চোখ দেখে ডিমেনশিয়া রোগের লক্ষণ শনাক্ত করবে এআই

চোখের রেটিনার ছবি বিশ্লেষণ করে ডিমেনশিয়া রোগের আগাম উপসর্গ শনাক্ত করবে এআইরয়টার্স

ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিক্ষয় রোগের কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য কয়েক দশক ধরেই গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। এবার ডিমেনশিয়া রোগের প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্ত করতে সক্ষম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির টুল তৈরির কাজ শুরু করেছেন স্কটল্যান্ডের একদল গবেষক। এআই টুলটি চোখের রেটিনার ছবি বিশ্লেষণ করে ডিমেনশিয়া রোগের আগাম উপসর্গ শনাক্ত করতে পারবে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

‘নিউরআই’ নামের এই গবেষণার জন্য স্কটল্যান্ডের বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে প্রায় ১০ লাখ চোখের ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপর চোখের রেটিনা স্ক্যান করা ছবিগুলো কাজে লাগিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিনির্ভর অ্যালগরিদম তৈরি করা হয়েছে, যা চোখের রক্তনালির স্বাস্থ্য বিশ্লেষণ করে স্নায়বিক রোগের ঝুঁকি সম্পর্কে তথ্য জানাতে পারে। এ বছরের মধ্যেই এআই টুলটির প্রাথমিক সংস্করণ তৈরি করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন গবেষকেরা।

আরও পড়ুন

গবেষকদের তথ্যমতে, নিয়মিত চোখ পরীক্ষার সময় তোলা ছবিগুলো এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্লেষণ করলে অনেক আগে থেকেই রোগ শনাক্ত করা সম্ভব। ফলে চিকিৎসকেরা ডিমেনশিয়া রোগের চিকিৎসায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন। চোখের রক্তনালির গঠন এতটাই সূক্ষ্ম যে এটি শরীরের অন্যান্য অঙ্গের তুলনায় অনেক আগে সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। প্রকল্পটির সঙ্গে এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরাও যুক্ত রয়েছেন।

এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল অপথালমোলজির অধ্যাপক এবং নিউরআই প্রকল্পের উপপ্রধান বালজিয়ান ধিলন বলেন, ‘চোখ আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি তথ্য দেয়। রেটিনা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য মাপার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। প্রতিটি চোখ পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকা সাধারণ যন্ত্রের মাধ্যমে রেটিনার ছবি তুলে মস্তিষ্কের ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের আগাম সংকেত পাওয়া সম্ভব।’

ডিমেনশিয়া এমন একটি স্নায়বিক রোগ, যা মস্তিষ্কের কোষকে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে বাধা দেয়। এর ফলে স্মৃতিশক্তি, চিন্তাশক্তি ও বাক্‌শক্তি ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ডিমেনশিয়া ইউকের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী প্রতি ১৪ জনে একজন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী প্রতি ছয়জনে একজন ডিমেনশিয়ায় ভুগছেন। আলঝেইমারের মতো রোগ ডিমেনশিয়ার অন্যতম কারণ। এ রোগে স্মৃতিভ্রংশ, বিভ্রান্তি এবং কথা বলার বা বোঝার সমস্যা দেখা দেয়। যদিও এখনো ডিমেনশিয়ার কোনো কার্যকর ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি; তবে আগাম রোগ নির্ণয় রোগীর চিকিৎসা শুরু করতে এবং পরিবারকে মানসিক প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করে।

সূত্র: বিবিসি