চিকিৎসকদের ডিপফেক ভিডিও দিয়ে ভুয়া স্বাস্থ্যতথ্য ছড়ানোর অভিযোগ

ডিপফেক ভিডিওর মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছেছবি: রয়টার্স

টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে এআই দিয়ে তৈরি চিকিৎসকদের ডিপফেক ভিডিও। ডিপফেক ভিডিওগুলোতে জনপ্রিয় চিকিৎসকদের চেহারা ও কণ্ঠ নকল করে বিভিন্ন পরিপূরক খাদ্য ও ভেষজ পণ্য বিক্রিসহ বিভ্রান্তিকর স্বাস্থ্য তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।

তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ফুল ফ্যাক্ট জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিমধ্যে এমন কয়েক শ ভিডিও শনাক্ত করা হয়েছে। বেশির ভাগ ভিডিওতেই বিভিন্ন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞের পুরোনো বক্তব্যকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে বদলে দেওয়া হয়েছে। ভিডিওগুলো মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েলনেস নেস্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রোবায়োটিক, হিমালয়ান শিলাজিৎসহ নানা পণ্য কেনার জন্য উৎসাহিত করছে। ফুল ফ্যাক্টের অনুসন্ধানকারী লিও বেনেডিকটাস বলেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে ভয়ংকর ও উদ্বেগজনক নতুন কৌশল। ডিপফেক নির্মাতারা ইচ্ছাকৃতভাবে সুপরিচিত চিকিৎসকদের চেহারা ও কণ্ঠ ব্যবহার করে এমনভাবে ভিডিও বানাচ্ছে, যেন তারা এসব পণ্যের কার্যকারিতা সমর্থন করছেন।’

লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যবৈষম্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ডেভিড টেইলর রবিনসনের চেহারাও ব্যবহৃত হয়েছে এমন ডিপফেক ভিডিওতে। গত আগস্টে তিনি জানতে পারেন টিকটকে তাঁর নামে ১৪টি ভিডিও প্রচারিত হচ্ছে, যেখানে তাঁকে নারীদের জন্য রোগ ও চিকিৎসা নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়। এক ভিডিওতে তার ‘ক্লোন’ তথাকথিত ‘থার্মোমিটার লেগ’–এর কথা বলে ওয়েলনেস নেস্টের প্রোবায়োটিক কেনার পরামর্শ দিয়েছে। এ বিষয়ে টেইলর রবিনসন বলেন, ‘প্রথমে ব্যাপারটা অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর ছিল। একেবারেই অবাস্তব মনে হচ্ছিল। পরে ক্রমে বিরক্তি তৈরি হয়। নিজের গবেষণা ও কাজের ভিত্তিতে কেউ বিভ্রান্তিকর পণ্য বিক্রি করছে, এটা মেনে নেওয়া কঠিন।’ অভিযোগ জানানোর ছয় সপ্তাহ পর টিকটক ভিডিওগুলো অপসারণ করে। ফুল ফ্যাক্ট আরও জানায়, শুধু টিকটক নয় এক্স, ফেসবুক ও ইউটিউবেও ওয়েলনেস নেস্ট এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওয়েলনেস নেস্ট ইউকে এর সঙ্গে যুক্ত এমন নকল ভিডিও পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বিখ্যাত পুষ্টিবিশেষজ্ঞ টিম স্পেক্টর ও প্রয়াত চিকিৎসক মাইকেল মসলির ডিপফেক ভিডিওও রয়েছে।

এ বিষয়ে টিকটকের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘আমরা টেইলর রবিনসন ও সেলবির বিষয়ে ভিডিওগুলো অপসারণ করেছি। এগুলো আমাদের ক্ষতিকর বিভ্রান্তি ও প্রতারণামূলক আচরণের নীতি ভঙ্গ করেছে। এআই দিয়ে তৈরি বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট এখন বড় চ্যালেঞ্জ। টিকটক এ ধরনের ভিডিও শনাক্ত ও অপসারণে নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

আরও পড়ুন