টিকটক ও ফেসবুকে পক্ষপাতের কবলে কনটেন্ট নির্মাতারা

টিকটক-ফেসবুকরয়টার্স

টিকটক-ফেসবুকের বিরুদ্ধে কনটেন্ট নির্মাতাদের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। টিকটকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভিডিও বিনিময়ের নেটওয়ার্কটিতে দুই স্তরের কনটেন্ট ব্যবস্থাপনা বা মডারেশন সিস্টেম রয়েছে। এতে জনপ্রিয় ভিডিও নির্মাতা, তারকা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কনটেন্ট অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। ফলে সাধারণ ভিডিও নির্মাতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একই অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকের বিরুদ্ধেও।
জানা গেছে, ৫০ লাখেরও বেশি অনুসারী (ফলোয়ার) থাকা অ্যাকাউন্টগুলোয় বাড়তি সুবিধা দিয়ে থাকে টিকটক। এমনকি কনটেন্ট নীতিমালা ভঙ্গ করলেও তাঁদের প্রতি কঠোর না হয়ে তাঁদের ভিডিওগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রচার করা হয়। এ জন্য জনপ্রিয় ব্যক্তি বা ভিডিও নির্মাতাদের অ্যাকাউন্টগুলোকে ‘ক্রিয়েটর লেবেল’ হিসেবে আগেই চিহ্নিত করে টিকটক।

আরও পড়ুন

গত বছর টিকটকের এক অভ্যন্তরীণ বৈঠকে প্রতিষ্ঠানটির ট্রাস্ট অ্যান্ড সেফটি বিভাগের সদস্য প্রথম ‘ক্রিয়েটর লেবেল’ বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই লেবেলের কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের বিশেষ ব্যবহারকারী হিসেবে দেখা হবে। প্রথম শ্রেণির কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে তাঁদের কনটেন্ট আলাদাভাবে সম্পাদনা করা হবে। সাধারণ নির্মাতারা থাকবেন দ্বিতীয় শ্রেণির কনটেন্ট নির্মাতার তালিকায়।

বৈঠকে আরও জানানো হয়, প্রথম শ্রেণির কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের প্রতি নমনীয়তা দেখাতে হবে। এ জন্য বিখ্যাত ব্যক্তি বা প্রথম শ্রেণির ক্রিয়েটর টিকটকের নীতিবহির্ভূত কোনো পোস্ট দিলেও তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

জনপ্রিয় ও ক্ষমতাবানদের জন্য নিয়মকানুন শিথিল করা সামাজিক যোগাযোগের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নতুন নয়। এর আগে টুইটার, ইউটিউব ও স্পটিফাইয়ের মতো প্রতিষ্ঠানও শীর্ষ তারকা, সংবাদমাধ্যম ও বিশ্বনেতাদের জন্য তাদের নিয়মকানুন পরিবর্তন করেছে। এ ক্ষেত্রে সবার আগে আসে টিকটকের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ফেসবুকের নাম। এ ধরনের পদ্ধতি থাকার কথা স্বীকারও করেছে ফেসবুক। মেটার মালিকানাধীন ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের কিছু অ্যাকাউন্টকে মডারেশন প্রক্রিয়ায় নিয়মিত ছাড় দেওয়া হয়, যা ‘এক্স চেক’ নামে পরিচিত। মূলত এ পদ্ধতির মাধ্যমে বিভিন্ন তারকা, জনপ্রিয় ব্যক্তি, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের অ্যাকাউন্টকে সুরক্ষা দেওয়া হয়। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে এ কার্যক্রমের সমালোচনা করে বলা হয়, মেটার এ পদ্ধতি অবিশ্বাস সৃষ্টি করে, পক্ষপাত দুষ্ট হতে সহায়তা করে।

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে স্ট্যানফোর্ড ল স্কুলের অধ্যাপক ইভলিন ডুক বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলো জনপ্রিয় বা শীর্ষ অ্যাকাউন্টগুলোকে বিশেষভাবে বিবেচনার পেছনে অভ্যন্তরীণভাবে কোনো ক্ষতিকর উদ্দেশ্য নেই। এটা মূলত গুণ-মান নিশ্চিত করার একটি পদ্ধতি। তবে এ ধরনের পদ্ধতি খুব সহজেই অপব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে এর পেছনে যখন আর্থিক উদ্দেশ্য থাকে, তখন তা গুরুতর হয়ে ওঠে।
সূত্র: ফোর্বস

আরও পড়ুন