কনটেন্ট নির্মাণে এআই
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই যখন সারা বিশ্বে চাকরিজীবীদের জন্য একটি ভয়ের কারণ হয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন এআই একটি বড় ধরনের সাহায্যকারী হিসেবে আধেয় নির্মাতা বা কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এআই দিয়ে আপনি যেমন একটি কনটেন্ট সাজিয়ে ফেলতে পারছেন কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই, ঠিক তেমনি কনটেন্টের স্ক্রিপ্ট কী হবে, কনটেন্টের আকর্ষণীয় পয়েন্টগুলো কী হবে, সেই সবকিছুতে আপনি চাইলে এআইয়ের সাহায্য নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুন্দর একটি কনটেন্ট বানিয়ে ফেলতে পারছেন।
ধরুন, আপনি একটি ছবি তুলেছেন, কিন্তু বুঝতে পারছেন না যে কী ক্যাপশন দিলে ভালো হবে। আপনি তখন চাইলে সেই ছবি চ্যাটজিপিটিতে দিতে পারেন এবং তাৎক্ষণিক আপনি সেই ছবির একটি সুন্দর ক্যাপশন পেয়ে যাবেন। সেই সঙ্গে পেয়ে যাবেন কিছু ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগ, যা কিনা আপনার সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিচ বাড়াতে সাহায্য করবে। আর যেহেতু এখন কনটেন্ট মনিটাইজেশনের মাধ্যমে ছবি থেকেও ইনকাম করা যাচ্ছে, তাই আপনি চাইলে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে আপনার ছবিতে আকর্ষণীয় ক্যাপশন ও ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে যেমন আয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারেন, ঠিক তেমনি আপনি চাইলে আপনার সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে আকর্ষণীয় ছবি ও লেখা বানিয়ে ফেলতে পারেন। সেগুলো আপনি ফেসবুক ও এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রকাশ করে আয় করতে পারবেন।
বর্তমান বিশ্বে আরও একটি নতুন এআই হচ্ছে লোরা ফ্লাক্স মডেল এআই। এই এআইয়ের মাধ্যমে আপনি চাইলে আপনার ১০ থেকে ২৪টি ছবি দিয়ে নিজের একটি এআই মডেল তৈরি করতে পারেন। সেই মডেল দিয়ে আপনি আপনাকে বিভিন্ন পোশাক কিংবা বিভিন্ন জায়গায় স্থাপন করে ছবি তৈরি করতে পারবেন শুধু লেখার মাধ্যমে। ছবিগুলো এতই নিখুঁত হয় যে অনেকেই ধরতেও পারে না যে এটি কি আসলেই এআই জেনারেটেড ছবি, নাকি আসল ছবি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনি কখনোই বের করতে পারবেন না যে কোনটা আসল ছবি বা কোনটা এআই দিয়ে তৈরি ছবি। আপনি চাইলে এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আসল ছবি, নাকি এআই জেনারেটেড ছবি, সেটি বের করে নিতে পারবেন। বিশ্বব্যাপী কনটেন্ট ক্রিয়েটররা এখন আরও সহজেই শুধু এআইকে ব্যবহার করে কনটেন্ট মনিটাইজেশনের মাধ্যমে ছবি ও স্টোরি থেকে প্রতি মাসেই বেশ বড় আকারের ডলার আয় করে যাচ্ছেন।
আগে যেখানে অ্যানিমেশন ভিডিও বানানো বেশ সময় সাপেক্ষ ছিল, এখন কিন্তু তা বেশ সহজেই হয়ে যাচ্ছে এআই ব্যবহার করে। এআইয়ের মাধ্যমে আপনি লেখা থেকে অ্যানিমেশন তৈরি করতে পারবেন পিকলিউমেন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, আপনি চাইলে বিনা মূল্যেই এই অ্যানিমেশনের ছবিগুলো বানিয়ে ফেলতে পারবেন। তারপর সেই ছবিগুলোকে আপনি চাইলে মিড জার্নি, ওয়েন২.১–এর মতো এআই ভিডিও জেনারেটরের সাহায্যে সুন্দর অ্যানিমেশন ভিডিও বানিয়ে ফেলতে পারবেন কয়েক মিনিটের মধ্যেই। আর সেই ভিডিওতে আপনি চাইলে খুব সুন্দর কথা (ভয়েস) যোগ করতে পারবেন, সেটিও হবে এআইয়ের মাধ্যমে। এরপর প্রয়োজনীয় আবহ সংগীত আপনি কিন্তু বানিয়ে নিতে পারবেন অনেক ধরনের মিউজিক জেনারেটর এআইয়ের মাধ্যমে। যার মধ্যে অন্যতম সাউন্ড ভার্স, সুনো, উডিও এআই।
বলতে গেলে একজন ব্যক্তির পক্ষেই এখন অ্যানিমেটেড ছবি, ভিডিও, ভয়েস ও আবহ সংগীত বানিয়ে নিজে একটি প্রোডাকশন হাউস তৈরি করে ফেলা যাচ্ছে। তাই এআই যখন সবার জন্য বেশ চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিচ্ছিল, ঠিক তখন এআই কিন্তু একটি আশীর্বাদ হয়ে এসেছে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য।
রবিন রাফান: কনটেন্ট ক্রিয়েটর