স্বাস্থ্যসেবা খাতের উপযোগী সফটওয়্যার সেবা দিচ্ছে মাইসফট

মাই সফট লোগো
মাই সফট লোগো

বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের উপযোগী বিভিন্ন সফটওয়্যার তৈরি করেছে দেশি সফটওয়্যার উদ্যোক্তা মাইসফট লিমিটেড। হাসপাতাল স্বয়ংক্রিয়করণ বা অটোমেশনের ক্ষেত্রে দেশি এ সফটওয়্যার নির্মাতার তৈরি একাধিক সফটওয়্যার ২০০টির বেশি হাসপাতালে ব্যবহার করা হচ্ছে।

মাইসফট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে টেলিমেডিসিন সফটওয়্যার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মাইসফট লিমিটেড এ ক্ষেত্রে সফটওয়্যার সমাধান এনেছে। তাদের সফটওয়্যারের মাধ্যমে রোগী দূরবর্তী স্থানে অবস্থান করেও টেলিফোন ও ভিডিও কনফারেন্সিং মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে সেবা পাবেন। এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে চিকিৎসকের দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন তৈরি এবং ই-মেইলের মাধ্যমে তা রোগীকে পাঠিয়ে দিতে পারেন। চিকিৎসাসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় যাবতীয় তথ্য রোগীর মোবাইল নম্বরে এসএমএস নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানানো যায়।

টেলিমেডিসিন সফটওয়্যার ছাড়াও মাই সফট লিমিটেড হসপিটাল ইনফরমেশন সিস্টেম (এইচআইএস) তৈরি করেছে, যা মূলত স্বাস্থ্যসেবা খাতের বিশেষ ইআরপি সফটওয়্যার। এর মাধ্যমে হাসপাতালের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি, রোগীদের উন্নত সেবা প্রদান, দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিসহ নানা কাজ সম্পাদন করা যায়। রোগী হাসপাতালে ঢোকার পর তার নিবন্ধন থেকে শুরু করে চিকিৎসক দেখানো, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ওষুধ ব্যবস্থাপনা, হাসপাতালে ভর্তি এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়া পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সবকিছু প্রযুক্তির ব্যবহারে সহজ করা এ সফটওয়্যারের প্রধান কাজ। সফটওয়্যারটির রয়েছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মডিউল। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ওপিডি বা বহির্বিভাগ ব্যবস্থাপনা মডিউল, যা রোগীর নিবন্ধন, সাক্ষাৎ, রোগীর জন্য নির্দিষ্ট আইডি বরাদ্দ করা, ডাক্তারের পরামর্শ এবং ই-প্রেসক্রিপশন নানা কাজ করে।
এ ছাড়া আইপিডি বা আন্তবিভাগ ব্যবস্থাপনা মডিউল রোগী ভর্তি, রেফারেন্স পরিচালনা করা, বেড বা ওয়ার্ড শনাক্ত ও বরাদ্দ করা, রোগীর মেডিকেল তথ্য ব্যবস্থাপনা, ছাড়পত্র প্রদান ব্যবস্থাপনা, ফার্মেসি ও হাসপাতালের বকেয়া তালিকা দেখা ইত্যাদি কাজ সম্পাদন করে থাকে। সফটওয়্যারের ল্যাবরেটরি ইনফরমেশন সিস্টেম (এলআইএস) এবং রেডিওলজি ইনফরমেশন সিস্টেম (আরআইএস) বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক মেশিনের সঙ্গে ইন্টিগ্রেশনের মাধ্যমে নির্ভুল এবং দ্রুত রোগ নির্ণয় নিশ্চিতকরণসহ ল্যাব পরীক্ষার আবেদন, নমুনা সংগ্রহ, দ্রুত ফলাফল এন্ট্রি, পেমেন্টের ওপর ভিত্তি করে রিপোর্ট প্রদান, রিজেন্ট স্টকের নোটিফিকেশন প্রাপ্তি ইত্যাদি কাজ সম্পাদন করে থাকে।

এইচআইএস সফটওয়্যারে রয়েছে মাইসফট পিকচার আর্কাইভ অ্যান্ড কমিউনিকেশন সিস্টেম (প্যাকস), যা মাই প্যাকস নামে পরিচিত একটি অত্যাধুনিক মেডিকেল ইমেজিং টেকনোলজি, যার মাধ্যমে মেডিকেল ইমেজেস, টেস্ট রিপোর্টস, ফিল্মস ইত্যাদি নিরাপদ ও ডিজিটাল উপায়ে সংরক্ষণ করার যায়। এতে রোগীরা এখন আরও দ্রুত টেস্ট রিপোর্ট পাচ্ছে। প্রয়োজনে তা অতি দ্রুত এক স্থান থেকে অন্যত্র পাঠানো যাচ্ছে।

এতে ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট, নার্সিং ম্যানেজমেন্ট, ডক্টর মডিউল অ্যান্ড ইএমআর, ফার্মেসি ম্যানেজমেন্ট, ব্লাড ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট, ডে-কেয়ার ম্যানেজমেন্ট (ডায়ালাইসিস, অনকোলজি, কেমোথেরাপি, রিহ্যাবিলিটেশন, ফিজিওথেরাপি ইত্যাদি), অপারেশন থিয়েটার ম্যানেজমেন্ট, সিএসএসডি, লন্ড্রি অ্যান্ড লিনেন ম্যানেজমেন্ট, নিউট্রেশন অ্যান্ড ডায়েট ম্যানেজমেন্ট, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস), অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্ট, এইচআর অ্যান্ড পে-রোল ম্যানেজমেন্ট, স্টোর অ্যান্ড ইনভেনটরি ম্যানেজমেন্ট, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, কিচেন অ্যান্ড ক্যাফেটেরিয়া ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি সুবিধাও রয়েছে।

মাইসফট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনজুরুল হক বলেন, ‘বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া প্রতিজ্ঞার বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য খাতেও ডিজিটালাইজেশন শুরু হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য প্রযুক্তিকে স্বাস্থ্যসেবা খাতের একটি সম্পদ হিসেবে তৈরি করা। উন্নত মানের কমপ্লেক্স হেলথ কেয়ার সফটওয়্যার আমরা এখন সম্পূর্ণরূপে দেশীয় মেধা ব্যবহার করে দেশেই তৈরি করতে পারছি, তাই আমাদের আর বিদেশি সফটওয়্যারের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার প্রয়োজন নেই। গত এক দশকে মাইসফট লিমিটেড অত্যাধুনিক স্বাস্থ্যসেবা খাতের ইআরপি সফটওয়্যার তৈরি করার মাধ্যমে আস্থা অর্জনে সফল হয়েছে। দেশে দুই শর বেশি হাসপাতালে মাইসফট লিমিটেড হেলথ কেয়ার ইআরপি সফটওয়্যার সেবা দিচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে কম্বাইন্ড মিলিটারি হসপিটাল (সিএমএইচ), আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথোলজি (এএফআইপি), ল্যাব এইড হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক, আদ-দীন হসপিটাল, শমরিতা হসপিটাল লিমিটেড প্রভৃতি।’