একদিন মানুষের শরীর থেকে স্মার্টফোন চার্জ করা যাবে

মুঠোফোনের জনক মার্টিন কুপার
রয়টার্স

শিশুদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্মার্টফোনের অন্ধকার দিক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুঠোফোনের জনক মার্টিন কুপার। পাশাপাশি নতুন প্রযুক্তিতে আশাও রাখছেন তিনি। মার্টিন কুপার বলেন, শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সীমা থাকা দরকার। এ ছাড়া ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহারকারীর জন্য ভিন্ন ভিন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা থাকতে পারে। তিনি এ–ও স্বপ্ন দেখেন একদিন মানুষের শরীর থেকেই মুঠোফোন চার্জ করা যাবে।

স্পেনের বার্সেলোনায় সদ্য সমাপ্ত মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে (এমডব্লিউসি) বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। মুঠোফোন ও টেলিযোগাযোগ–প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় এই আয়োজনে এবার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার গ্রহণ করেছেন মার্টিন কুপার।

আজ থেকে ৫০ বছর আগে মুঠোফোন (সেলুলার ফোন) উদ্ভাবন করেন কুপার। লম্বা অ্যান্টেনাসহ ইট আকৃতির এই যন্ত্র কাজ করবে কি না, তা নিয়ে তখন উদ্বিগ্ন ছিলেন তিনি। কিন্তু আজ অন্য অনেকের মতো নিজেও নিজের উদ্ভাবন সমাজের ওপর কেমন প্রভাব ফেলছে তা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা করেন। আর এই দুশ্চিন্তায় স্থান পায় মানুষের গোপনীয়তা হারানো থেকে ইন্টারনেট আসক্তির ঝুঁকি, ক্ষতিকর আধেয় (কনটেন্ট) দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার মতো বিষয়, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে।

কুপার বলেন, ‘আমার সবচেয়ে নেতিবাচক মতামত হলো আমাদের আর কোনো গোপনীয়তা অবশিষ্ট নেই। কারণ, আমাদের সম্পর্কিত সবকিছু কোথাও সংরক্ষণ হচ্ছে এবং সেগুলো পেতে মরিয়া এমন কারও জন্য তা পাওয়া সহজ।’

মুঠোফোনের নকশা ও কার্যক্ষমতা অনেক দূর এগোনোয় বিস্ময় প্রকাশ করেন ৯৪ বছর বয়সী মার্টিন কুপার। তাঁর বিশ্বাস, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো ক্ষেত্রগুলোয় প্রযুক্তির সবচেয়ে ভালো দিন এখনো আসেনি। কুপার বলেন, ‘মুঠোফোন, চিকিৎসা প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা রোগকে জয় করতে যাচ্ছি।’ ডিক ট্রেসির রেডিও হাতঘড়ি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সেলফোন উদ্ভাবন করা কুপার বলেন, ‘আমি এমন এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখি, যেখানে মানুষের শরীর থেকেই মুঠোফোন চার্জ হবে।’

১৯৭৩ সালের ৩ এপ্রিল নিউইয়র্ক সিটির রাস্তায় একটি প্রোটোটাইপ ব্যবহার করে হাতে বহনযোগ্য টেলিফোন থেকে প্রথমবার ফোন কল করেছিলেন। যে প্রোটোটাইপটি মটোরোলায় তাঁর দল ওই দিন থেকে মাত্র পাঁচ মাস আগে নকশা করতে শুরু করেছিল।

কুপার বলেন, ‘ওই সময় আমি কেবল একটি বিষয় নিয়েই উদ্বিগ্ন ছিলাম, এটা কি কাজ করবে? এটা কাজ করেছিল।’

ওই ফোনটিই সেলফোন বিপ্লবের শুরু হতে সাহায্য করেছিল। সেই দিনের কথা স্মরণ করে কুপার স্বীকার করেন, ‘আমরা জানতাম না যে, সেটি ছিল ঐতিহাসিক এক মুহূর্ত।’
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস