ইলন মাস্কের গ্রোকিপিডিয়ার নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উইকিপিডিয়ার জিমি ওয়েলসের
উইকিপিডিয়ার সহপ্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলস জানিয়েছেন, এনসাইক্লোপিডিয়া লেখার জন্য এখনো প্রস্তুত নয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। শুধু তা–ই নয়, ইলন মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর নতুন উদ্যোগ গ্রোকিপিডিয়ার নির্ভরযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চ্যাটবট দিয়ে বিশ্বকোষ বা এনসাইক্লোপিডিয়ার মতো তথ্যনির্ভর ও সংবেদনশীল ভান্ডার তৈরি করা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ।
প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট দ্য ভার্জকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়েলস বলেন, এক্সএআইয়ের চ্যাটবট গ্রোক এখনো এ ধরনের দায়িত্বপূর্ণ কাজের জন্য যথেষ্ট সক্ষম নয়। তিনি ‘হ্যালুসিনেশন’ সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এমন তথ্য তৈরি করে, যা দেখতে বিশ্বাসযোগ্য হলেও বাস্তবে ভুল। ওয়েলস নিজেও নিয়মিত লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল ব্যবহার করেন এবং প্রায়ই এ সমস্যার মুখোমুখি হন। লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল তথ্য বিশ্লেষণ বা খসড়া তৈরিতে সহায়ক হলেও এনসাইক্লোপিডিয়া লেখার মতো কাজে এখনো যথেষ্ট পরিপক্ব নয়। প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি ওয়েলস আস্থার বিষয়টিকেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন।
জিমি ওয়েলস জানান, ইলন মাস্কের নিয়ন্ত্রণে থাকা একটি প্ল্যাটফর্মকে মানুষ কতটা নিরপেক্ষ এনসাইক্লোপিডিয়া হিসেবে গ্রহণ করবে। এমন একটি এনসাইক্লোপিডিয়ার প্রতি মানুষের আস্থা তৈরি হবে কি না, যেখানে কোনো ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব স্পষ্টভাবে পড়তে পারে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। উইকিপিডিয়ায় কোনো বিষয় নিয়ে আপত্তি থাকলে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হয়। বিপরীতে, মাস্ক সম্ভবত নিজের অপছন্দের বিষয় একক সিদ্ধান্তেই বদলে ফেলতে পারেন।
মাস্ক নিজের প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরাসরি সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পরিচিত। টুইটার (বর্তমানে এক্স) অধিগ্রহণের পর তিনি অ্যালগরিদমে এমন পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাতে তার পোস্ট ব্যবহারকারীদের ফিডে বেশি করে দেখা যায়। এরই মধ্যে ব্যবহারকারীরা লক্ষ করেছেন, গ্রোকিপিডিয়ার কিছু নিবন্ধ উইকিপিডিয়ার নিবন্ধের সঙ্গে প্রায় হুবহু মিলছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রোকিপিডিয়ার অনেক নিবন্ধ ইলন মাস্কের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে মিল রয়েছে।
গ্রোকিপিডিয়া নিয়ে ইলন মাস্কের পরিকল্পনা যে বড় পরিসরের, তা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। গত নভেম্বরে তিনি একে ‘আধুনিক যুগের আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রন্থাগার’ হিসেবে আখ্যা দেন এবং ভবিষ্যতে এটিকে গভীর মহাকাশে পাঠানোর ইচ্ছার কথাও বলেন। সাইটটির পরিসর বাড়ছে। নভেম্বরের পর গ্রোকিপিডিয়া ‘সংস্করণ শূন্য দশমিক এক’ থেকে ‘সংস্করণ শূন্য দশমিক দুই’–এ উন্নীত হয়েছে। এ সময়ে নিবন্ধসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৮৯ হাজার ৫৭টিতে। তুলনায়, উইকিপিডিয়ায় বর্তমানে নিবন্ধের সংখ্যা ৭০ লাখের বেশি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া