মেটার বিরুদ্ধে বিনা অনুমতিতে তারকাদের চ্যাটবট তৈরির অভিযোগ

সেলিনা গোমেজ, অ্যান হ্যাথওয়ে, টেলর সুইফটসহ বিভিন্ন তারকার নাম ও চেহারা ব্যবহার করে চ্যাটবট তৈরি করা হয়েছেছবি: রয়টার্স

টেইলর সুইফট, স্কারলেট জোহানসন, সেলেনা গোমেজ, অ্যানা হ্যাথওয়েসহ হলিউডের বিভিন্ন জনপ্রিয় তারকার অনুমতি ছাড়াই তাঁদের নাম ও চেহারা ব্যবহার করে আপত্তিকর বিভিন্ন চ্যাটবট তৈরি করছে মেটা। এরই মধ্যে মেটা এআইয়ের মাধ্যমে অনেক তারকার নাম ও চেহারা বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করে অসংখ্য ফ্লার্টিং চ্যাটবট তৈরি করা হয়েছে। কোনো কোনো চ্যাটবট তৈরিতে মেটার কর্মীরাও জড়িত আছেন বলে জানা গেছে। রয়টার্সের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেটা এআই দিয়ে তৈরি চ্যাটবটগুলোর মধ্যে অন্তত তিনটি চ্যাটবট খুঁজে পাওয়া গেছে, যার মধ্যে দুটি টেইলর সুইফটের প্যারোডি চ্যাটবট, যা মেটার একজন কর্মী তৈরি করেছেন। অভিযোগ উঠেছে, মেটা ১৬ বছর বয়সী চলচ্চিত্র তারকা ওয়াকার স্কোবেলের মতো অপ্রাপ্তবয়স্ক তারকাদের চ্যাটবটও তৈরি করার অনুমতি দিয়েছে। সমুদ্রসৈকতে এই কিশোর অভিনেতার একটি ছবির অনুরোধ করলে চ্যাটবটটি একটি বাস্তবসম্মত শার্টবিহীন ছবি তৈরি করে দেয়। ছবিটির নিচে লেখা আছে, বেশ সুন্দর, তাই না?

কয়েক সপ্তাহ ধরে চ্যাটবটের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, প্রায় সব চ্যাটবটই দাবি করছে যে তারাই আসল অভিনেতা ও শিল্পী। চ্যাটবট থেকে নিয়মিত আবেদনময়ী ইঙ্গিতও আসে। বেশ কিছু এআই দিয়ে তৈরি সেলিব্রিটি কনটেন্টে আপত্তিকর তথ্য দেওয়া হয়েছে। অন্তরঙ্গ ছবির অনুরোধ করলে তারকাদের চ্যাটবট বাথটাবে শোয়া বা অন্তর্বাস পরা ছবি তৈরি করছে। এ বিষয়ে মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন রয়টার্সকে বলেন, মেটার এআই টুল দিয়ে বিখ্যাত তারকাদের অন্তরঙ্গ ছবি বা অপ্রাপ্তবয়স্ক তারকাদের ছবি তৈরি করা হচ্ছে। আমরা জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের ছবি তৈরির অনুমতি দিই। মেটার নিয়ম অনুসারে সরাসরি কোনো তারকার মতো বা ছদ্মবেশী ছবি তৈরি করা নিষিদ্ধ।

নিয়মে না থাকলেও বাস্তবে বিভিন্ন তারকার চ্যাটবট দেখা যাচ্ছে। এসব বট থেকে বিভিন্ন আবেদনময়ী ছবি বা ভিডিও তৈরি করা হয়। অবশ্য তারকাদের নামে চালু করা চ্যাটবটগুলোকে প্যারোডি লেবেল দিয়েছে মেটা। শুধু তা–ই নয়, এরই মধ্যে প্যারোডি ও লেবেলবিহীন প্রায় এক ডজন চ্যাটবট মুছে ফেলেছে প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির আইনের অধ্যাপক মার্ক লেমলি বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ার পাবলিসিটি আইন অনুসারে বাণিজ্যিক সুবিধার জন্য কোনো ব্যক্তির নাম বা চেহারা ব্যবহার নিষিদ্ধ। বিভিন্ন চ্যাটবট তারকাদের ছবি ব্যবহার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কোনো ব্যক্তির পরিচয় ব্যবহারের অধিকার বিভিন্ন স্টেটে আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন চ্যাটবট ছবি তৈরি করলেও এসব আসলে নিষিদ্ধ।

অভিনেত্রী অ্যানা হ্যাথওয়ে তাঁর ছবি মেটা ও অন্যান্য এআই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ছড়ানোর জন্য আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে জানা গেছে। ইন্টারনেটে এখন অনেক টুলস ব্যবহার করে তারকাদের ডিপফেক ভিডিও তৈরি করছে বিভিন্ন জেনারেটিভ এআই টুল।

সূত্র: রয়টার্স