ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কর-বিষয়ক টাস্কফোর্স গঠনের আহ্বান
ডিজিটাল বাংলাদেশের ওপর করা এক সাম্প্রতিক গবেষণায় কর বিষয়ক টাস্কফোর্স গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে, যা দেশে দ্রুত ব্রডব্যান্ড সেবা চালু করার জন্য একটি কার্যকরী কর ব্যবস্থা স্থাপন করবে। অর্থ মন্ত্রণালয়, আইসিটি মন্ত্রণালয় এবং এনবিআরের সমন্বয়ে এই টাস্কফোর্স গঠনের সুপারিশ করেছেন টেলিকম থিংকট্যাংক লার্ন এশিয়ার গবেষকেরা।
‘সম্ভাবনার ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছে টেলিকম থিংকট্যাংক লার্ন এশিয়া এবং এতে সহযোগিতা করেছে টেলিনর গ্রুপ ও গ্রামীণফোন।
আজ রোববার রেডিসন হোটেলে গবেষণা সংক্রান্ত তথ্য জানানোর জন্য একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে গ্রামীণফোন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ, গ্রামীণফোনের সিইও রাজীব শেঠি, এটুআই এর পলিসি উপদেষ্টা আনীর চৌধুরি এবং লার্ন এশিয়ার সিইও রোহান সামারাজিভা।
প্রতিবেদনে তরুণদের কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রভৃতি খাতে বিশেষ মনোযোগ দিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে আরও মোবাইল ব্রডব্যান্ডর সম্পূরক হিসেবে মানসম্পন্ন এবং বিস্তৃত একটি ফাইবার নেটওয়ার্কের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে উন্নত স্পেকট্রাম ব্যবস্থাপনার একটি নির্ভরযোগ্য পথ নির্দেশনা এবং বিদ্যমান স্পেকট্রামের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা চালুর বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। এটি অপারেটরদের যথাসময়ে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সঠিক সেবা দিতে সহায়তা করবে।
গ্রামীণফোনের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গবেষকেরা যে টাস্কফোর্স গঠনের কথা বলেছেন তাতে কর ব্যবস্থাকে যুক্তিসংগত করার চেষ্টা করবে, যা সরকারের যথাযথ এবং স্থিতিশীল রাজস্ব আয়ের অধিকারের সঙ্গে অপারেটরদের বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকবে। এ ছাড়াও বাংলাদেশের মানুষের সুলভ টেলিযোগাযোগ সেবা পাওয়ার প্রয়োজনের মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে। কম ক্রয়ক্ষমতা, ডিভাইসের দাম ও ব্যবহারের খরচের হিসাব ধরলে বাংলাদেশের অনেকেই ইন্টারনেট ব্যবহারের আওতার বাইরে। কর এবং ফি মোবাইল ফোন ক্রয় ও ব্যবহারের খরচের শতকরা ১৭ ভাগ হওয়ায় তা অতিরিক্ত বাধা হিসেবে কাজ করে।
গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের দাবি, এই গবেষণাটি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে এ পর্যন্ত অর্জিত সাফল্য চিহ্নিতকরণ, যে সব ক্ষেত্রে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা চিহ্নিতকরণ এবং সাফল্যের মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে।
অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রতিবেদন আমাদের বাস্তবসম্মতভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সাহায্য করবে।’
তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সরকারি এবং বেসরকারি খাতকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
আনীর চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের এমন একটি ইকোসিস্টেম প্রয়োজন যেখানে সরকারি এবং বেসরকারি সকল স্টেকহোল্ডার সমভাবে উপকৃত হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সকল স্টেকহোল্ডারের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।’
গ্রামীণফোনের সিইও বলেন, ‘সবার জন্য সুলভ ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করাই ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মৌলিক পদক্ষেপ। সঠিক রেগুলেটরি এবং বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিত করা হলে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের সমর্থনে সবার জন্য ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে সক্ষম হব।’