বোঝায়, যা সার্চ ইঞ্জিনের সব গাইডলাইন অনুসরণ করে করা হয়। এটার প্রধান ফোকাস মূলত ইউজারদের ওপর।

‘ব্ল্যাক হ্যাট এসইও’ বলতে সেই সব কৌশল এবং ‍স্ট্রাটেজি, যা স্প্যামিংয়ের মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনকে বোকা বানানোর চেষ্টা করা হয়। যার মাধ্যমে খুব কম সময়ের মধ্যে একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে ভালো র‍্যাঙ্কিং-এ দেখানো যায়। কিন্তু এর ফলে সার্চ ইঞ্জিন সেই সাইটটিকে পেনাল্টি বা ডিইনডেক্সিং করে দিতে পারে। ‘ব্ল্যাক হ্যাট এসইও’তে সার্চ ইঞ্জিনের কোনো গাইডলাইন অনুসরণ করা হয় না।

পেনাল্টি পাওয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে কোনো ব্যবসায় সফল হওয়া যাবে না। সার্চ ইঞ্জিনের পেনাল্টি পাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে এসইও প্রফেশনাল, ‍এজেন্সি বাছাই করতে ভুল করা ও সার্চ ইঞ্জিনের গাইডলাইন অনুসরণ না করা।