তাইওয়ানে ই–বাইকের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি
প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে তাইওয়ানের খ্যাতি দীর্ঘদিনের। সেমিকন্ডাক্টর থেকে শুরু করে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার—সবকিছুতেই তাদের দখল। তবে এই মুহূর্তে তাইওয়ানের রাস্তায় নীরবে ঘটে যাচ্ছে আরও একটি বিপ্লব, আর তা হলো স্মার্ট মোবিলিটি বা বৈদ্যুতিক যাতায়াতব্যবস্থার বিপ্লব। আর এই বিপ্লবের অগ্রভাগে রয়েছে ই–বাইক।
একসময় তাইওয়ান পরিচিত ছিল জায়ান্ট ও মেরিডার মতো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সাইকেল প্রস্তুতকারকদের হাত ধরে। এখন সেই ঐতিহ্যকে পুঁজি করে দেশটি ই–বাইকের এক বিশাল বাজারে পরিণত হয়েছে। শহরের তরুণ পেশাজীবী থেকে শুরু করে সরবরাহকারী—সবার কাছেই এটি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আজ বুধবার গুয়াং হুয়া ডিজিটাল প্লাজার আশপাশে এক বেলা ঘুরে দেখা গেল ই–বাইকের বিপ্লব।
শুধু বাহন নয়, স্মার্ট ডিভাইস
২০২৫ সালের ই–বাইক কেবল ব্যাটারিচালিত একটি সাইকেল নয়, এটি এখন একটি পূর্ণাঙ্গ স্মার্ট ডিভাইস। নতুন মডেলগুলোয় যুক্ত হচ্ছে—
* স্মার্টফোন ইন্টিগ্রেশন: অ্যাপের মাধ্যমে বাইকের ব্যাটারি লাইফ, রাইডিং ডেটা ও জিপিএস অবস্থা জানা যাচ্ছে।
* উন্নত ব্যাটারি প্রযুক্তি: একবার চার্জে আরও বেশি পথ পাড়ি দেওয়ার ক্ষমতা ও দ্রুত চার্জিংয়ের সুবিধা।
* এআই সহকারী: রাস্তা ও আরোহীর প্যাডেলিংয়ের ধরন বুঝে মোটর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই–বাইকের শক্তি নিয়ন্ত্রণ, যা রাইডিংকে আরও সহজ করে তুলছে।
বাজারের বৈচিত্র্য
তাইওয়ানের বাজার শুধু বড় ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। সোকারের মতো অসংখ্য খুচরা বিক্রেতা ও অনলাইন শপ এই বাজারে বৈচিত্র্য এনেছে। তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের ফ্যাট টায়ার বাইক, সহজে বহনযোগ্য ফোল্ডিং ই–বাইক ও আরবান কমিউটার মডেল সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বাজারটি বড় হচ্ছে।
পরিবেশবান্ধব আগামী দিনের পথে
যানজটপূর্ণ শহরে ই–বাইক শুধু দ্রুত যাতায়াতের সমাধানই দিচ্ছে না, এটি কার্বন নিঃসরণ কমাতেও বড় ভূমিকা রাখছে। তাইওয়ানের সরকারও গ্রিন এনার্জি ও টেকসই যাতায়াতব্যবস্থাকে উৎসাহিত করছে। সব মিলিয়ে তাইওয়ান তার প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও সাইক্লিংয়ের প্রতি মানুষের ভালোবাসাকে একত্র করে বৈদ্যুতিক গতিশীলতার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে, যা অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের অনেক শহরের জন্যই একটি মডেল হতে পারে।
ই–বাইকের দামের মধ্যে অনেক বৈচিত্র্য রয়েছে। এটি মূলত ব্র্যান্ড, মোটরের ক্ষমতা, ব্যাটারির রেঞ্জ ও অন্যান্য ফিচারের ওপর নির্ভর করে। বাংলাদেশি টাকায় সর্বনিম্ন প্রায় ৬৬ হাজার টাকা থেকে শুরু। সর্বোচ্চ প্রায় ২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা বা তার বেশি পড়বে। মূলত দামের এই পার্থক্য নির্ভর করে বাইকের মোটরের শক্তি (ওয়াট), ব্যাটারির ক্ষমতা (কত কিলোমিটার চলবে), ব্র্যান্ড ও অতিরিক্ত ফিচারের (যেমন ফ্যাট টায়ার, অ্যাডভান্সড ডিসপ্লে ও সাসপেনশন) ওপর।