মোবাইলে করোনাভাইরাস অ্যাপ নেই তো?

করোনাভাইরাস অ্যাপের নামে তথ্য চুরি করছে সাইবার দুর্বৃত্তরা। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাস অ্যাপের নামে তথ্য চুরি করছে সাইবার দুর্বৃত্তরা। ছবি: রয়টার্স

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনলাইনজুড়ে ‘করোনাভাইরাস অ্যাপ’ নামে নানা ক্ষতিকর অ্যাপ ছেড়েছে সাইবার দুর্বৃত্তরা। তাই আপনার স্মার্টফোন করোনাভাইরাস–সংক্রান্ত অ্যাপ ডাউনলোডের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। ইসরায়েলভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান চেক পয়েন্ট এ–জাতীয় বেশ কিছু ক্ষতিকর প্রোগ্রাম শনাক্ত করেছে।

চেক পয়েন্টের বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, করোনাভাইরাসের অ্যাপের ছদ্মবেশে ছাড়া এসব ক্ষতিকর প্রোগ্রাম মূলত অ্যান্ড্রয়েড ফোনের নিয়ন্ত্রণ হাতিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে তৈরি করা।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস নিয়ে অনেকেই উদ্বেগে রয়েছে। তাঁরা অনলাইনে এ নিয়ে নানা তথ্য খুঁজছেন। বিভিন্ন অ্যাপে এ–সংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার কথা বলা হয়। একবার যদি আপনার স্মার্টফোনে এসব ক্ষতিকর প্রোগ্রাম ইনস্টল করে ফেলেন, তবে দূরে থেকেই সাইবার দুর্বৃত্তরা ফোনের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হবে। এতে ব্যবহারকারীর ফোন কল, এসএমএস, ক্যালেন্ডার, ফাইল, কন্টাক্ট, মাইক্রোফোন, ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আপনার অজান্তেই স্মার্টফোনে নানা কাজ করতে পারবে তারা।

গুগলের প্লে স্টোরে এ ধরনের ক্ষতিকর অ্যাপ এখন খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই কোনো অ্যাপের উৎস নিশ্চিত না হয়ে ডাউনলোড করা ঠিক হবে না। এখন গুগলের প্লে স্টোরে ক্ষতিকর অ্যাপ রাখা কঠিন হয়ে যাওয়ায় সাইবার দুর্বৃত্তরা করোনাভাইরাস–সংক্রান্ত বিভিন্ন ডোমেইনে অ্যাপ রাখছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে এসব অ্যাপ ডাউনলোড করার জন্য নানা কৌশলে চেষ্টা চালায় তারা।

চেক পয়েন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়, করোনাভাইরাস–সংক্রান্ত ক্ষতিকর অ্যাপ তৈরিতে বিনা মূল্যের টেস্টিং ফ্রেমওয়ার্ক মেটাস্প্লিট ব্যবহার করা হয় যাতে হ্যাকিং করা সহজ। যেকেউ সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহার করে এ ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে ১৫ মিনিটেই ক্ষতিকর অ্যাপ তৈরি করে ফেলতে পারে।

চেকপয়েন্টের বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে তিনটি অ্যাপের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এগুলো ‘করোনাভাইরাস ডট এপিকে’ এমন নিরীহ নামের অ্যাপ। তবে অনেকে ভুল করে করোনাভাইরাসে অ্যাপ মনে করে তা ডাউনলোড করে ফেলতে পারেন। একবার এটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ইনস্টল হয়ে গেলে এর আইকন হারিয়ে যায়। ফলে এটি স্মার্টফোন থেকে মুছে ফেলা কঠিন হয়ে যায়। এটি ম্যালওয়্যার কোডযুক্ত সি অ্যান্ড সি সার্ভারে বারবার যুক্ত হতে থাকে।

চেক পয়েন্টের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক সপ্তাহে করোনাভাইরাস–সংক্রান্ত ৩০ হাজার ১০৩টি ডোমেইন নিবন্ধন হয়েছে। এসব ডোমেইনের মধ্যে ১৩১টি ডোমেইন সরাসরি ক্ষতিকর, ২ হাজার ৭৭৭টি ডোমেইন সন্দেহজনক। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে করোনাভাইরাস–সংক্রান্ত ডোমেইনের নিবন্ধন ৫১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।