বিদায় ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার

প্রায় ২৭ বছর চালানোর পর ওয়েবসাইট দেখার সফটওয়্যার (ব্রাউজার) ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার বন্ধের ঘোষণা দেয় মাইক্রোসফট করপোরেশন।

ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের সমাধিফলক। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ক্যাফেতে সফটওয়্যার প্রকৌশলী জুং কি–ইয়ং এটা বসান। গত বছর ১৭ জুন ক্যাফের ছাদ থেকে তিনি ছবিটি তুলেছেন। ফলকে লেখা আছে ‘অন্যান্য ব্রাউজার ডাউনলোড করার জন্য সে এক ভালো টুল ছিল’রয়টার্স

১৫ জুন ২০২২
ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার বন্ধের ঘোষণা
প্রায় ২৭ বছর চালানোর পর ওয়েবসাইট দেখার সফটওয়্যার (ব্রাউজার) ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার বন্ধের ঘোষণা দেয় মাইক্রোসফট করপোরেশন। ২০২২ সালের ১৬ জুন নিজেদের এজ ব্রাউজারের সুবিধার জন্য ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার আর না চালানোর এ ঘোষণা আসে মাইক্রোসফটের কাছ থেকে। তবে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের দু–একটা সংস্করণে এটি এখনো ব্যবহার করা যায়।

ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ছিল বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ব্রাউজার। ২০০৩ সালে ৯৫ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এক্সপ্লোরার ব্যবহার করতেন। গত শতকের নব্বই দশকে প্রভাবশালী ব্রাউজার নেটস্কেপ নেভিগেটরের জায়গা দখল করে আলোচনায় আসে এক্সপ্লোরার। মাইক্রোসফট তাদের উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের সঙ্গে এক্সপ্লোরার বিনা মূল্যে জুড়ে দিয়ে অ্যান্টিট্রাস্ট মামলার মুখোমুখি হয়। আইনি লড়াইয়ে শর্ত সাপেক্ষে জিতে গেলে তখন থেকে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার জনপ্রিয় হতে থাকে। ২০০৪ সালে মজিলা ফায়ারফক্স এবং ২০০৮ সালে গুগল ক্রোম বাজারে এলে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার জনপ্রিয়তা হারাতে থাকে। এর ব্যবহার কমে যেতে থাকে। আর মাইক্রোসফটও তাদের এজ ব্রাউজাের দিকে বেশি নজর দিতে থাকে।

এক্সপ্লোরার বন্ধের ঘোষণার পর দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়াংজুর একটি ক্যাফেতে সফটওয়্যার প্রকৌশলী জুং কি–ইয়ং নিজের নকশায় একটি সমাধিফলক স্থাপন করেন। ফলকে এক্সপ্লোরার চালু ও বন্ধের তারিখের সঙ্গে লেখা আছে ‘অন্যান্য ব্রাউজার ডাউনলোড করার জন্য সে এক ভালো টুল ছিল।’ জুং কি–ইয়ং ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার পছন্দও করতেন, আবার ঘৃণাও ছিল এই ব্রাউজারের প্রতি। আবেগ থেকেই তিনি সমাধিফলক তৈরি করেন বলে গতবছর ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে বলেছেন কি–ইয়ং।

জে ফরেস্টার (বাঁয়ে) এবং ওয়ার্লউইন্ড কম্পিউটারে তাঁর তৈরি কোর মেমোরি
উইকিপিডিয়া

১৫ জুন ১৯৪৯
কোর মেমোরির ধারণা দিলেন এমআইটির অধ্যাপক
সেটা মাইক্রোপ্রসেসর উদ্ভাবনের আগের জমানা। নিজের নোটবইতে ১৯৪৯ সালের ১৫ জুন কম্পিউটারের ‘কোর মেমোরি’র ধারণা লিখে রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) অধ্যাপক জে রাইট ফরেস্টার। ফরেস্টার পরে তাঁর ধারণায় তৈরি চৌম্বকীয় বা ম্যাগনেটিক কোর মেমোরি সেই সময়ের ওয়ার্লউইন্ড কম্পিউটারে যুক্ত করেন। কোর মেমোরি তখন কম্পিউটারকে আরও নিখুঁত, আরও গতিশীল ও সহজে ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছিল। ১৯৭০-এর দশকে সেমিকন্ডাক্টরেরে উন্নয়নের আগপর্যন্ত তথ্য রাখার এই কোর মেমোরি ব্যবস্থা বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।
র‌্যান্ডম অ্যাকসেস মেমোরির (র‌্যাম) পূর্বসূরির উদ্ভাবক হিসেবে জে ফরেস্টারকে সব সময় মনে রাখা হয়। ১৯১৮ সালের ১৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের নেব্রেস্কায় জন্মগ্রহণ করেন ফরেস্টার। ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর তিনি মারা যান।

সূত্র: রয়টার্স, কম্পিউটার হিস্ট্রি ডট ওআরজি