মেটা এআই চ্যাটবটে কথোপকথনের তথ্য ব্যবহার করবে বিজ্ঞাপন দেখানোর কাজে

মেটার লোগোছবি: রয়টার্স

মেটা তাদের গোপনীয়তা নীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়বে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারের কোটি কোটি ব্যবহারকারীর ওপর। আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে ব্যবহারকারীদের এআই চ্যাটবট ও অন্যান্য সৃজনশীল টুল ব্যবহারের তথ্য বিজ্ঞাপন পার্সোনালাইজেশনের কাজে লাগানো হবে।

মেটার এআই চ্যাটবট ও অন্যান্য সুবিধা আগের মতোই বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যাবে। ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে সরাসরি কোনো অর্থ নেওয়ার পরিকল্পনা নেই প্রতিষ্ঠানটির। তবে বিজ্ঞাপন থেকে আয় বাড়ানোই এ পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য।

বিজ্ঞাপনই মেটার আয়ের প্রধান উৎস এবং নতুন নীতির মাধ্যমে সে আয় আরও শক্তিশালী হবে। মেটা বলছে, এআই ব্যবহারের তথ্য কাজে লাগানো হলে বিজ্ঞাপন আরও প্রাসঙ্গিক মনে হবে। যদি কোনো ব্যবহারকারী হোয়াটসঅ্যাপের চ্যাটবটে ব্যায়াম পরিকল্পনা চান, তবে পরে ইনস্টাগ্রামে তার সামনে ফিটনেস সামগ্রীর বিজ্ঞাপন আসতে পারে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে নতুন ধরনের উদ্বেগও তৈরি হবে। ব্যবহারকারীর কাছে সহায়ক টুল আর নজরদারি ব্যবস্থার সীমারেখা অস্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে। কারণ, কোনো ধরনের অপ্ট–আউট সুবিধা থাকবে না। ফলে ভ্রমণসংক্রান্ত তথ্য খোঁজা থেকে শুরু করে রান্নার রেসিপি পর্যন্ত প্রতিদিনের নানা প্রশ্নই মেটার বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে।

মেটা জানিয়েছে, রাজনীতি, ধর্ম, স্বাস্থ্য, যৌনতা বা বর্ণ নিয়ে কথোপকথনের তথ্য বিজ্ঞাপন দেখানোর কাজে ব্যবহার করা হবে না। তবে শখ, পছন্দ কিংবা কেনাকাটাসংক্রান্ত তথ্য বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করা হবে। যেহেতু মেটার প্ল্যাটফর্মগুলো একে অপরের সঙ্গে যুক্ত, তাই ফেসবুকের চ্যাটবটে দেওয়া তথ্য ইনস্টাগ্রামে দেখা বিজ্ঞাপনের ধরনও প্রভাবিত করতে পারে। প্রযুক্তি খাতের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও এ ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে। অ্যামাজন ইতিমধ্যে অ্যালেক্সা প্লাস–এ কথোপকথনের ভেতর সরাসরি বিজ্ঞাপন চালুর ঘোষণা দিয়েছে। গুগল ও মাইক্রোসফটও জেনারেটিভ এআইতে বিজ্ঞাপনের পরীক্ষা চালাচ্ছে। তবে তারা একে ‘স্পন্সরড রেজাল্ট’ হিসেবে উপস্থাপন করছে। ফলে মেটাও এই প্রচলিত প্রবণতার দিকেই এগোচ্ছে।

মেটার হিসাবে, বর্তমানে প্রতি মাসে ১০০ কোটির বেশি মানুষ তাদের এআই সেবা ব্যবহার করছেন। এতে এআই এখন বিশাল এক ডেটার ভান্ডারে পরিণত হয়েছে। চ্যাটবটের কথোপকথনকে বিজ্ঞাপনের সংকেত হিসেবে কাজে লাগিয়ে মেটা তাদের মূল আয়ের উৎস বিজ্ঞাপন ব্যবসার সঙ্গে এআই সরাসরি যুক্ত করছে। অর্থাৎ, যত বেশি ব্যবহারকারী চ্যাট করবেন, বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে তাঁদের মূল্য তত বাড়বে।
সূত্র: নিউজ১৮ ডটকম