মাইক্রোসফটের এক শীর্ষ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করতে চাপ ট্রাম্পের, কারণ কী
মাইক্রোসফটের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রেসিডেন্ট লিসা মোনাকোকে বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প মোনাকোকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ এবং ‘পুরোপুরি ট্রাম্পবিরোধী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর দাবি, মোনাকোর উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি। পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে মাইক্রোসফটের বড় বড় চুক্তি রয়েছে। সেই অবস্থায় লিসা মোনাকোর মতো একজনের দায়িত্ব পালন একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। তাঁর সব নিরাপত্তা ছাড়পত্র (সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স) সরকার বাতিল করেছে। তাঁকে জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত তথ্য থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ফেডারেল ভবনে প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপর তিনি স্পষ্ট করে জানান, আমার মতে, মাইক্রোসফটের এখনই তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত।
লিসা মোনাকো গত জুলাইয়ে মাইক্রোসফটে যোগ দেন। বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে মাইক্রোসফটের সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করেন তিনি। মোনাকো দীর্ঘদিন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসনে জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক শীর্ষ উপদেষ্টা ছিলেন। ২০২১ সালে ট্রাম্প সমর্থকদের ক্যাপিটাল হিলে হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগের প্রতিক্রিয়া পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সর্বশেষ জো বাইডেন প্রশাসনে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ট্রাম্পের ক্ষোভের মূল কারণ এখানেই। বাইডেন প্রশাসনের বিচার বিভাগ তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় পদক্ষেপ নেয়। ট্রাম্প মনে করেন, সে প্রক্রিয়ায় মোনাকোর প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। তাই মাইক্রোসফটে তাঁর নিয়োগকে তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসারই বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন।
লিসা মোনাকোকে ঘিরে নতুন এই বিতর্ক মাইক্রোসফটকে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে। এদিকে মাইক্রোসফটের করা বিভিন্ন সরকারি চুক্তি ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড নিয়েও সমালোচনা রয়েছে। সম্প্রতি সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নজরদারির অভিযোগ ওঠার পর ইসরায়েলের এক সামরিক ইউনিটকে নির্দিষ্ট কিছু ক্লাউড সেবা দেওয়া বন্ধ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের প্রকাশ্য হস্তক্ষেপ কোম্পানিটিকে নতুন চাপের মুখে ফেলেছে।
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে প্রকাশ্যে আক্রমণ করা ট্রাম্পের জন্য নতুন কিছু নয়। কয়েক দিন আগেই তাঁর দীর্ঘদিনের বিরোধী সাবেক এফবিআই পরিচালক জেমস কোমির বিরুদ্ধে ‘অবরোধ’ ও ‘মিথ্যা সাক্ষ্য’সংক্রান্ত অভিযোগ আনা হয়েছে। ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ আরও অনেকে দেখতে পারেন।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে