কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে হার মানুষের

‘গো’ নামের খেলায় কিংবদন্তী খেলোয়াড় লি সিডলকে পরপর তিনবার হারিয়ে হ্যাটট্রিক করেছে গুগলের ডিপমাইন্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রোগ্রাম ‘আলফাগো’
‘গো’ নামের খেলায় কিংবদন্তী খেলোয়াড় লি সিডলকে পরপর তিনবার হারিয়ে হ্যাটট্রিক করেছে গুগলের ডিপমাইন্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রোগ্রাম ‘আলফাগো’

‘গো’ নামের খেলায় কিংবদন্তি খেলোয়াড় লি সিডলকে পরপর তিনবার হারিয়ে হ্যাটট্রিক করেছে গুগলের ডিপমাইন্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রোগ্রাম ‘আলফাগো’। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে হেরে যাচ্ছে মানুষের বুদ্ধি! ‘গো’ নামের খেলায় কিংবদন্তি খেলোয়াড় লি সিডলকে পরপর তিনবার হারিয়ে হ্যাটট্রিক করেছে গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সফটওয়্যার ‘আলফাগো’। আজ দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ফোর সিজনস হোটেলে অনুষ্ঠিত তৃতীয় খেলায় আলফাগো প্রোগ্রামটি লি সিডলকে হারিয়েছে। এই সিরিজের আরও দুটি খেলা হবে রবি ও মঙ্গলবার।

গো নামের চীনা বোর্ড গেমটি আমাদের দেশের ষোলোগুটি বা বাঘবন্দী খেলার মতো। একটা নির্দিষ্ট বোর্ডে সাদা ও কালো গুটি নিয়ে দুই পক্ষকে খেলতে হয়। উদ্দেশ্য থাকে প্রতিদ্বন্দ্বীর গুটিকে আটকে ফেলে বোর্ডের দখল নেওয়া। যে অর্ধেকের বেশি এলাকা দখল করতে পারবে, সে-ই বিজয়ী। প্রায় তিন হাজার বছর আগে চীনে এই খেলাটির উদ্ভব। দাবা খেলার সঙ্গে এর বড় পার্থক্য হচ্ছে, এখানে প্রায় অসংখ্য সম্ভাবনাময় চাল থাকে। কেবল গাণিতিক হিসাব করে সেরা চালটি বের করা প্রায় অসম্ভব। এ কারণে কম্পিউটারের জন্য এই খেলাটি মোটেই সহজ হবে না বলে এত দিন মনে করা হয়েছে।
কিন্তু গো-এর কিংবদন্তি খেলোয়াড় লি সিডলকে পাঁচ ম্যাচের টুর্নামেন্টের পরপর তিনটিতে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে গুগলের এই কৃত্রিম বুদ্ধিমান সফটওয়্যার। লিকে বলা হয় একুশ শতকের সেরা গো খেলোয়াড়। প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর লি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি খুবই অবাক হয়েছি। আমি হারব ভাবিনি। কিন্তু আলফাগো এত ভালো খেলবে সেটা আশা করিনি।’
গুগলের ডিপমমাইন্ড নামের ইউনিটে তৈরি করা আলফাগো প্রোগ্রামটি। এতে দুইটি নিউরাল নেটওয়ার্ক আছে। এর পলিসি নেটওয়ার্কটি সম্ভাব্য সেরা চালটি দ্রুত হিসাব করতে পারে। অন্যদিকে এর ভ্যালু নেটওয়ার্কটি প্রতিটি চালের শুরুতে অপ্রয়োজনীয় চালগুলো বাদ দিয়ে সম্ভাব্য চালের পরিমাণ কমিয়ে ফেলে। বিস্তারিত ‘হিসাব’ না করে ‘অপ্রয়োজনীয় চাল’ বাদ দেওয়াটা এত দিন পর্যন্ত মানুষের একচেটিয়া সম্পত্তি ছিল। কিন্তু গুগলের আলফাগো সে সক্ষমতা অর্জন করেছে।
যন্ত্রের কাছে মানুষের হেরে যাওয়া, বিশেষ করে বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষায়, এবারই প্রথম নয়। ১৯৯৭ সালে দাবা খেলার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন গ্যারি কাসপারভ আইবিএমের তৈরি ডিপ ব্লু নামে এক সুপার কম্পিউটারের কাছে হেরে যান। এরও আগে ১৯৯৬ সালে কাসপারভ ৬ ম্যাচের টুর্নামেন্টে ৪-২ পয়েন্ট জয়লাভ করেন। কিন্তু ১৯৯৭ সালে তিনি ১ পয়েন্টের ব্যবধানে ডিপ ব্লুর কাছে হেরে যান!