চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের এআই প্রযুক্তি–যুদ্ধে জিতবে কে

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে লড়াই চলছেরয়টার্স

কয়েক দশক ধরেই ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে নানা ভৌগোলিক বিষয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে লড়াই চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়েছে। এআইকে বলা হচ্ছে বৈশ্বিক ক্ষমতার নতুন মুদ্রা। চীন নতুন এই মুদ্রা কাজে লাগিয়ে বেশ ভালোভাবেই চাপে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রকে। ২০১৭ সাল থেকেই চীন এআই উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করতে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। শুধু ২০২৫ সালেই দেশটি রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি খাত মিলিয়ে এআই খাতে প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্বের বৃহত্তম চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেনসেন হুয়াংয়ের মতে, এআই প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র চীনের থেকে খুব বেশি এগিয়ে নেই। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক পেড্রো ডোমিঙ্গোস জানান, চীন এখন যুক্তরাষ্ট্রের সমান গতিতে এগোচ্ছে। তারা বহু বছর ধরে ব্যবধান কমিয়েছে। এখন অগ্রভাগে রয়েছে। আরও এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলে যুক্তরাষ্ট্র অনেক এগিয়ে ছিল, তা আসলে ভুল ধারণা। ডিপসিক, কিউওয়েন-৩ ও কিমি কে২ শক্তিশালী এআই মডেলগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন চীনা সংস্থা ডেভেলপারদের অত্যাধুনিক সরঞ্জাম বিনা মূল্যে ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে।

বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ২০টি এআই মডেলের মধ্যে ১৪টিই চীনের তৈরি। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখনো শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। দ্রুত এআই অগ্রগতি সত্ত্বেও এলএলএমকে দ্রুত প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত চিপ তৈরির ক্ষেত্রে চীন এখনো পিছিয়ে রয়েছে। মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ চীনের অত্যাধুনিক সেমিকন্ডাক্টর ও চিপ তৈরির সরঞ্জামের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে চীন পুরোনো হার্ডওয়্যারের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছে। তবে বিজ্ঞানী ডোমিঙ্গোসের মতে, চীনকে লক্ষ্য করে মার্কিন চিপ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আসলে বিপরীত ফল দিচ্ছে। তারা পুরোনো হার্ডওয়্যার উন্নত করতে উৎসাহিত করছে, যা গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর ইউসি লর এআই ল অ্যান্ড ইনোভেশন ইনস্টিটিউটের পরিচালক রবিন ফেল্ডম্যান এআই প্রতিযোগিতাকে নতুন ধরনের স্নায়ুযুদ্ধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এআই যুদ্ধে সেই দেশই জয়ী হবে, যারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি অর্জন করতে পারবে ও তা ধরে রাখতে পারবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া