গুগলের জিমেইল, ড্রাইভ ও মিটে বিভ্রাট, গুগল কী বলছে
বিশ্বজুড়ে গুগলের বেশ কয়েকটি সেবায় একযোগে বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। এর ফলে জিমেইল, গুগল ড্রাইভ, ডকস ও গুগল মিটসহ নানা সেবা ব্যবহার করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন ব্যবহারকারীরা। গত বৃহস্পতিবার রাতে এই বিভ্রাট শুরু হয়। ঠিক সে সময় বিভ্রাট পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ডাউনডিটেক্টরে গুগলসংশ্লিষ্ট সমস্যার রিপোর্ট হঠাৎ বেড়ে যায়।
গুগলের একাধিক সেবা ব্যবহারে তখন থেকেই ধীরগতি, সংযোগ বিচ্ছিন্নতা ও ত্রুটির অভিযোগ আসতে শুরু করে। অনেক ব্যবহারকারী জিমেইলে ই–মেইল পাঠাতে না পারা, গুগল ড্রাইভে ফাইল খুলতে বিলম্ব ও মিটে ভিডিও কলে সংযোগে বিঘ্নের কথা জানান। বিভ্রাটের প্রভাব পড়ে গুগলের স্মার্ট হোম ডিভাইস ‘নেস্ট’–এও। শুধু গুগলের সেবা নয়, গুগল ক্লাউডের ওপর আংশিক বা পূর্ণ নির্ভরশীল বেশ কিছু জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যেমন জুম, শপিফাই, স্পটিফাই ও পোকেমন গোতেও একই সময়ে বিভ্রাট দেখা দেয়।
বিভ্রাটের পর গুগল দ্রুত ওয়ার্কস্পেস স্ট্যাটাস ড্যাশবোর্ডে এক বিবৃতি দিয়ে জানায়, গুগল ওয়ার্কস্পেসের একাধিক সেবায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ল্যাটেন্সি ও ত্রুটির হার লক্ষ করা যাচ্ছে। পরে সেই বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৫ সালের ১৮ জুলাই সকাল ৮টা ৫৬ মিনিট (যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক সময়) থেকে সমস্যাটি সমাধান করা হয়েছে। একদল ব্যবহারকারী নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গুগলের ওয়ার্কস্পেস সেবা ব্যবহার করতে গিয়ে বিলম্ব ও ত্রুটির সম্মুখীন হন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হার্ডওয়্যার অবকাঠামোয় একটি ত্রুটি এ সমস্যার জন্য দায়ী ছিল। প্রকৌশলীরা দ্রুত বিকল্প পথ ব্যবহার করে ট্রাফিক পুনঃনির্দেশনার মাধ্যমে সেবাগুলোর স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনেন। গুগল আরও জানায়, সমস্যাটি যত দ্রুত সম্ভব সমাধানের জন্য তাদের প্রকৌশলীরা কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ডাউনডিটেক্টরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বিভ্রাটের সময় অন্তত ৪ হাজার ৮০০ ব্যবহারকারী গুগলের বিভিন্ন সেবায় সমস্যার কথা জানান। তাঁদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ ব্যবহারকারী লগইন করতে না পারার কথা বলেন। ৪১ শতাংশ জানান, গুগলের ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে সমস্যা হয়েছে এবং ১৩ শতাংশ জানান, গুগল ড্রাইভ সঠিকভাবে কাজ করছিল না। বিশ্বব্যাপী এই বিভ্রাটের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে বড় শহর ও প্রযুক্তিনির্ভর কর্মকেন্দ্রগুলোয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস ও শিকাগো, ভারতের দিল্লি ও বেঙ্গালুরু, যুক্তরাজ্যের লন্ডন, কানাডার টরন্টো ও অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বড় ধরনের বিভ্রাটের ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত ছোট শহর ও গ্রামীণ এলাকায় এর প্রভাব তুলনামূলক কম ছিল। সেসব জায়গায় মূলত ধীরগতির সংযোগ, গুগল মিটে ভিডিও ল্যাগ ও ওয়েবসাইট লোড হতে বিলম্বের মতো সমস্যা দেখা গেছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া