শেরপুরের কাকরকান্দি গ্রামে বিদ্যুতের লোডশেডিং কমল

ফ্রিল্যান্সিং
রয়টার্স

তরুণ ফ্রিল্যান্সারদের টানা কাজ করার জন্য শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি গ্রামে বিদ্যুতের লোডশেডিং কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২৩ আগস্ট প্রথম আলো অনলাইনে ‘কাকরকান্দি গ্রামে বসেই ডলার আয় করেন তৃষ্ণা দিও’ শিরোনামের প্রতিবেদনে ফ্রিল্যান্সার তৃষ্ণা দিও–র বরাতে উল্লেখ করা হয়েছিল কাকরকান্দি গ্রামে প্রতিদিনই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে আইপিএস ব্যবহার করেও ল্যাপটপ বা কম্পিউটার দীর্ঘক্ষণ চালানো যায় না। তৃষ্ণা দিও বলেছিলেন, ‘বিদ্যুৎ থাকলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করে মাসে আমার আয় হতো দুই লাখ টাকা।’

এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে অবস্থার উন্নতি দেখা যাচ্ছে। তৃষ্ণা দিও আজ শনিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগের মতো এখন বিদ্যুৎ যাচ্ছে না। ২৪ আগস্ট থেকে বলতে গেলে যায়ই না। আর যেটুকু সময় লোডশেডিং থাকে, তাতে সমস্যা হচ্ছে না। আমাদের ৬ নম্বর কাকরকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিয়ামুল কাউসার আমার খোঁজখবর নিচ্ছেন। গ্রামের ছেলেমেয়েদের ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে ধারণা দিতে একটি সেমিনারের আয়োজনও করছেন তিনি। আমরা আমাদের গ্রামকে আরও সুন্দর করে তোলার স্বপ্ন দেখছি। তবে গ্রামবাসীর অনেকেই সচ্ছল নন। সন্তানের জন্য কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রের খরচ বহন করা তাঁদের জন্য কষ্টকর।’

নালিতাবাড়ীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভীন আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিবেদনটি আমি পড়েছি। তারপরই এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জায়গায় কথা বলে পদক্ষেপও নিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে ইউনিয়নগুলোতে বিদ্যুতের লোডশেডিং কমানো যায়।’

হেলেনা পারভীন তরুণ ফ্রিল্যান্সারদের কাজের ব্যাপারে সহযোগিতার কথাও জানান। তিনি বলেন, ‘তৃষ্ণা দিও–র মতো ছেলেমেয়েরা যাতে ভালোভাবে কাজ করে, সেদিকে খেয়াল রাখছি। আমরা আগামী মাসে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে একটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। সেখানে তৃষ্ণা দিওকে প্রশিক্ষক হিসেবে আনা হবে।’

কাকরকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিয়ামুল কাউসার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি প্রতিবেদনটি পড়েই তৃষ্ণা দিওকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছি । আমাদের এই প্রত্যন্ত গ্রামে বুনোহাতির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয়। এই গ্রামে আর একটা যুদ্ধ আমরা শুরু করব, সেটা বেকার ছেলেমেয়েদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ করে তোলা। আমি তৃষ্ণাকে বলেছি যত রকম সহযোগিতা লাগে আমরা করব। আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের মিলনায়তনও ব্যবহার করতে পারবে গ্রামের ছেলেমেয়েরা।’

বিদ্যুৎ
প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন

গারো সম্প্রদায়ের তরুণ তৃষ্ণা দিও অস্ট্রেলিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েও তা ফিরিয়ে দেন। নিজ গ্রাম কাকরকান্দিতেই বসবাস করেন। শুরু করেন ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের কাজ। এ কাজ করেই বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন তিনি।

আরও পড়ুন