ছুটির দিনে জমজমাট ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা

ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়প্রথম আলো

আজ শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই জমজমাট ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা প্রাঙ্গণ। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) চলা এ মেলায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অবস্থান করে প্রায় প্রতিটি স্টল বা প্যাভিলিয়নে দর্শনার্থীর ভিড় দেখা গেছে।

‘ডিজিটাল বাংলাদেশের সংযুক্তির মহাসড়ক’ স্লোগানে চলা এ মেলায় শিক্ষার্থীসহ প্রযুক্তিপ্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্যাভিলিয়ন। সেখানে সবাই ফরম পূরণ করতে ব্যস্ত। কারণ খুঁজতেই জানা গেল আসল ঘটনা। পছন্দের অপারেটরের ‘গোল্ডেন নম্বর’ নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

আরও পড়ুন

মেলায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) নিজেদের বিভিন্ন প্রযুক্তি ও কার্যক্রম তুলে ধরছে। প্রতিষ্ঠানটির সহকারী ব্যবস্থাপক মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘মেলা উপলক্ষে বিটিসিএলের বিভিন্ন সেবা প্রদর্শন করছি আমরা। আমাদের প্যাভিলিয়নে ল্যান্ডফোন সংযোগ, আইপিফোন, কলিং–ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপসহ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট–সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারছেন দর্শনার্থীরা।’

মেলায় ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন সেবা ‘নগদ’ নিজেদের বিভিন্ন সুবিধা তুলে ধরছে। নগদের কি–অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার (বিজনেস সেলস) মো. আবদুল্লাহ আল ফাহিম বলেন, ‘মেলায় আমরা নগদের উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন দিক সবার কাছে তুলে ধরছি। দর্শনার্থীদের নগদ অ্যাকাউন্টও খুলে দিচ্ছি আমরা।’

আরও পড়ুন

মেলায় মুঠোফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ই-সিম ও সাধারণ সিম পরিবর্তন করে দিচ্ছে। গ্রামীণফোনের গ্রাহকসেবা বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘মেলার আগত দর্শনার্থীদের ফাইভ-জি প্রযুক্তির সুবিধা সম্পর্কে জানার সুযোগ দিচ্ছে গ্রামীণফোন।’

মুঠোফোন অপারেটর রবিও নিজেদের প্যাভিলিয়নে ফাইভ-জি প্রযুক্তি সম্পর্কে দর্শনার্থীদের ধারণা দিচ্ছে। এখানেই কথা হয় মোহাম্মদপুর থেকে স্ত্রীসহ মেলা ঘুরতে আসা কম্পিউটার হার্ডওয়্যার প্রকৌশলী আবদুল্লাহ বিন আশিকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আগামী দিন আমাদের সবকিছুই প্রযুক্তিনির্ভর হবে। ফাইভ-জি প্রযুক্তিতে আমরা কী কী সুবিধা ব্যবহারের সুযোগ পাব, তা জানতেই রবির প্যাভিলিয়নে এসেছি।’

মেলায় নিজদের সুপার অ্যাপের উল্লেখ্যযোগ্য দিক তুলে ধরছে বাংলালিংক। প্রতিষ্ঠানটির ডিজিটাল সেবা বিভাগের ব্যবস্থাপক আরিফ আল মান্নান বলেন, ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন, খেলাসহ বাংলালিংকের সব ডিজিটাল সেবা এখন একটি অ্যাপেই পাওয়া যায়। এবারের মেলায় অ্যাপটির পাশাপাশি ফাইভ-জি প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছি আমরা।

সরকারি মালিকানাধীন দেশীয় মুঠোফোন অপারেটর টেলিটকও নিজেদের প্যাভিলিয়নে ফাইভ-জি প্রযুক্তি সম্পর্কে দর্শনার্থীদের বিভিন্ন তথ্য জানার সুযোগ করে দিয়েছে।

মেলায় নিজেদের তৈরি বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্য প্রদর্শন করছে দেশের সবচেয়ে বড় ইলেকট্রনিক পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। প্রতিষ্ঠানটির সহকারী জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক আল-ইমরান খান বলেন, ‘নিজেদের তৈরি ডিজিটাল পণ্যের পাশাপাশি আধুনিক স্মার্ট বোর্ডও প্রদর্শন করছে ওয়ালটন। ইন্টারনেটযুক্ত এই বোর্ড শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা যায়।’

মেলার মূল আয়োজক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় হলেও বাস্তবায়ন সহযোগী হিসেবে রয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হকের সঙ্গে। মেলা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে ফাইভ-জি প্রযুক্তি জানাতেই এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সারা পাচ্ছি আমরা।’

শেষ দিনের আয়োজন

মেলার শেষ দিন শনিবার বেলা ১১টার সময় ‘নিরাপদ ডিজিটাল সমাজ: রাষ্ট্রের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হবে। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। একই দিন একই সময় হবে ‘স্মার্ট সিটি বিনির্মাণে প্রযুক্তির মহাসড়কে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম সেমিনারে প্রধান অতিথি থাকবেন। মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।