২০৭৫ সালের মধ্যেই মিলবে ভিনগ্রহী প্রাণের খোঁজ

মহাকাশছবি: রয়টার্স

এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? মানবজাতির অন্যতম প্রাচীন এই জিজ্ঞাসার উত্তর জানতে দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আর মাত্র কয়েক দশক বাকি রয়েছে বলে দাবি করেছেন যুক্তরাজ্যের অন্যতম শীর্ষ মহাকাশবিজ্ঞানী ম্যাগি অ্যাডেরিন-পোকক। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, পৃথিবীর বাইরেও প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে এবং ২০৭৫ সালের মধ্যেই বিজ্ঞানীরা এর প্রমাণ পাবেন। মহাবিশ্বের বিশালতা বিচার করলে এটি অসম্ভব যে কেবল পৃথিবীতেই প্রাণের বিকাশ ঘটেছে।

অ্যাডেরিন-পোককের যুক্তির মূলে রয়েছে বিজ্ঞানের সংখ্যার খেলা। মহাবিশ্বে রয়েছে কয়েক শ বিলিয়ন গ্যালাক্সি। প্রতিটি গ্যালাক্সিতে রয়েছে শত শত কোটি নক্ষত্র। এই সব নক্ষত্রের অধিকাংশেরই নিজস্ব গ্রহ রয়েছে। তাঁর মতে, এত বিপুলসংখ্যক গ্রহের মধ্যে কেবল পৃথিবীতে প্রাণ থাকবে, এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা গাণিতিকভাবে অত্যন্ত কম। পরিসংখ্যানে বলছে, অন্য কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি।

একটা সময় ভিনগ্রহী প্রাণের খোঁজ ছিল কেবল তাত্ত্বিক আলোচনা। এখন সময় বদলেছে। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মতো শক্তিশালী প্রযুক্তির কল্যাণে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এখন বহু দূরের গ্রহের বায়ুমণ্ডল বিশ্লেষণ করতে পারছেন। তাঁরা সেখানে এমন কিছু গ্যাসের উপস্থিতি খুঁজছেন, যা কেবল জৈবিক প্রক্রিয়ায় তৈরি হওয়া সম্ভব। এখন প্রশ্ন বদলে গেছে। প্রাণ কি আছে তার বদলে আমরা কত দ্রুত এর প্রমাণ পাব, তা জানার কাজ চলছে।

সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে কে২-১৮বি নামের একটি গ্রহ, যার বায়ুমণ্ডলে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদানের অস্তিত্ব মিলেছে, যা প্রাণ–সম্পর্কিত হতে পারে। অ্যাডেরিন-পোকক এই সব আবিষ্কারকে ভীষণ কৌতূহল উদ্দীপক বলে অভিহিত করেছেন। যদিও তিনি সতর্ক করে জানান, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে আরও পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন। সায়েন্স ফিকশন সিনেমায় যেমন বুদ্ধিমান বা উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন এলিয়েন দেখানো হয়, প্রথম আবিষ্কারে তেমন কিছু হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন পোকক। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রথম আবিষ্কার হতে পারে অণুজীব বা ব্যাকটেরিয়ার মতো ক্ষুদ্র কোনো প্রাণ।’ এই ধরনের সরল প্রাণের বিকাশ ও টিকে থাকা জটিল প্রাণীর চেয়ে অনেক বেশি সহজ। তিনি অবশ্য মহাবিশ্বের অন্য কোথাও উন্নত সভ্যতার সম্ভাবনাকেও একেবারে উড়িয়ে দেননি।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া