চাকরি কেড়ে নিচ্ছে এআই, তরুণদের শেখার পরামর্শ নাদেলার
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের অগ্রগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলে যাচ্ছে প্রযুক্তি খাতের কর্মপরিসর। কোডিং থেকে শুরু করে জটিল বিশ্লেষণসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কাজ এখন ধীরে ধীরে স্বয়ংক্রিয়তার আওতায় আসছে। এতে তরুণ প্রযুক্তিকর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ। তবে এআইকে প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং সহযাত্রী হিসেবে দেখতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা।
সম্প্রতি এক পডকাস্টে অংশ নিয়ে প্রযুক্তির পরিবর্তন এবং তার প্রভাব নিয়ে কথা বলেন নাদেলা। তিনি বলেন, এআই দ্রুত এগোলেও মৌলিক দক্ষতা ও বিশ্লেষণী চিন্তার প্রয়োজন কখনোই শেষ হবে না। তাঁর মতে, যাঁরা এখন প্রযুক্তি খাতে পেশাজীবন শুরু করতে যাচ্ছেন, তাঁদের মূল মনোযোগ থাকা উচিত এই মৌলিক জ্ঞান ও দক্ষতা দৃঢ় করার দিকে। নাদেলা বলেন, ‘আমরা সবাই ধীরে ধীরে সফটওয়্যার আর্কিটেক্ট হয়ে উঠব।’ তার ব্যাখ্যায়, ভবিষ্যতের প্রযুক্তিপণ্য তৈরিতে মানুষের কাজ হবে কাঠামো ও নির্দেশনার রোডম্যাপ তৈরি করা। সেই নকশা অনুসারে কার্যকর বাস্তবায়নের কাজটি করবে এআই।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাবে চাকরির বাজারে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা স্বীকার করে নাদেলা বলেন, এআই নিঃসন্দেহে অনেক কাজে দক্ষ হয়ে উঠছে। মাইক্রোসফটের অভ্যন্তরীণ তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান কোডিং কার্যক্রমের ২০ থেকে ৩০ শতাংশই সম্পন্ন হচ্ছে এআই ব্যবস্থার মাধ্যমে। তবে এতে মানবসম্পদের প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যাচ্ছে এই ধারণা তিনি নাকচ করে দেন। নাদেলার ভাষায়, ‘টেকনোলজি কখনো একা সিদ্ধান্ত নেয় না। মানুষের চিন্তা, যুক্তি ও নকশার ভিত্তিতেই প্রযুক্তির বাস্তব প্রয়োগ হয়।’
প্রযুক্তিবিষয়ক কয়েকটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মাইক্রোসফট নিজস্ব কর্মীদের দিয়ে এআই প্রশিক্ষণের কাজ করিয়ে পরে সেই কর্মীদের ছাঁটাই করেছে। যদিও এ বিষয়ে নাদেলা সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি, তবে তার কথায় স্পষ্ট, এআই এখানে দীর্ঘ সময়ের জন্য এসেছে এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তিকাঠামোর কেন্দ্রে থাকবে।
প্রযুক্তি খাতে পেশা গড়তে ইচ্ছুক তরুণদের উদ্দেশে নাদেলা বলেন, পরিবর্তনকে ভয় না পেয়ে তা গ্রহণ করাই এখন সময়ের দাবি। তাঁর মতে, কর্মক্ষেত্রে সৃজনশীলতা, বিশ্লেষণী চিন্তা ও অভিযোজন ক্ষমতাই ভবিষ্যতে সবচেয়ে বড় সম্পদ হয়ে উঠবে। এআইকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করলে তা নিরুৎসাহ ও অনিশ্চয়তা বাড়াবে। কিন্তু তাকে একটি সহায়ক প্রযুক্তি হিসেবে কাজে লাগাতে পারলে তা দক্ষতা বাড়ানো ও কাজের গুণগত মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সূত্র: নিউজ১৮ ডটকম