স্মার্টফোন কেনায় এ বছর যেসব বিষয় বিবেচনা করছেন ক্রেতারা
নতুন স্মার্টফোন কেনার সময় দাম একটি বিবেচ্য বিষয়। চলতি বছরের ছুটির মৌসুম সামনে রেখে অনেকেই নতুন ফোন কেনার পরিকল্পনাও করছেন। তবে প্রশ্ন হলো, নতুন স্মার্টফোনের জন্য মানুষ কত টাকা খরচ করতে আগ্রহী? ১ হাজার ডলার দামের ‘ফ্ল্যাগশিপ’ ফোন, নাকি ৫০০ ডলার দামের মধ্যম সারির একটি ফোনই অধিকাংশের পছন্দ? সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েড অথরিটি ২০২৪ সালে ক্রেতাদের স্মার্টফোন কেনার জন্য বিবেচ্য বিষয় কী, তা নিয়ে এক জরিপ পরিচালনা করেছে। প্রযুক্তিভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির পাঠকদের মতামত নিয়ে করা এ জরিপের ফলাফলও প্রকাশিত হয়েছে।
সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষের মতামতের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এ জরিপ থেকে জানা গেছে, বেশি দামি ফ্ল্যাগশিপ ফোনের জনপ্রিয়তা কমছে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪৩ দশমিক ৫৮ শতাংশই ৪৯৯ ডলার বা এর কম দামের স্মার্টফোন কিনতে আগ্রহী। এ দামের মধ্যে মধ্যম সারির ফোন কিনতে পাওয়া যায়।
অন্যদিকে ৩২ দশমিক ৯৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী ৪৯৯ থেকে ৯৯৯ ডলার দামের মধ্যে স্মার্টফোন কিনতে চান। ফলে এটি প্রমাণ করে, ফ্ল্যাগশিপ ফোনের প্রতি মানুষের আগ্রহ এখনো রয়েছে। তবে ৯৯৯ ডলারের বেশি উচ্চ মূল্যের শীর্ষস্থানীয় ফোন বা ভাঁজযোগ্য স্মার্টফোনের প্রতি চাহিদা তুলনামূলক কম। মাত্র ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী ১ হাজার ডলারের বেশি দামের ফোন কিনতে আগ্রহী। এর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এ বছর কোনো নতুন স্মার্টফোন কেনার পরিকল্পনা করেনি।
কেনার সিদ্ধান্তে কী প্রভাব ফেলছে
জরিপে দেখা গেছে, নতুন স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে মানুষের পছন্দ ও অগ্রাধিকার ভিন্ন। কেউ বিশেষ ছাড়ের সুযোগ নিচ্ছেন, কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদি সফটওয়্যার সমর্থনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। পাঠকদের মতামত থেকে কেনার সিদ্ধান্তের পেছনে থাকা কারণগুলো উঠে এসেছে।
একজন অংশগ্রহণকারী বলেন, ‘গুগল ফাইয়ের অফার থেকে ২৯৯ ডলারে পিক্সেল ৮এ কিনেছি জুন মাসে। এ ধরনের সুবিধা হাতছাড়া করার কোনো সুযোগ ছিল না, বিশেষ করে যেহেতু তখনই একটি নতুন ফোনের প্রয়োজন ছিল। ফোনটি পেয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট এবং দীর্ঘদিন এটি ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছি।’ ফলে এটি প্রমাণ করে, মূল্যছাড় অনেক সময় ক্রেতাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে বড় ভূমিকা রাখে।
অন্য একজন জানিয়েছেন, ‘স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ২ চিপসেটসহ স্যামসাং এস২৩ ফোন ৫০০ ডলারে কিনেছি। এটি ছিল আমার জীবনের অন্যতম সেরা সিদ্ধান্ত।’ ধারণা করা যায়, তিনি বিশেষ ছাড়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফ্ল্যাগশিপ ফোনটি কিনেছেন।
তবে সব ক্রেতার কাছে স্মার্টফোনের গুরুত্ব সমান নয়। এক অংশগ্রহণকারী বলেছেন, ‘একটি ভালো স্মার্টওয়াচ কেনার পর থেকে দেখেছি, ফোনটি শুধু একটি ব্যাকএন্ড সার্ভারের মতো কাজ করছে। এটি বেশির ভাগ সময় চার্জিং ডকে থাকে। গুগল যখন সাত বছরের সফটওয়্যার হালনাগাদ দিচ্ছে, তখন পিক্সেল ৮ প্রো হয়তো ৮ থেকে ৯ বছর এমনিতেই টিকে থাকবে। আপগ্রেড করার কথা ভাবলে কেবল ঘড়ির দিকেই মনোযোগ দেব।’
অনেকেই বাজেটের মধ্যে ভালো স্মার্টফোন পেতে কম পরিচিত ব্র্যান্ডও বেছে নিচ্ছেন। মূল্য সংবেদনশীলতা ক্রেতাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে বড় প্রভাব ফেলে। এক অংশগ্রহণকারী মন্তব্য করেন, ‘আমি আর্থিকভাবে সচ্ছল, কিন্তু একটি ফোনের জন্য এক হাজার ডলার খরচ করাকে আমি অপচয় মনে করি। যখন অর্ধেক দামে খুব ভালো ফোন পাওয়া যায়, তখন অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের কোনো মানে নেই।’
জরিপের চিত্র
এ জরিপ থেকে বোঝা যায়, স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে মানুষের চাহিদা ও পছন্দ ক্রমে পরিবর্তিত হচ্ছে। বাজারে সাশ্রয়ী মূল্যের ফোনগুলোর চাহিদা বাড়ছে। বিশেষ করে অফার, ছাড় এবং প্রযুক্তির দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারিক সুবিধা ক্রেতাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলছে।
সূত্র: অ্যান্ড্রয়েড অথরিটি