স্ন্যাপচ্যাটে জীবন বাঁচানোর নতুন ফিচার

হৃদ্‌রোগে আক্রান্তের প্রাথমিক চিকিৎসা শেখাবে স্ন্যাপচ্যাট

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম স্ন্যাপচ্যাট নিয়ে এসেছে এক নতুন সুবিধা। এটি কার্ডিও-পালমোনারি রিসাসিটেশন বা সিপিআর পদ্ধতি নিয়ে কাজ করবে। যা বাঁচিয়ে দিতে পারে কারও জীবন। আর এই নতুন ফিচারের তথ্য জানিয়েছেন আফ্রিকান বংশোদ্ভূত সাবেক ব্রিটিশ ফুটবলার ফ্যাব্রিস মুয়াম্বা। ২০১২ সালে খেলার মাঠে অকস্মাৎ তিনি হৃদ্‌রোগে (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট) আক্রান্ত হয়েছিলেন।

স্ন্যাপচ্যাটের ব্যবহারকারীরা অ্যাপটির লেন্সেস সেকশনে সুবিধাটি খুঁজে পাবেন। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে আক্রান্ত ব্যক্তির বুকে কীভাবে চাপ দিতে হয়, ব্যবহারকারীদের তা শিখতে সাহায্য করবে ক্যামেরা ফিল্টারটি। এরপর কিছু কুইজও দেবে। যাতে জানা যাবে, কতটুকু শিখেছেন সেই ব্যবহারকারী।

সাবেক ফুটবলার মুয়াম্বা ২০১২ সালে খেলার মাঠে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে প্রাথমিক চিকিৎসা সিপিআর যে সবার জেনে রাখা ভালো, সেটির গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিবিসি নিউজকে তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আমি খুবই ভাগ্যবান ছিলাম। কারণ, যখন আমার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়, তখন আমি জরুরি চিকিৎসাসেবা পেয়েছিলাম।’

সিপিআরের গুরুত্ব উল্লেখ করে মুয়াম্বা বলেন, ‘এখন তরুণেরা বাইরে অধিকাংশ সময় বন্ধুদের সঙ্গে কাটান। তাঁরা যদি এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন আর সিপিআর কীভাবে করতে হয়, তা অজানা থাকে, তবে খুবই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হবেন। কিন্তু স্ন্যাপচ্যাট লেন্সের মাধ্যমে যদি আপনি শিখতে পারেন যে কীভাবে সিপিআর করতে হয়, তবে আপনার বন্ধু অকস্মাৎ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হলেও তাঁর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকবে।’

ইন্টারন্যাশনাল লিয়াজোঁ কমিটি অন রেসকিউশনের তথ্য অনুযায়ী, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে ২০ শতাংশের কম মানুষ প্রাথমিক চিকিৎসা পেয়ে থাকেন। অথচ অন্য ব্যক্তিদের সামনেই ৭০ শতাংশ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঘটনা ঘটে।

২০১২ সালে ফুটবলার ফ্যাব্রিস মুয়াম্বা ছিলেন ২৩ বছরের তরুণ। সেদিন তিনি এফএ কাপে বোল্টন ওয়ান্ডারার্সের হয়ে খেলছিলেন। প্রতিপক্ষ ছিল টটেনহাম হটস্পার। খেলার মাঠেই তাঁর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। চিকিৎসকেরা ছয় মিনিট ধরে তাঁকে চিকিৎসাসেবা দেন। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তিনি ‘মৃতই’ ছিলেন বলা যায়।

ফ্যাব্রিস মুয়াম্বা সে ঘটনার কথা মনে করে বলেন, ‘যদি আমার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বাসায় হতো, তবে আজ হয়তো আমরা এই আলোচনা করতে পারতাম না। ঠিক এ কারণে আমি স্ন্যাপচ্যাটের সঙ্গে কাজ করছি। মানুষ যাতে সিপিআরের গুরুত্ব বুঝতে পারে। আশা করি, সবাই এ সুবিধার মাধ্যমে সিপিআরের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। এ ছাড়া হঠাৎ কারও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা তৈরি হবে।’

অ্যাপল ও গুগল অ্যাপ স্টোরে সিপিআর নিয়ে অনেক অ্যাপ রয়েছে। যেগুলো অনেক জনপ্রিয়। তবে স্ন্যাপচ্যাট বলছে, প্রতিদিন ৩ কোটি ৪৭ লাখ মানুষ এ অ্যাপ ব্যবহার করেন।

মুয়াম্বা বলেন, ‘সবাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেন। ফলে স্ন্যাপচ্যাট দিয়ে সিপিআরের জরুরি প্রাথমিক চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে মানুষকে জানাতে কেন অনুপ্রাণিত করব না? ফিচারটি ব্যবহার করা সহজ। শুধু আগ্রহী হতে হবে। আপনি এর মাধ্যমে জানতে পারবেন, কীভাবে সিপিআর কাজ করে। তাই তরুণদের স্ন্যাপচ্যাটের এই ফিচার নিয়ে উৎসাহ দেওয়া দরকার। যাঁদের ফোনে স্ন্যাপচ্যাট রয়েছে, তাঁদের সবাইকে অনুপ্রাণিত করছি, লেন্স ফিচার দিয়ে সিপিআর শিখতে। এতে করে হঠাৎ কারও হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হলে বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।’