কৃষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চালকবিহীন ট্রাক্টর

এগজিডের তৈরি অ্যাগবট–২ চালকহীন ট্রাক্টরছবি: অ্যাগজিড

উইল মামফোর্ড, যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজশায়ারের সেন্ট নিওটসের পঞ্চম প্রজন্মের একজন কৃষক। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির চালকবিহীন ট্রাক্টর ব্যবহার করছেন। বলা হচ্ছে, যুক্তরাজ্যে এ ধরনের ট্রাক্টর ব্যবহারকারীর প্রথম কয়েকজনের একজন তিনি। এই ট্রাক্টর ব্যবহার করে তিনি বীজ রোপণ ও কৃষিজমি চাষ করেছেন।

উইল মামফোর্ড বলছেন, কৃষি ও চাষাবাদের জন্য এ ‘রোবট’–ই ভবিষ্যৎ। কারণ, এগুলো একবারে ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত চলতে পারে। আর কৃষিজমির ক্ষতিও খুব কম হয়। তবে বলা হচ্ছে, উচ্চমূল্যের কারণে সব কৃষক এ ট্রাক্টর ব্যবহার করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে। যুক্তরাজ্যের দ্য ন্যাশনাল ফারমার্স ইউনিয়ন বলছে, ‘আমরা প্রযুক্তির উন্নয়নকে স্বাগত জানাই।’ তবে পণ্যের দাম সাশ্রয়ী হওয়াটাও গুরুত্বপূর্ণ।

এখন একেকটি চালকবিহীন ট্রাক্টরের দাম পড়ছে ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার পাউন্ড। এই উচ্চমূল্যের কারণে অধিকাংশ কৃষক এই যন্ত্র ব্যবহারে আগ্রহী হবেন না। উইল মামফোর্ড চালকবিহীন ট্রাক্টর সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর ভাষ্য, বৃহৎ যন্ত্রের ওপর কৃষি খাতের নির্ভরতার নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। কারণ, ভারী যন্ত্র মাটির কাঠামো ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করে। হালকা যন্ত্র এদিক থেকে মাটিকে সুরক্ষিত রাখে। ফলে চালকবিহীন ট্রাক্টর এ বিবেচনায় পরিবেশবান্ধব ও মাটির জন্য ভালো। এমন ট্রাক্টর ব্যবহৃত হলে আরও টেকসইভাবে চাষাবাদ করে মাটির কাঠামো সুরক্ষিত রাখা যাবে।

চালকবিহীন ট্রাক্টর সাধারণত প্রচলিত ট্রাক্টরের তুলনায় আকারে প্রায় অর্ধেক। এ ছাড়া চালকবিহীন ট্রাক্টরে রাডার, আলট্রাসাউন্ড ও সেন্সর রয়েছে। এর ফলে কোনো বস্তুর সংস্পর্শে এলেই তা তৎক্ষণাৎ থেমে যায়।

মামফোর্ড বলছেন, কৃষিতে এআই প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে কৃষকের ক্ষতি হবে না। বরং সময়সাপেক্ষ ও ভীষণ ক্লান্তিকর কাজগুলো থেকে কৃষকদের মুক্তি দেবে এআই এবং কৃষকেরা তখন আরও অন্য বিষয়গুলো ভালোভাবে ভাবার সময় পাবেন। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁদের ট্রাক্টরের আসনে বসে থাকার প্রয়োজন হবে না।

কৃষি প্রকৌশলী টম কারনেল বলছেন, চালকবিহীন ট্রাক্টরসহ নতুন প্রযুক্তি আসার পর সাধারণত বহুলভাবে ব্যবহৃত হতে পাঁচ বছর সময়ের প্রয়োজন হবে। প্রথমে মুষ্টিমেয় কয়েকজন কৃষক এর সুবিধা ভোগ করবেন এবং এ প্রযুক্তির ওপর বিশ্বাস রাখবেন। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই প্রযুক্তিই খুব সাধারণ ও পরিচিত হয়ে উঠবে।

সূত্র: বিবিসি